Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

কীর্তিমানের আঙ্গিনা : নারায়ণগঞ্জের চৌধুরীপাড়া

অনেকেই বলেন, ঘুরে আসুন রাজধানী ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমের পাশের এলাকার চৌধুরীপাড়া গ্রাম থেকে। কি আছে এ চৌধুরী পাড়া গ্রামে! কেনইবা এখানে পশ্চিমবঙ্গের(ভারতের) সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ও কমিউনিস্ট পার্টির বর্ষীয়ান নেতা সময়-সুযোগ পেলেই ছুটে আসতেন। এমনকি মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও তিনি কেনইবা এখানে আসার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন? কেনইবা ভারতের রাইটার্স বিল্ডিংয়ের রিসিপশনে গিয়ে কোনও ব্যক্তি বারদীর পরিচয় দিলে নিরাপত্তারক্ষীরা যথাযথ সম্মানের সঙ্গে দোতলার মুখ্যমন্ত্রীর কক্ষে পৌঁছে দিত। এমন হাজারো প্রশের উত্তর জানতে ঘুরে আসুন সেই গ্রামের আলোচিত বাড়ি থেকে।
কারণ, বর্ষীয়ান নেতা জ্যোতি বসুর পৈতৃক বাড়ি। ভারতের পশ্চিবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং কিংবদন্তি নেতার শৈশব কাটে এ গ্রামে। এখানে আসলে দেখতে পাবেন এই বাড়ির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে কিংবদন্তি নেতার শৈশব ও কৈশোর স্মৃতি। ২ একর ৪ শতক বাড়িটির মধ্যে রয়েছে ৮৭ বছরের পুরাতন একটি দ্বিতল ভবন। একটি পুকুর ও একটি কুয়া। বাড়ির দোতলা এ ভবনটির দেয়ালের নামফলক থেকে জানা যায় এটি ১৩২৯ বাংলা সনের ১৩ অগ্রহায়ণ তারিখে পাচু ওস্তাগারের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়। অসাধারণ এ দ্বিতীয়তলা ভবনটির নিচতলায় রয়েছে দুটি শোবার ঘর ও একটি বৈঠকখানা। দ্বিতীয়তলায়ও রয়েছে দুটি শোবার ঘর। রয়েছে একটি বেলকুনি। ভবনের ছাদ থেকে এক অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। দক্ষিণে তাকালে প্রমত্তা মেঘনা নদী আর চারদিকে কেবলই সবুজের সমারোহ। মূলত এ বাড়িটির মালিক ছিলেন জ্যোতি বসুর নানা শরৎচন্দ্র দাস ও স্ত্রী খিরদা সুন্দরী। শরৎচন্দ্র দাস ও স্ত্রী খিরদা সুন্দরীর একমাত্র মেয়ে হেমলতা বসুকে স্থানীয় নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ডা. নিশিকান্ত বসু বিয়ে করার সুবাদে এ বাড়ির মালিক হন। ডা. নিশিকান্ত ও হেমলতা বসুর তৃতীয় সন্তান জ্যোতি বসু। শৈশবের কিছুটা সময় তিনি তার পৈতৃক বাড়ি...[…]

Travel Image

বাংলার তাজমহল

সম্রাট ঈশা খাঁর রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের সঙ্গে দু’বছর আগে যুক্ত হয় আর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভারতের আগ্রায় সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নির্মিত তাজমহলের অনুকরণে সোনারগাঁওয়ের পেরাব নামক স্থানে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে একটি তাজমহল সদৃশ স্থাপনা। এটিকে বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় তাজমহল বলে দাবি করেছেন এর প্রতিষ্ঠাতা। নাম দিয়েছেন বাংলার তাজমহল।
২০০৫ সালে তাজমহল নির্মাণকাজ শুরু হয়।
পঞ্চাশ টাকা প্রবেশ ফি’র বিনিময়ে গত ২০০৮ সালের ঈদুল আজহার দিন থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় এটি। তারপর থেকে দর্শনার্থীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন এখানে।
ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটারের দূরত্বের বাংলার তাজমহলে ঢাকা-সিলেট অথবা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কুমিল¬া, দাউদকান্দি অথবা সোনারগাঁওগামী যে কোনও গাড়িতে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়। সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। সেখান থেকে সিএনজি বা স্কুটারে জনপ্রতি ২৫ টাকা ভাড়ায় সহজেই যাওয়া যায় তাজমহলে। অন্যভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ভৈরব, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জগামী যে কোনও গাড়িতে চড়ে বরপা বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয় সেক্ষেত্রে ভাড়া হবে ২০ টাকা এখান থেকে সিএনজি স্কুটারে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যেতে পারেন তাজমহলে।[…]

