Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

রাজৈরে পল্লীতে কৃষি জাদুঘর



মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার চৌয়ারিবাড়ী আবস্থিত মতিলাল হাইস্কুলের পল্লী জাদুঘরে প্রত্নতওের স্মারক বহন করছে ৩ হাজার বছরের পুরনো ফসিল । ২০০১ সালে যাএা শুরু হয়ে দিন দিন এর ঐতিহ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে । পাশাপাশি দূর-দূরন্ত থেকে সংগৃহীত পুরানো দিনের জীবাশ্ন সংরক্ষন করা হচ্ছে এখানে । আর রাজৈর বাসস্ট্যান্ড থেকে দক্ষিন দিকে কোটালীপাড়া রোড দিয়ে কিছুদূর গেলেই ডানদিকে মতিলাল হাইস্কুল । স্কুলের একটি লম্বা টিনের ঘরে গড়ে তোলা হয়েছে জেলার অনন্য প্রত্নতাওিক জাদুঘর । স্কুলে স্থাপিত জাদুঘরে রক্ষিত প্রত্নতাওিক নিদের্শক এ অঞ্চলকে নতুনভাবে জানার ও চেনার দাবি রাখে নিঃসন্দেহে । স্কুলের একটি কক্ষে কাঠের শেফালে সারি সারি সাজানো রয়েছে প্রায় ৩ হাজার বছর আগে মৃত হাতি বনগরু ও মহিষের হাড়, বিষধর সাপ, পোকা-মাকড় । বিলুপ্ত শস্যের বীজ ও উভচর নানা প্রানীর মরদেহ এখানে রক্ষিত ।এসব উপাদান মাদারীপুর জেলার রজৈর উপজেলা, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলা, চান্দার বিল ও কোটালীপড়া উপজেলার বাঘিয়ার বিল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ।

২০০১ সালের প্রথম থেকে বিসিএএস (বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভন্স স্টাডিজ ) তার সেম্প প্রকল্পের আওতায় নিজেস্ব এলাকায় গ্রাম ও স্কুলভিওিক পরিবেশবাদী ক্লাব গড়ে তোলে । একই বছর গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার চান্দার বিলের বেদগ্রামের বৃদ্ধ মধুসূদন বিশ্বস পুকুর খনন করতে গিয়ে বেশ কিছু হাড়ের সন্ধান পান । সেখান থেকে বিসিএএস কর্মীরা হাড়গুলো সংগ্রহ করেন ।

রাজৈর এলাকা, চান্দার বিল ও বাঘিয়ার বিল থেকে বিলুপ্ত সাপ,ব্যাঙ, পোকা-মাকড়, শস্য বীজ নিয়ে জাদুঘরের যাএা শুরু । প্রায় ৩ হাজার আগে মৃত বনগরু, হাতি ওমহিষের জীবাশ্ন, বিলুপ্ত প্রজাতির উদ্ভিদের ধ্বংসাবশেষ, কালগোখরা, খৈয়াগোখরা, কালকেউটা, সুতানলি, ঘরমনি, গোবর পোকা, কয়া, মাকড়শা, তেলাপোকা, ঝিঝি পোকা, জোনাকি, পদ্মবতী পোকা, ইত্যাদি । এক সময় এ অঞ্চলে নানা প্রজাতির ধানের চাষ হতো । এখন তার বেশির ভাগই বিলুপ্ত । জাদুঘরে রক্ষিত যেসব বিলুপ্ত ধানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় তাহলো সাদা গাধবা, লাল গাধবা কাওয়াকুলু করমচামুড়ি, জয়না, গৌর কাজলি ন্যাথাপাশা, হরিকুষ, খৈয়ামরন,কুমড়াগোর ও মালবুগ(স্থানীয় ভাষায় ) আর ও আছে মাটির নিচে পাওয়া প্রাচীন উদ্ভিদের ধ্বংসাবশেষ, কচ্ছপের পিড়ের চড়া, কয়েক প্রজাতির দেশি মাছ ও ব্যাঙ । আছে নানা ধরনের শামুক যা চান্দার বিল ও বাঘিয়ার বিল থেকে সংরক্ষিত । জাদুঘরে রক্ষিত বনগরু, হাতি ওমহিষের হাড়ের বয়স ১ হাজার থেকে ৩ হাজার বছর । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতওবিদ্যা বিভাগের প্রত্নতওবিদ ড.রেজা খান ও ড.সীমা হক হাড়গুলো পরীক্ষা করেছেন । বর্তমানে অঞ্চলের ১০৯বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে চান্দার বিল ।

রাজৈর উপজেলার দক্ষিন-পশ্চিমাংশ, চান্দার বিল ও কোটলীপাড়ার রাজৈর সংলগ্ন অংশজুড়ে মাটির নিচে রয়েছে অফুরন্ত পিট কয়লার ভান্ডার । মাটি খুঁড়লেই পাওয়া যায় বড় বড় গাছের গুঁড়ি এক সময় এখানে বিশাল বনভূমি ছিল । এখানে বাঘ, হাতি, বনগরু, মহিষসহ নানা প্রানী ছিল । বড় ধরনের কোনো ভূমিকম্পে এ বনভূমি দেবে সৃষ্টি হয়েছে জলাভূমি । আবার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সেই জলাভূমিই রূপান্তরিত হয়েছে সমতল ভূমিতে । বিসিএএস কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ ও সাইফ বলেন, হাড়গুলো নিয়ে ব্যাপক গবেষনা হলে আবিষ্কার হতে পারে এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি, মানব সভ্যতাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের নানা তথ্য। এ জাদুঘরটি হতে পারে এ অঞ্চলের প্রত্নতাওিক গবেষনার সূতিকাগার ।