মন খুলে কথা বলার জন্য বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেত্রী আনুশকা শর্মার সুনাম রয়েছে। ২৭ বছর বয়সী এই তারকাকে এ বছর দেখা গিয়েছে ‘এনএইচটেন’ ও ‘বোম্বে ভেলভেট’ ছবিতে। চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপড়ার সাথে এক সাক্ষাৎকারে এই নায়িকা তাঁর জীবন বলিউডের অনেক অজানা কথা খোলাসা করেছেন। তিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে ও সাত বছরের ক্যারিয়ারে আরো নানা ধরনের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন এই আলাপে।
বিশেষভাবে সাতটি ব্যাপারে তিনি কথা বলেছেন যা থেকে তাঁর সমসাময়িক ও সিনিয়র সহঅভিনেতা অভিনেত্রীরা অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
১. সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই, তবে আমি জানি এটি সত্যি কারণ এর অভিজ্ঞতা আমার আছে। যেকোন সিনেমায় মেয়েদেরকে অবশ্যই দেখতে সুন্দরী, গুণের অধিকারী এবং আকর্ষণীয় হতে হয়, যাতে দর্শকেরা নায়িকার প্রেমে পড়তে পারে। ব্যপারটি কিছুটা আমাদের সমাজেরই প্রতিচ্ছবি।
২. পুরুষ অভিনেতাদের বয়স যতই হোক, তবুও তারা ইন্ডাস্ট্রিতে নায়কের ভূমিকায় কাজ করতে পারে। দর্শকরা ব্যাপারটি খুবই স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করে এবং আমি নিজেও এটি সমর্থন করি। কিন্তু নায়িকাকে অবশ্যই কম বয়সী এবং আকাঙ্ক্ষিত হতে হয়। কিছু সিনেমা বাদে বেশিরভাগ ছবিতেই নায়িকাদের অযথাই দেখানো হয়। অন্যান্য গুণাবলীগুলো থেকে শুধুমাত্র নায়িকাদের সৌন্দর্য ও ‘নখরা’ গুলোকেই বারবার বেশিরভাগ সিনেমাতে প্রাধান্য দেয়া হয়।
৩. শুধুমাত্র পারিশ্রমিকেই নয়, সব ব্যাপারেই বৈষম্যের মাঝে পড়তে হয় অভিনেত্রীদেরকে। এমনকি আউটডোর শুটিংয়েও দেখা যায় নায়কেরা নায়িকাদের তুলনায় সেরা রুমটিই পেয়ে থাকে।
৪. যদি এমন কোনো ছবিতে আমার চরিত্রটি কোনো নায়কের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়, তখন দেখা যায় বেশিরভাগ অভিনেতাই সেই চরিত্রতিতে অভিনয় করতে চান না।
৫. আমাদের সমাজে ছেলেরা অনেক গুরুত্ব পায়। সে কারণেই ধারণা করা হয়, পুরুষ অভিনেতাদের দিয়েই ছবির লগ্নির টাকা তুলে আনা সম্ভব। তাঁর পারিশ্রমিকও সেই কারণে বেশি হয়ে থাকে।
৬. ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে আসা নতুন ছেলেটিই সবসময় নতুন মেয়েটির থেকে বেশি পারিশ্রমিক পায়। ছেলেদের বেশি টাকা প্রয়োজন, এমনটিই প্রচলিত ধারণা। আমার মনে হয় তাদের ধারণা এমন যে, পুরুষদেরকেই শুধু পরিবার চালাতে হয়। আমি কোনো লোভ থেকে এই কথাটি বলছি না। নিজেকে মূল্যায়ন করার জন্য বলছি। দিন শেষে সব মানুষই সম্মান আশা করে। কিন্তু যখন আমাকে কম পারিশ্রমিক দেয়া হয়, তখনই নিজেকে মূল্যহীন মনে হয়।
৭. কিছুদিন আগে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, ‘আমি কোন জিনিসের পরিবর্তন চাই’? আমি আমার সেই বন্ধুকে বলেছিলাম, আসলে আমরা খুব সৌভাগ্যবান, কারণ আমরা ভারতে থাকি। কারণ তারকা হিসেবে আমাদের রুচি খুবই মাঝারি ধরনের।