Travel Image

এশিয়ার বৃহত্তম বটগাছ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের অমতর্গত বেথুলী গ্রামের উত্তর-পশ্চিম কোণে বটগাছটি অবসিহত। কালীগঞ্জ সদর থেকে প্রায় ১০ কিঃ মিঃ পূর্বদিকে কালীগঞ্জ-আড়পাড়া-খাজুরা সড়কের ত্রিমোহনী সংলগ্ন স্থানে এ প্রাচীন বটগাছের অবস্থান। অনেক প্রজাতির ছোট-বড় গাছ আছে বাংলাদেশে। যে সব গাছ বিশালকায় ও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে তন্মধ্যে বটগাছ বিশেষ উল্লেখযোগ্য
বটগাছ Moraceae গোত্রের চির সবুজ সুবৃহৎ বৃক্ষ, Ficus bengalensis ছড়ানো শাখা থেকে ঝুরি মাটিতে নেমে আসে ও ক্রমে কান্ডের আকারে সতম্ভমূলে রুপান্তরিত হয়। বয়স্ক বটগাছ বিশালাকৃতির আচ্ছাদন তৈরী করে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বিস্তার লাভ করে। বাংলাদেশের সর্বত্র বটগাছ জন্মে। ফল ছোট, গোলাকার, পাঁকলে লাল হয়। বটগাছকে পবিত্র বলে গণ্য করে হিন্দুরা।
বটগাছ মানুষের তৈরী কোন পুরাকীর্তি নয়। ইহা একটি বৃক্ষ, প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রকৃতির অবদানে এই বটগাছ জন্মে। সেজন্য ইহাকে প্রাকৃতিক পুরার্কীর্তি বলা যায়। ঝিনাইদহের অধিকাংশ লোক এ বটগাছের নাম জানেন। একারণে ইহাকে পুরাকীর্তি শ্রেণীভুক্ত করে বৃক্ষটির বৃত্তান্ত এখানে তুলে ধরা হলো। বটগাছের কাঠ বেশী একটা গুরতত্বপূর্ণ নয়, কিন্তু এ বৃক্ষের আকার হয় বিশালকায়। কাঠ ধূসর, মাঝারি রকমের শক্ত। সতম্ভমূলের কাঠ গুঁড়ির কাঠের তুলনায় বেশি মজবুত এবং তাবুর খুঁটি, পালকির ডান্ডা ও সসতা আসবাবপত্রে ব্যবহার্য। বিরাটকায় বটবৃক্ষ পথিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অতি সহজে। বৃহত্তম এই বটগাছ ঝিনাইদহের একটি গৌরব। এ গাছ এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গাছ বলে সনাক্ত করা হয়েছে।
এ বটগাছের অবস্থান ও নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা জনশ্রুতি ও কিংবদন্তি। কারো কাছে সুইতলার বটগাছ, কারো কাছে সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ। আবার কারো কাছে বেথুলী বটগাছ বলে পরিচিতি। প্রকৃত পক্ষে এর অবস্থান হলো বেথুলী মৌজায়। বেথুলী মৌজায় এর অবস্থান হলেও সে সময় এলাকায় তেমন জনপদ গড়ে উঠেছিল না। পথশ্রান্ত লোকজন বটগাছের নীচে বসে বিশ্রাম করতো, সময় কাটাতো।...[…]

