Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

ফানুসের উৎসব ই পিঙ



মনে আছে ডিজনির সেই ট্যাঙ্গলেড ছবিটির কথা? যেখানে রাজা-রানী নিজেদের হারিয়ে যাওয়া মেয়ের শোকে প্রতিবছর উড়িয়ে দিতেন ফানুস আর সেটাকে অনুসরণ করে রাজ্যের বাকী সবাইও যার যার মতো করে ফানুস উড়িয়ে দিত সাথে সাথে। তবে এখন যে উত্সবের গল্পটা বলব সেটা কোন কল্পকাহিনী নয়। এক্কেবারে সত্যি!

ভাবুন তো কোনো এক রাতের কথা। স্বাভাবিকভাবেই রাত যখন চারপাশটা অন্ধকারই থাকবার কথা। অথচ অন্ধকারের রেশটুকু নেই আলোর বন্যায়। সূর্য নেই তো কি হয়েছে? মানুষ নির্মিত লক্ষ লক্ষ ছোট্ট সূর্য শুধু সূর্যের অভাবটাই পূরণ করে দিচ্ছে না, বরং আরো যেন অন্যরকম এক ভালোলাগার আবেশ ছড়িয়ে যাচ্ছে মনের ভেতরে। নানা রঙ-এর ফানুসের মেলায় হেরে গিয়েছে সূর্যের আলোও। শুনলেও অন্যরকম ভালোলাগায় গা শিউরে ওঠা এই ফানুসের উত্সবটি খুব দূরের কোন দেশে নয়, প্রতিবছর পালিত হয় খানিক দূরের দেশ থাইল্যান্ডে।



কেন এই উৎসব
আরো অনেক কার্যকারণের মতোই মানুষের এই উত্সবটির পেছনেও রয়েছে নির্দিষ্ট একটি কারণ। আর সেই কারণটি হচ্ছে বিশ্বাস। ‘ই পিঙ' নামে প্রতিবছর থাইল্যান্ডে উদযাপিত আলোর এই উত্সবে পানির ওপরে প্রচুর পরিমাণ ফানুস উড়িয়ে দেয় সবাই। তবে সেটা এমনি এমনি নয়। মনে করা হয় এতে করে নিজেদের সৌভাগ্য আর সুখকে ডেকে আনে তারা। কেবল তাই নয়, আরো বিশ্বাস করা হয় ইচ্ছেপূরণ করার ক্ষমতাও রয়েছে এই ফানুসগুলোর। আর তাই নিজের ইচ্ছেকে পূরণ করার জন্যেও এখানে ছুটে আসে মানুষ। আর ফানুস উড়িয়ে দেন রাতে অন্ধকারে (ফেস্টিভাল এশিয়া)। ফানুসে ফনুসে ছোটখাটো এক আলোর রাজ্যই হয়ে দাঁড়ায় তখন পুরোটা উৎসব এলাকা।

উৎসবে যোগদান
থাইল্যান্ডের এই ফানুস উৎসবটি মূলত দুইটি ভাগে উদযাপিত হয়। একটি হয় দেশটির ভেতরে। নিজেদের মতো করে করা চিয়াং মাইএর এই উত্সবে গৌতম বৌদ্ধকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। নির্দিষ্ট কোনো দিন থাকে না উত্সবটির। শুরু হওয়ার দুই-এক সপ্তাহ আগেই কেবল ঘোষণা করা হয় তারিখ। তবে সেটা তো কেবল দেশের ভেতরের উৎসবের কথা। কিন্তু ইচ্ছেপূরণের ইচ্ছে কি কেবল থাইল্যান্ডবাসীর একারই আছে? না! আর তাই পৃথিবীর অন্য সবার জন্যেও নিজেদের উৎসব শেষ হবার পরেই আরেকটিবার উৎসব পালন করে থাইল্যান্ডবাসীরা। দ্বিতীয় মাসের পূর্ণচন্দ্রে পালিত হয় উত্সবটি (চিয়াঙমাই বেস্ট)। ১০০ ডলারের বিনিময়ে কেবল উৎসবে প্রবেশই নয়, ফানুস, মাদুর আর রাতের খাবারও সরবরাহ করে আয়োজকেরা।

কী কী পাবেন?
পানি ওপরে হাওয়ায় ভাসতে থাকা রঙ্গিন ফানুস, পানিতে তার ছায়া আর চারপাশের অসাধারণ সৌন্দর্য- এরপরেও কি আর কিছু লাগে মন ভরিয়ে তুলতে? তবে ই পিং আন্তর্জাতিক ফানুস উত্সবে গেলে কেবল এগুলোই নয়, আপনি উপভোগ করতে পারবেন সপ্তাহ শেষের সময় অনুষ্ঠিত স্থানীয় মহিলাদের ঐতিহ্যবাহী লান্না নাচ, চারপাশের পুরোন সভ্যতার নিদর্শন, প্যারেডসহ আরো অনেক কিছু।

লোই ক্রাথঙ্গ- ই পিঙএর ভিন্নরূপ
থাইল্যান্ডে যদি আপনি ফানুস উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্যে যেতেই চান তাহলে এই সুযোগে লোই ক্রাথঙ্গকে একবারের জন্যে উপভোগ করতে ভুলবেন না যেন। ফানুস ওড়ানোরই আরেকটি থাইল্যান্ডের উত্সব লোই ক্রাথঙ্গে ফানুসগুলোকে ই পিঙ এর চাইতে একটু অন্যরকমভাবে উড়িয়ে না দিয়ে বরং ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ভাসমান আলো ব্যবহার করা হয় ফানুসের ভেতরে। এটি পানিতে ভাসানোর প্রক্রিয়াও রয়েছে (দি লঙ্গেস্ট ওয়ে)। আর তাই ই পিঙ এর চাইতে একটু আলাদাই বলা চলে একে।