Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

বধ্যভূমি রায়েরবাজার



মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে আমরা সবাই একত্রে শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম। এভাবে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উদ্ধুদ্ধ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। আধুনিক উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ও দেশপ্রেম সব সময় প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বুদ্ধিজীবী হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসের একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়।

প্রতিষ্ঠাকাল ও ইতিহাস
বর্তমান আধুনিক বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধটি ১৪ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বুদ্ধিজীবী হত্যা একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ভারতীয় মিত্রবাহিনী এবং আমাদের মুক্তিবাহিনী নিয়ে একটি যৌথ কমান্ড গঠিত হয়। এর ফলে স্থল, নৌপথ ও আকাশপথে একযোগে আক্রমণ করা সম্ভব হয় হানাদার বাহিনীর ওপর। এতে তারা সহজেই পর্যুদস্ত হয়। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে পাকিস্তানি শাসকচক্র এদেশীয় কিছু দোসরদের সহায়তায় দেশকে চিরতরে মেধাশূন্য করার এক ঘৃণ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়। তারা ভেবেছিল এ দেশকে মেধাশূন্য করা গেলে বাঙালি জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। এ জন্য তারা হত্যা করেছিল বাঙালি জাতির বিবেক, চেতনা, মননশীলতা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক এ মাটির সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। তবে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশনা ও মদদে এদেশীয় দালাল এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, নাট্যকার, শিল্পী প্রভৃতি শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং এই হত্যাযজ্ঞ ঘটায়। তারা ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, শহিদুল্লাহ কায়সার, ডা. ফজলে রাব্বীসহ এদেশের প্রথম সারির অনেক বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিজয় লাভের কিছুদিন পর তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ রায়েরবাজারের ওই স্মৃতিসৌধের স্থানটিতে পাওয়া যায়। তাদের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে এই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় যা রায়েরবাজার বধ্যভূমি ‘স্মৃতিসৌধ’ নামে পরিচিত।

বর্তমান অবস্থা এবং জাদুঘর
ওই স্থাপনাটি বাংলাদেশ সরকারের গণপূর্ত অধিদফতরের অধীনে রয়েছে। বর্তমানে বধ্যভূমি এলাকাটি সংরক্ষিত করে এতে একটি চমৎকার স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। ওই স্মৃতিসৌধটি স্থপতি জামী আল সাফী এবং স্থপতি ফরিদ উদ্দীন আহমেদের নকশায় নির্মিত। নান্দনিক নকশায় নির্মিত এ স্মৃতিসৌধটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। এখানে পর্যটকরা এসে অতীতের কথা জানতে পারেন। স্থাপনা প্রাঙ্গণে কোন লাইব্রেরি বা জাদুঘর নেই। এর পূর্বদিকে গণপূর্ত অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট অফিস রয়েছে। এই নান্দনিক স্থাপত্যের পাশে একটি জলাধার রয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের বসার জন্য কয়েকটি টেবিল রয়েছে।

টিকিট ও খোলা-বন্ধ
এখানে টিকিটের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বিনামূল্যে যে কোন পর্যটক ঘুরে দেখতে পারেন। এ স্থাপনাটি সকাল ৯ থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। রাতের বেলায় এখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।