Travel Image

পিতলের রথ

নড়াইল জেলার কালিয়ার বিখ্যাত ৮০ মণ ওজনের পিতলের তৈরি রথ অব হেলায় ধ্বংসের মুখে । অযত্ন ও রক্ষনা বেক্ষণেরঅভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছেদেশের সর্ববৃহৎ এই পিতলের রথ । প্রতিদিন দেশ –বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন এই রথ দেখতে। পর্যটক ও দর্শনার্থীরা এই রথটি কে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় রথ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। উনবিংশ শতাব্দির গোড়ার দিকে কালিয়ার সেন পরিবার দৃস্টি নন্দন রথতৈরি করেন। তিনি ছিলেন ব্যারিটার । নিজ বাড়ীতে ব্রম্মময়ী আশ্রম ও দেবত্র বাটি নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেন। ব্রম্মময়ী আশ্রম ও দেবত্র বাটিতে ব্যারিষ্টার ভামিনী রঞ্জন সেন চারটি মন্দির নির্মান করেন। এগুলো হচ্ছে জগন্নাথ দেবেররথ, শিব মন্দির, ব্রম্মময়ী মন্দিও ও নারায়ন মন্দির। পিতল দিয়ে ৮০ মন ওজনের নকশা ও কারুকার্য খচিত একটি নযনাভিরাম রথ তেরি কওে জগন্নাথ দেবের রথ মন্দিরে রাখা হয়। সে সময় সেখানে বিশাল রথ যাত্রা ও মেলা অনুষ্ঠিত হতো । বিরাট উৎসবে টানা হতো রথ। এই রথ এক নজর দেখতে হাজার হাজার মানুষ আসতেন কালিয়ার সেন বাড়িতে। চারদিকে এই রথের নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ে। রথ যাত্রার সময় সেন পরিবারের সবাই কালিয়ায় এসে মিলিত হতেন। চারটি চাকার ওপর একটি বেদী , এই বেদিও ওপর পুরো রথটি তৈরি করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট এ রথের প্রথমতলা চতুর্ভুজ আকৃতির। দ্বিতলাটি গম্বুজ আকৃতির। রথের অগ্রভাগে রয়েছে দুটি পিতলের ঘোড়া। ঘোড়া দুটির ঠিক পেচনে রয়েছে রথের সারী। রথের মূল আসনে জগন্নাথ দেব, বলরাম ও শুভদ্রার মুর্তি স্থাপন করা হয়েছে। রথের চতুর্ভূজ আকৃতির বাইরের অংশের কার্নিশ জ্যামিতিক নকশার সারি দিয়ে অলকৃত। এই অংশের সুদৃশ্য ব্যালকনির মধ্যেই রয়েছে হিন্দুদের প্রায় সব দেব- দেবী ও মুনি- ঋষিদের মুর্তি । গম্বুজের ওপরে ছিল মনোরম চুড়া। ৮০মণ ওজনের এই...[…]

Travel Image

সবুজ শ্যামল অরুনিমা

চাকরি কিংবা ব্যবসা-কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠলেই মন একটু বিশ্রাম চায়। চায় মানুষের কোলাহল থেকে একটু দূরে কোথাও নিরিবিলি সময় কাটাতে। আবার শহুরে মন দূরে গিয়েও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা খোঁজে। খোঁজে ছোট ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার একঘেয়েমি ভুলে অল্পসময়ের জন্য হলেও আনন্দময় সময় কাটাবে এমন পরিবেশ। বাংলাদেশের শ্যামল-সবুজ গ্রামের খোলা হাওয়ায় এমনই পরিবেশে সময় কাটানোর সুযোগ তৈরি করেছে শাহবাজ ট্যুরিজম লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠান নড়াইল উপজেলার কালিয়া উপজেলায় পানিপাড়ায় গড়ে তুলেছে অরুণিমা গলফ ক্লাব অ্যান্ড রিসোর্ট। তবে গলফ ক্লাবের চেয়ে অরুণিমা ইকোপার্ক, অরুণিমা কান্ট্রিসাইড বা পানিপাড়া পর্যটন কেন্দ্র নামেই স্থানীয়দের কাছে এটি বেশি পরিচিত। অবকাশযাপন কেন্দ্র বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই অরুণিমা গলফ ক্লাব অ্যান্ড রিসোর্ট।
কী নেই অরুণিমা কান্ট্রিসাইডে? মধুমতি নদীর তীরে গড়ে তোলা এই রিসোর্টে আছে এসি, নন-এসি ৩৬ কক্ষের বিভিন্ন ধরনের কটেজ। আছে ৪০ বেডের তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি ডরমিটরি, ডাইনিং হল, কনফারেন্স হল, ট্রেনিং সেন্টার। রিসোর্টের ভেতরে আছে ১৯টি পুকুর, নাইন হোল গলফ কোর্স, ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল খেলার মাঠ, ছোটদের বিনোদনের জন্য খেলাধুলার পার্ক, পাখির অভয়ারণ্য, ঝাউবন, গোলাপ ফুলের বাগান, ফলের বাগান, পুকুরের মাঝখানে নদী কিংবা পুকুরে লঞ্চ বা নৌকায় বেড়ানো, আরও অনেক কিছু।
সবচেয়ে মনোরম কটেজগুলোর সৃষ্টিশৈলী আর অবস্থান। দুই পাশে লেক রেখে মাঝখানে তৈরি হয়েছে ছোট ছোট কটেজ, যার ওপরটা দেখতে মনে হবে খড়ের ছাউনি দেওয়া। আছে কাঠের ঘর। এসব কটেজের বেশিরভাগই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
মোটকথা নাগরিক সুবিধায় গাছপালা-নদী-পুকুর ঘেরা গ্রামীণ পরিবেশে পরিবার নিয়ে একটি দিন কাটানোর কোনো কিছুরই অভাব নেই। রিসোর্টের বাইরে বেরোলেই এক্কেবারে খাঁটি গ্রাম।
মাওয়ায় পদ্মা নদী পার হয়ে গোপালগঞ্জ বিশ্বরোড ধরে ভাঙ্গা যেতে হবে। সেখান থেকে ভাটিয়াপাড়া হয়ে চন্দ্রদিঘলিয়া। সেখানে বরফা ফেরিঘাট পার হলেই অরুণিমা কান্ট্রিসাইড। নিজের...[…]

