বর্তমানে ভাইরাস জ্বর সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বেশির ভাগ ভাইরাস জ্বর নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়, কোন ঔষধের প্রয়োজন হয়না। বেশিরভাগ ডাক্তারই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে অনেক বেশি তরল খাদ্য গ্রহণ করার ও বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিছু সহজ ও ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে ১০ দিনেই ভাইরাস জ্বর থেকে নিরাময় লাভ করা সম্ভব।
আমাদের শরীরে ভাইরাসের আক্রমণের ফলে কিছু উপসর্গ সহ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ভাইরাস জ্বর হয়েছে বলা হয়।
লক্ষণ সমূহ:
ক্লান্ত লাগা
শরীরে বিশেষ করে মাংসপেশিতে ব্যাথা হয়
শরীরের তাপমাত্রা কম থাকতে পারে আবার অনেক বেশিও হতে পারে
গলায় ব্যাথা হয়
নাক দিয়ে পানি পরে
গলা ভেঙ্গে যায়
মাথা ব্যথা থাকে
চোখ লাল হয়ে যায় এবং চোখ জ্বালা করে
কফ থাকে
জয়েন্টে ব্যাথা হয়
স্কিনে র্যাশ হয়
ডায়রিয়াও হতে পারে
ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হলে এই সব গুলো লক্ষণই যে প্রকাশ পাবে এমন কোন কথা নেই। কিছু ভাইরাস জ্বর পতঙ্গের কারণেও হয়ে থাকে। যেমন- আরবোভাইরাস। এই ভাইরাসের আক্রমণে রক্তপাতের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রক্তপাত ত্বক থেকে বা শরীরের অভ্যন্তরীণ কোন অঙ্গ থেকেও হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
প্রাথমিক অবস্থায় ভাইরাস জ্বর সনাক্ত করা গেলে কিছু সহজ ও ঘরোয়া উপায়ে সুস্থতা লাভ করা যায়। তাহলে ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেই এবার।
১। অনেক পানি পান করুন
ভাইরাস জ্বরে শরীরে পানি শূন্যতা হতে পারে তাই ডিহাইড্রেশন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে প্রচুর পানি পান করতে হবে।
২। ব্যক্তিগত সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন
ভাইরাস জ্বর হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমন-
- নিয়মিত হাত ধোয়া উচিত
- ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত। ভিড়ের মধ্যে গেলে মুখ ঢেকে রাখা উচিত যাতে অন্যরা সংক্রমিত না হয়।
- হাত না ধুয়ে মুখে বা নাকে স্পর্শ করা উচিত না।
- রুমাল বা টিস্যু রাখুন হাতের কাছেই।
অন্য কারো কাছ থেকেও যাতে আপনার শরীরে নতুন কোন জীবাণুর সংক্রমণ না হয় এই জন্য সতর্কতা গুলো মেনে চলা উচিত।
৩। বিশ্রাম নিন
ভাইরাস জ্বরে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পরে। এই সময় অনেক বিশ্রাম নিতে হবে তাহলেই শরীর তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
৪। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও এনার্জি বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাই প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সহজে হজম হয় এই ধরণের খাদ্য নির্বাচন করতে হবে।
৫। শরীরের কোন দাগ দেখলে সতর্ক হোন
বেশির ভাগ ভাইরাস জ্বরে শরীরে ক্ষত, ফোস্কা বা চুল্কানি হতে দেখা যায়। এই রকম কিছু লক্ষ্য করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
৬। ইমিউনিটি বাড়ান
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ভিটামিন সি, জিঙ্ক ও ভিটামিন ডি গ্রহণের দিকে মনোযোগী হতে হবে।তাহলেই দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব হবে।
৭। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ গ্রহণ করবেন না
ভাইরাস জ্বরের নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই। লক্ষণ দেখে প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে হয়। তাই নিজে থেকে কোন ঔষধ গ্রহণ করবেন না। এতে বরং পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। মনে রাখবেন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাক্টেরিয়ার জন্য ভাইরাসের জন্য নয়।
আপনি যদি ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হোন তাহলে এই নিয়ম গুলো অনুসরণ করুন, দেখবেন খুব দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন।