ওরা ১১ জন
‘ওরা ১১ জন’ স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র । সদ্য যুদ্ধফেরত দুই তরুন খসরু ও মাসুদ পারভেজ চেয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী কঠিন সময়টিকে সবার কাছে তুলে ধরতে। এমন একটি মাধ্যমের কথা তারা ভাবছিলেন যাতে করে একসঙ্গে দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে। এমনকি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছেও যা হয়ে থাকবে একটি প্রামাণ্য দলিল। অপরদিকে চাষী নজরুল ইসলামও এমন একটি ভাবনা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন সহযোগিতার আশায়। এই তিনজন একত্রিত হয়ে ঠিক করলেন সেই মাধ্যমটি হবে চলচ্চিত্র। আর এভাবেই নির্মাণ শুরু হয় ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্রটির। চার মাসের খাটা-খাটুনির পর ১৯৭২ সালের ১১ আগস্ট আলোর মুখ দেখে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র।
ওরা ১১ জন চলচ্চিত্রের কাহিনী গড়ে উঠেছে ১৯৭১ সালে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে গঠিত একটি গেরিলা বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে। ২৫ মার্চ কালো রাত্রির পর এই বাহিনীটি বাংলাদেশকে দখলদারমুক্ত করার লক্ষ্যে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু গেরিলা অপারশেন চালায়। বাহিনীটির নেতৃত্ব দেন কামরুল আলম খসরু। খসরু ও তার বোন মিতা (শাবানা) ঢাকায় মামাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করেন। প্রতিবেশী শীলার (নূতন) সঙ্গে খসরুর বিয়ে ঠিক হয়। অন্যদিকে মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মিতার সঙ্গে শীলার প্রকৌশলী ভাই পারভেজের (রাজ্জাক) সম্পর্ক রয়েছে। সবকিছু ঠিকই চলছিল কিন্তু এরই মাঝে হঠাৎ বেজে উঠে যুদ্ধের দামামা। খসরু চলে গেল যুদ্ধে । আরো দশজন সঙ্গীকে নিয়ে গড়ে তুলে গেরিলা বাহিনী। পারভেজ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করায় পাকিস্তানীদের হাতে বন্দী হয়। পারভেজের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর বের করতে না পারায় তার সামনেই মা আর ছোটভাইকে হত্যা করা হয়। বোন শীলা নির্যাতনের শিকার হয়। মিতা বিক্রমপুরে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায় সেখানকার চিকিৎসক দলের সঙ্গে যোগদান করে। একদিন সেও পাকিস্তানি সৈন্যদের নির্যাতনের শিকার হয়।...[…]