Travel Image

প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান হরিণঘাটা

একদিকে বিস্তীর্ণ সাগরের হাতছানি আর অন্যদিকে অকৃত্রিম বনের মাঝে ছড়িয়ে থাকা সবুজের সমারোহ যাদের মুগ্ধ করে তাদের জন্য এই দেশের মাঝেই বেড়ানোর চমত্কার একটি স্থান হতে পারে হরিণঘাটা। বরিশাল বিভাগের দক্ষিণ প্রান্তে বরগুনা জেলায় অবস্থিত এই হরিণঘাটায় এসে একদিকে যেমন উপভোগ করা যায় সাগরের মাঝে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য, তেমনি দেখা মেলে নানা প্রজাতির গাছের সমারোহে গড়ে ওঠা সবুজ নিসর্গ আর হরেক রকম বণ্যপ্রাণীরও। বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলা সদর তালতলী থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে হরিণঘাটা বাজারের পাশ থেকেই এই বনের শুরু। স্থানীয়দের কাছে দীর্ঘদিন ধরে হরিণঘাটার এই বন ফাতরার বন নামে পরিচিত হলেও ২০১০ সালে বনবিভাগের আমতলী রেঞ্জের টেংরাগিরি (সখিনা) বিটের এ জায়গাটিকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে এর নাম দেওয়া হয় টেংরাগিরি বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এ বনের পূর্ব দিকে রয়েছে কুয়াকাটা, পশ্চিমে সুন্দরবন, উত্তর পাশে রাখাইনদের বেশ কিছু বসতি এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এ বন নানান গাছপালায় সমৃদ্ধ। কেওড়া, গরাণ, গেওয়া, ওড়া প্রভৃতি শ্বাসমূলীয় গাছ বনের প্রধান বৃক্ষ। এ ছাড়া বনে দেখা মেলে চিত্রা হরিণ, বানর, বন বিড়াল, বন্যশুকরসহ নানান বন্যপ্রাণীর। এ ছাড়া নানা প্রজাতির পাখি আর গুঁইসাপসহ একাধিক প্রজাতির সাপেরও আবাসস্থল এই বন। তবে হরিণঘাটায় অবস্থিত এই বনের সবেচেয়ে আকর্ষণীয় দিকগুলোর একটি হলো বনের ভেতর সর্পিলাকারে ছড়িয়ে থাকা একাধিক খাল। জোয়ারের সময় যখন খালগুলো পানিতে পরিপূর্ণ থাকে তখন ছোট ছোট নৌকায় করে উপভোগ করা যায় বনের মধ্যকার সবুজের সমারোহ। এ ছাড়া এই বনাঞ্চলের ঠিক পাশেই থাকা লালদিয়ার চর নামে পরিচিত সমুদ্র সৈকতও পর্যটকদের ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। হরিণঘাটার বনের ঠিক শেষ প্রান্তে বঙ্গোপসাগর ও বিষখালী নদীর মোহনায় জেগে ওঠা এই সৈকতে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম বলে...[…]

