প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত ইতিহাস-ঐতিহ্য অর্জনে কোন দিক থেকে কমতি নেই নারায়ণগঞ্জের। এ কারণে প্রাচীনকাল থেকে বহির্বিশ্বের কাছে নারায়ণগঞ্জের ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। দেশের সংকট মুহূর্তের সময় এ মহানগরীর বাসিন্দারা কখনও পিছিয়ে থাকেনি। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬ দফা কর্মসূচি, ’৬৬-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, সর্বশেষ ’৭১-এর দেশমাতৃকার সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জবাসী ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। ’৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিকে ধরে রাখতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক স্মৃতিস্তম্ভ।
বক্তাবলী স্তম্ভ : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ২৯ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী বক্তাবলী ইউনিয়নে হানা দিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেন। এ সময় ১৩৯ জন শহীদ হন। তাদের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল।
মাসদাইর প্রতিরোধ স্তম্ভ : ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী যখন নারায়ণগঞ্জে প্রবেশের চেষ্টা চালায় তখন নারায়ণগঞ্জবাসী সর্বপ্রথম মাসদাইর কবরস্থান এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে ছিল। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে গাছের টুকরো ফেলে পাক হানাদারদের বাধা প্রদান করে। এ স্মৃতিকে ধরে রাখতে এখানে নির্মাণ করা হয় প্রতিরোধ স্তম্ভ।
চাষাঢ়া চত্বরে বিজয় স্তম্ভ : স্বাধীনতা সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জবাসী ব্যাপক ভূমিকা রাখার কারণে প্রথমে বিজয় স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। বিজয় স্তম্ভে রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের একটি নামের তালিকা। বিগত বছরগুলোতে এখানে নামে মাত্র বিজয় স্তম্ভ থাকলেও বিগত জোট সরকারের সময়ে এর পূর্ণতা লাভ করে।
মেট্রো চত্বরে বিজয় উল্লাস : স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে পতাকা হাতে নিয়ে যে উল্লাস প্রকাশ করেছে সেভাবে এ স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়।
আইইটি স্কুল মোড়ে শ্রেষ্ঠ সন্তান : এখানেও একটি ভাস্কর্য নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ স্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছে।
ডিআইটি চত্বরে ফিরে দেখা ’৭১ : মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বীর সন্তানরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে, সেভাবে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা (যেটি এখন নগরভবন) এ স্তম্ভটি নির্মাণ করেছে।
দেওভোগ আখড়ার মোড় স্তম্ভ : মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য দেওভোগ আখড়ার মোড় এলাকায় একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযুদ্ধের তালিকা খচিত স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়।