Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Health Image

জিকা ভাইরাস



বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ আকার ধারণ করায় সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া রোগ ‘জিকা ভাইরাস’ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি বলছে, মশাবাহিত এই রোগটির সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
তবে রোগটি নিয়ে আরো ভয়াবহ তথ্য হলো, এটির প্রতিষেধক আসতে অনেক দেরি হবে। এর প্রভাবে মানুষের মৃত্যু না হলেও গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক বৈকল্যের আশঙ্কা এটিকে সবার কাছে আতঙ্কের বিষয় করে তুলেছে।


জিকা ভাইরাস কী?
ইবোলা বা মার্সের মতো প্রাণঘাতী নয় রোগটি। এমনকি এইডস বা ক্যানসারের মতো নিশ্চিত মৃত্যুর আশঙ্কাও নেই এতে। মশাবাহিত রোগ জিকা ভাইরাসকে তুলনা করা যেতে পারে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া বা ওয়েস্ট নাইল রোগের সঙ্গে। জ্বর, অস্থি সন্ধিতে ব্যথা এটির লক্ষণ।

এটি কীভাবে ছড়ায়?
এডিস মশার কামড়ে রোগটি মানবদেহে ছড়ায়। জিকায় আক্রান্ত মায়ের শরীর থেকে ভাইরাসটি যেতে পারে গর্ভস্থ শিশুর দেহে। মা আক্রান্ত হওয়ার সাত দিনের মধ্যে এটি শিশুটির শরীরে বাসা বাঁধবে। কিন্তু সেটা কেন বা কীভাবে হয়, তা এখনো জানেন না চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শিশু গর্ভে আসার আগে বাবার শরীর থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

রোগটির প্রকোপ কোন অঞ্চলে বেশি?
এ মুহূর্তে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন দক্ষিণ আমেরিকার বেশির ভাগ দেশের মানুষ। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে মধ্য আমেরিকা, পুয়ের্তোরিকো, মেক্সিকো এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চল।

এর আগে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা গিয়েছিল থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মিসর, সেনেগাল ও আইভরি কোস্টে। এবারে এটি ছড়াতে শুরু করেছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল থেকে।

এর চিকিৎসা কী?
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া শিশুদের রোগটিকে বলা হচ্ছে ‘মাইক্রোসেফ্যালি’। এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, এল সালভাদর, হন্ডুরাস ও জ্যামাইকায়। ব্রাজিলে গত কয়েক মাসে চার হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে মাইক্রোসেফ্যালিতে আক্রান্ত হয়ে। অর্থাৎ তাদের মাথা শরীরের তুলনায় অস্বাভাবিক রকমের ছোট হচ্ছে।

মস্তিষ্কের গঠন অসম্পূর্ণ থাকায় এমন শারীরিক বিকৃতি নিয়ে জন্মাচ্ছে শিশুরা। রোগটি প্রতিরোধ করতে নারীদের গর্ভধারণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ। তবে এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে নারীবাদী সংগঠনগুলো।

গর্ভধারণকে নিরুৎসাহিত করতে দক্ষিণ আমেরিকাজুড়ে বিতরণ করা হচ্ছে গর্ভ নিরোধক। মশা নিধনেও উঠেপড়ে লেগেছে কর্তৃপক্ষ।
এর প্রতিষেধক কবে নাগাদ আসতে পারে?

দ্রুততার সঙ্গে রোগটি ছড়াতে শুরু করলেও কদিন আগেই চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর প্রতিষেধক আসতে ১০ বছরও লাগতে পারে। আরো ভয়াবহ তথ্য হলো, প্রতিষেধক এলেও তা ভীষণ দামী হতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

সর্বশেষ, জিকা ভাইরাসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে ভারতের কিছু অংশেও। জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ থামানো না গেলে আগামী প্রজন্মের বিরাট অংশ শারীরিক বৈকল্য বা অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম নিতে পারে। একটা গোটা প্রজন্ম এমন ভয়ংকর রোগের শিকার হলে ভবিষ্যতে সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।