Travel Image

বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর রহমান

১৯৪৪ সালে চব্বিশ পরগনা পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আক্কাস আলী মণ্ডল, মা কায়সুন নেসা। আর্থিক সচ্ছলতার জন্য লেখাপড়া অসমাপ্ত করেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এর ৫১ দিনের মাথায় ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনীর আক্রমণকালে তিনি সেনানিবাস ত্যাগ করে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। দেশের সংকটকালে নিজেকে আর পরিবারের বাঁধনে আটকে রাখতে পারেননি। সিলেটের শ্রীমঙ্গল উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে ধলই নামক স্থানে মুক্তিবাহিনীতে যোগদেন। পাকসেনাদের ধলই সীমান্ত ঘাঁটির সামরিক গুরুত্বের কারণে মুক্তিযোদ্ধারা ঘাঁটিটি দখলের পরিকল্পনা করে। প্রথম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘সি’ কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়।
হামিদুর রহমান ছিলেন এ কোম্পানির সদস্য। ২৮ অক্টোবরের পূর্ব রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের ৩টি প্লাটুন অতি সন্তর্পণে ঘাঁটি অভিমুখে অগ্রসর হয়। শত্রুর ঘাঁটির কাছাকছি এসে মুক্তিযোদ্ধারা যখন অতর্কিত আক্রমণের উদ্যোগ নেন, তখন অকস্মাৎ একটি মাইন বিস্ফোরণের শব্দে শত্রুপক্ষ সচকিত হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। এক ঘণ্টাব্যাপী দুপক্ষে সংঘর্ষ চলে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে শত্রুপক্ষের এলএমজির গুলিবর্ষণের ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রগতি মারাÍভাবে ব্যাহত হয়। এ সংকটকালে হামিদুর রহমান তার দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকারে সন্তর্পণে হামাগুড়ি দিয়ে এলএমজির পোস্টের দিকে অগ্রসর হন এবং ২ এলএমজি চালকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যা করে। সঙ্গে সঙ্গে শত্রুর এলএমজি স্তব্ধ হয়ে যায়। আর তিনি শত্রুর গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মাত্র ১৭ বছর ৪ মাস বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এলএমজির গুলিবর্ষণ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায়। তীব্র আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর ঘাঁটি দখল করে নেয়।
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোহাম্মদ হামিদুর রহমানের মৃতদেহ প্রথমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা গ্রামে সমাহিত করা হয়। স্বাধীনতার ৩৬ বছর পর ১১ ডিসেম্বর ২০০৭-এ দেশের মাটিতে ফিরিয়ে এনে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তার শাহদাত বরণকারী স্থান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ...[…]

