Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Entertainment Image

রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলো রে...



বাঙালি মানেই বৈশাখ। চৈত্রের খরদুপুর কাটিয়ে স্নিগ্ধ গ্রীষ্মের আগমন। চাতকের মতো বাংলার জনপদ অপেক্ষা করে বছরের সে প্রথম প্রহরের জন্য। জ্বরা-জীর্ণ আর অপ্রাপ্তির দিন শেষে শুরু হয় নতুন বছর, নতুন সকাল। বৈশাখের আগমনে তারকাদের রসুইঘরও জমে ওঠে। সকালে নানারকম ভর্তা, ইলিশ-পান্তা আর বেগুনভাজা। দুপুরে বাহারী খাবারের সঙ্গে বৈশাখী সাজ।

শুটিং নেই। ছুটির দিন। পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধুদের মধ্যে চির পরিচিত একজন। কারও কারও পরিকল্পনা সারাদিন বউ বাচ্চা সহ ঘুরতে যাওয়া, কেউ কেউ সারাদিন বাসায় বিশ্রাম আর মায়ের রান্না খাওয়া। তবে আগের চেয়ে অনেক বেশি রঙ সচেতন এ যুগের তারকারা।

কথায় কথায় পুতুল জানালেন,‘আগে বৈশাখের কোন নির্দিষ্ট রঙ ছিল না। সবাই নতুন জামা পড়তে চেষ্টা করতো। কিন্তু বিগত দশ বছরে পহেলা বৈশাখ মানেই লাল-সাদা অথবা অন্যকোন হালকা রঙ।’ তার পরিকল্পনায় রয়েছে একেবারে ভারী সাজ। কারণ দুটো অনুষ্ঠানে গান গাইবেন তিনি। পরবেন লাল সাদা শাড়ী। সঙ্গে হাতভর্তি চুড়ি, খোঁপায় বেলী ফুল।

রওনক হাসান জানালেন-তার পরিকল্পনা সকাল থেকেই মেলায় ঘুরতে যাওয়া। শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী অথবা রমনা তার প্রথম পছন্দ। তবে এবার প্রথমবারের মতো সঙ্গী হবে আদরের পুত্র। চেষ্টা করবেন একই রঙের জামা পড়ার। তবে পুতুল আর রওনক দুজনেই ইলিশ পান্তা মিস করতে চান না।

চলচ্চিত্র তারকাদের ব্যস্ততা এদিন এফডিসি কেন্দ্রিক। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এক নজরের জন্য হলেও ঘুরে যান এফডিসি পাড়া। অনেকে ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে। অনেকে আবার রিমোট হাতে ঘুরে বেড়ান টেলিভিশনের পর্দায়।

অভিনেতা চঞ্চলের অবশ্য গ্রামে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ বৈশাখ এলেই তিনি বাড়ীর তৈরি বিশেষ খাবারের আকর্ষণের কথা জানান। তবে চারুকলার ছাত্র থাকাকালীন নিয়মিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতেন। আর গ্রামে থাকতে মেলায় গিয়ে মণ্ডা মিঠাইয়ের দোকানে ভিড় জমাতেন। অপু বিশ্বাস এখনো জানেন না তিনি অবসর থাকবেন কিনা। কিন্তু মনে প্রাণে চাচ্ছেন সেদিন যেন কোনরকম শুটিং না থাকে। তাহলে একেবারে লাল শাড়ী পড়তে চান তিনি।

শাকিব খান সারাদিন শিল্পীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের কথা জানালেন। তবে পান্তা আর ইলিশ ভাজার ব্যবস্থা করতে ভুলছেন না। তিশা সকালে উঠেই যাবেন শ্বশুরবাড়ি নাখালপাড়ায়। থাকবেন দুপুর পর্যন্ত। রাতে পারিবারিক অনুষ্ঠান। মিডিয়া ও পরিবারের পরিচিতজনরা আসবে বাসায়। তবে পহেলা বৈশাখে বড় কোনো পরিকল্পনা নেই অভিনেতা অপূর্ব'র। বাসায় থাকার ইচ্ছা। বিকেলে পারিবারিকভাবে ঘোরাঘুরির ইচ্ছা রয়েছে। তবে রাতের খাবারটা কোন রেস্টুরেন্টে করার ইচ্ছা রয়েছে।

তবে এবারের বৈশাখে হাবিব দর্শকদের জন্য নিয়ে আসছেন সতুন চমক। নিয়ে আসছেন নতুন মিউজিক ভিডিও।

তারকাদের রকম এবং বয়স বিবেচনায় বৈশাখ উদযাপনে ভিল্পুতা রয়েছে। অভিনয় শিল্কপ্পীদের একরকম পরিকল্কপ্পনা, এরমধ্যে আবার ছোটপর্দা বড়পর্দা আলাদা। বড়পর্দার অনেকে ব্যস্ত থাকেন শুটিং বা কোন অনুষ্ঠানে। মৌসুমি চান পরিবারের সঙ্গে বৈশাথের দিনটি কাটাতে। কিন্তু গতবছর তিনি আরএফএলের একটি প্রজেক্টে অংশ নেয়ায় সারাদিন ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবে পালন করতে চান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত এ অভিনেত্রী। চম্পার ব্যস্ততাও অনেকাংশে পরিবারকে নিয়ে। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে থাকলেও তিনি চেষ্টা করবেন পহেলা বৈশাখে দেশে থাকতে। পরিবারের সবার সঙ্গে এ দিনটি কাটাতে না পারলে তিনি কষ্ট পাবেন বলে জানালেন। দিতি ও অরুণা বিশ্বাস ব্যস্ত থাকবেন পরিবার নিয়েই। আর ছোটপর্দার তারকারা এ বছর পরিকল্কপ্পনা করছেন ঘুরে বেড়ানোর। সবার সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে চান তারা।

সঙ্গীতশিল্পীদের তো দম ফেলার ফুসরত নেই। নৃত্যশিল্কপ্পীদেরও একই অবস্থা। কেউ ঢাকায় বা কেউ ঢাকার বাইরে একাধিক অনুষ্ঠানে যাবেন। সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যেও অনেকে একাধিক জায়গায় গান গাওয়ার প্রস্তাব পেয়েছেন। তাদের গানের তালিকায় নেন চটুল বা দ্রুতলয়ের গান বেশি। কারণ মেলায় দর্শক না মাতালে হয় না। এজন্য সবার পছন্দ বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী গানগুলো। তবে ঘরে ঘরে শান্তির বারতা নিয়ে বৈশাখ পৌঁছে যায় রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের গানের মাধ্যমে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোর ভূমিকা সেক্ষেত্রে মূখ্য। কনসার্টের কথা বাদ দিলে ছায়ানট, বটমহৃল, মহুয়াতলা জমে ওঠে ররিঠাকুর আর পঞ্চকবির গানে।

বাউল, টপ্পা, লালন, জারি-সারি আর শাস্ত্রীয় গানে বর্ষিত হয় অমিয় শন্তির ধারা। বিভিল্পু সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানে এ ধাঁচটি রয়েছে ষোলআনা।

নাচের তারকাদের বৈশাখও জমজমাট। থিয়েটার পাড়াও ব্যস্ত পহেলা বৈশাখ নিয়ে। অনেকেরই রয়েছে একাধিক অনুষ্ঠানের ব্যস্ততা। শামীম আরা নীপা এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছেন চট্টগ্রামের একটি অনুষ্ঠানের জন্য। এরমধ্যে ঢাকার কয়েকটি অনুষ্ঠানে তিনি নিজে না যেতে পারলেও পাঠাচ্ছেন দলের একাধিক কর্মীকে। নাদিয়া, লিখন, সোহাগরাও ব্যস্ত একাধিক অনুষ্ঠান নিয়ে। তবে এরই মধ্যে টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোর চিত্রায়ন শেষ করেছেন তারা। তবে অনুষ্ঠান শেষ করে বা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকেই ঘুরে বেড়াবেন তারা। কোন এক ফাঁকে পরে নিবেন বৈশাখের জন্য কেনা নতুন জামাখানা। এর সঙ্গে অনেকেই যোগ করলেন সেলফি প্রীতির কথা। এমনকি নতুন জামা, নতুন বাণী আর নতুনে নতুনে ভরে ওঠুক বাংলার প্রতিপি ঘর, এমন কামনাই করছেন তারকারা। জানান সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।