Travel Image

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা

মহান ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম। তার ভেতরেই একটি অবকাঠামো শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পূর্বপ্রান্তে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে ১৯৯০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন তিন শহীদ শিক্ষকপত্নী বেগম ওয়াহিদা রহমান, বেগম মাস্তুরা খানম এবং শ্রীমতি চম্পা সমাদ্দার। প্রথমের দিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলোর স্থানীয় সংগ্রহ হিসেবেই এর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সংগৃহীত স্মৃতি নিদর্শনগুলোর সময়সীমা নির্ধারিত হয় ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন এবং প্রসারিত হয় দেশজুড়ে। এর কারণ উল্লেখ করা যায় ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতেই রাজশাহী কলেজে শহীদ মিনার নির্মাণ এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে রাবি শিক্ষক ড. জোহার আত্মদান। বলা হয়, এই স্মৃতিকেই লালন করার জন্য রাবি সংগ্রহশালার সম্প্রসারণ। শিল্পী ফণীন্দ্রনাথ রায়ের তৈরি শহীদ মিনারের মুক্তমঞ্চের গ্রীনরুমেই এই সংগ্রহশালা গড়ে ওঠে। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬ সালে সংগ্রহশালাটি প্রথম দর্শকদের জন্য খুলে দেয়া হয়। একই বছর তৎকালীন শিক্ষা উপদেষ্টা আবুল ফজল ৬ মার্চ সংগ্রহশালার প্রথম উদ্বোধন করেন। তখন বিশেষ দিনগুলোতে এটা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হতো। এরপর ২২ মার্চ, ১৯৮৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আমানুল্লাহ আহমদ এর মূল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আয়তন ৬ হাজার ৬শ’ বর্গফুট। এতে ৩টি গ্যালারি রয়েছে। গ্যালারিগুলো নান্দনিক-নৈপুণ্য ও সমৃদ্ধ স্থাপত্যের প্রতীক। এখানে ’৫২, ’৬৬, ’৬৯ ও ’৭১ সালের আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন সংগ্রহীত নিদর্শনগুলো পর্যায়ক্রমে প্রদর্শিত আছে।
প্রথম গ্যালারিতে আলোকচিত্র ৫৯টি, প্রতিকৃতি ৬টি, কোলাজ ২টি, শিল্পকর্ম ৮টি, পোশাক ও অন্যান্য বস্তু ৭টি, ভাস্কর্য ১টি, ডায়েরি ও অন্যান্য পাণ্ডুলিপি ৪টি এবং বাঁধাইকৃত আলোকচিত্র ২টি রয়েছে। এতে আরও রয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি ‘৫২ রাতেই রাজশাহীতে (রাজশাহী কলেজ হোস্টেল গেটে) নির্মিত প্রথম শহীদ মিনারের বাঁধাইকৃত আলোকচিত্র, আমতলা সভা, একুশে ফেব্রুয়ারি ’৫২ কালো পতাকা উত্তোলন ও মিছিল একুশে...[…]

Travel Image

বিজয়ের স্মৃতিতে জড়ানো নারায়ণগঞ্জ

প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত ইতিহাস-ঐতিহ্য অর্জনে কোন দিক থেকে কমতি নেই নারায়ণগঞ্জের। এ কারণে প্রাচীনকাল থেকে বহির্বিশ্বের কাছে নারায়ণগঞ্জের ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। দেশের সংকট মুহূর্তের সময় এ মহানগরীর বাসিন্দারা কখনও পিছিয়ে থাকেনি। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬ দফা কর্মসূচি, ’৬৬-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, সর্বশেষ ’৭১-এর দেশমাতৃকার সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জবাসী ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। ’৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিকে ধরে রাখতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক স্মৃতিস্তম্ভ।
বক্তাবলী স্তম্ভ : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ২৯ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী বক্তাবলী ইউনিয়নে হানা দিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেন। এ সময় ১৩৯ জন শহীদ হন। তাদের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল।
মাসদাইর প্রতিরোধ স্তম্ভ : ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী যখন নারায়ণগঞ্জে প্রবেশের চেষ্টা চালায় তখন নারায়ণগঞ্জবাসী সর্বপ্রথম মাসদাইর কবরস্থান এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে ছিল। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে গাছের টুকরো ফেলে পাক হানাদারদের বাধা প্রদান করে। এ স্মৃতিকে ধরে রাখতে এখানে নির্মাণ করা হয় প্রতিরোধ স্তম্ভ।
চাষাঢ়া চত্বরে বিজয় স্তম্ভ : স্বাধীনতা সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জবাসী ব্যাপক ভূমিকা রাখার কারণে প্রথমে বিজয় স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। বিজয় স্তম্ভে রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের একটি নামের তালিকা। বিগত বছরগুলোতে এখানে নামে মাত্র বিজয় স্তম্ভ থাকলেও বিগত জোট সরকারের সময়ে এর পূর্ণতা লাভ করে।
মেট্রো চত্বরে বিজয় উল্লাস : স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে পতাকা হাতে নিয়ে যে উল্লাস প্রকাশ করেছে সেভাবে এ স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়।
আইইটি স্কুল মোড়ে শ্রেষ্ঠ সন্তান : এখানেও একটি ভাস্কর্য নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ স্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছে।
ডিআইটি চত্বরে ফিরে দেখা ’৭১ : মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বীর সন্তানরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে, সেভাবে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা (যেটি এখন নগরভবন) এ স্তম্ভটি...[…]

Where do you want to travel?

Your journey will lead you to famous domestic and foreign beauty spots.