Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

বিশ্বের যে ৫টি শহরে বসবাস সবচেয়ে নিরাপদ



কোথাও খেতে খেতে নিজের ল্যাপটপ রেখে আসলেও বোধহয় চিন্তা করবেন না পৃথিবীর নিরাপদ সব শহরের বাসিন্দারা। কোন ক্যাফেতে নিজের টাকার ব্যাগ বা ল্যাপটপ রেখে আসার ব্যাপারে প্রায় সবাই সতর্ক থাকলেও অন্তত নিরাপদ শহরের বাসিন্দাদের এ ব্যাপরটিতে উদাসীনতা দোষের কিছু নয়। বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ শহরগুলোতে বসবাসরত অধিবাসীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলাটা এক ধরণের বাতুলতা। দ্য ইকোনমস্টি ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ৫টি শহরের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকা প্রনয়ণে ইআইইউ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, পরিকাঠামো ও স্বাস্থ্যগত স্থায়িত্ব, ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রযুক্তি এই বিষয়গুলোকে মানদন্ড হিসেবে গণ্য করেছে।

ওসাকা:
টোকিওর পাশাপাশি জাপানের ওসাকা শহর বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ শহর। ১৭ বছর আগে ইংল্যান্ড থেকে জাপানে চলে আসা স্থানীয় ইংরেজি ম্যগাজিন কানসাই সিনের প্রতিষ্ঠাতা ড্যানিয়েল লি বলেন: “জনসাধারণের বসবাসের জন্য জাপান অবিশ্বাস্য রকমের নিরাপদ জায়গা।”

ওসাকা জাপানের বাণিজ্যিক শহর হিসেবে পরিচিত। শহরটির বেশিরভাগ মানুষই অনেক রাত করে ঘরে ফেরে। আর একারণেই দিনে হোক আর রাত স্টেশনগুলো সবসময়ই মানুষে সরগরম থাকে। কিয়োটো থেকে ওসাকা আসা ২৫ বছর বয়সী ইয়োশি ইয়ামামোতো বলে: “রাতের বেলা শহরে মেয়েদের চলা ফেরা একদম নিরাপদ।”

বাণিজ্যিক এই শহরটির মানুষগুলো অনেক বন্ধুপরায়ণ। লি বলেন: “ওসাকা হল বিক্রেতাদের শহর, আর এখানকার মানুষগুলো আলাপ করতে ভালোবাসে। একজন আাগন্তুক হিসেবে আপনি কোন পানাহারের দোকানে গেলে দোকানীরা আপনাকে প্রচুর খাতির যত্ন করবে। আপনি হয়ত তাদের কোন কথায় বুঝবেন না তবে তাদের আতিথিয়তায় আপনি মুগ্ধ হবেন।

আমস্টারডাম:
প্রায় ১০ লক্ষ অধিবাসীর শহর আমস্টারডাম এখনও পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি সব শহর থেকে তুলনামূলকভাবে ছোট। শহরটিকে ইউরোপের অন্যতম নিরাপদ আবাসিক পরিবেশ হিসেবে গণ্য করা হয়।

তিন বছর আগে নিউইয়র্ক ছেড়ে আমস্টারডামে আসা আন্দাজ আস্টারডাম প্রিনসেনগ্রাচ্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপক টনি হিন্টাসটসিয়ার বলেন: “এই শহরটির বাসিন্দা হিসেবে আমি নিজেকে অনেক নিরাপদ মনে করি। এখানকার মানুষগুলো অনেক শান্তিপ্রিয় এবং কেউই খুব সহজেই কারোর উপর বিক্ষুব্ধ হন না।”

সিডনি:
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শহর হওয়া সত্ত্বেও সিডনী’র প্রতিবেশগত সংস্কৃতি এখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ রাখতে সহায়তা করে। স্থানীয় ভ্রমণ এজেন্সী মাই ডিট্যুরের মালিক রিচার্ড গ্রাহাম বলেন: “আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজন একে অপরের দেখভাল করে। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই আমরা প্রতিবেশীদেরকে সতর্ক করে দেই।

সম্প্রতি সিডনি শহর কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের হাঁটা চলায় উৎসাহী করার জন্য ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের উন্নয়নে কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটি জীবন নিরাপদ রাখতে সহায়তা করবে। তাদের মতে, আপনি যত বেশি রাস্তায় চলাফেরা করবেন তত বেশি আপনার নিজেকে সম্প্রদায়ের অংশ বলে মনে হবে।

সিঙ্গাপুর:
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই শহরটিতে আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন আছে। আর সে কারণেই এখানকার পরিবেশও অনেক নিরাপদ। ব্যাঙ্গালুরু থেকে সিঙ্গাপুর আসা বোনঅ্যাপট্যুরের সহ-প্রতিষ্ঠিতা রিনিতা ভাঞ্জারের চোখে উচ্চ বেতনধারী সিঙ্গাপুরের পুলিশ নিরাপত্তা রক্ষায় অতুলনীয়। তিনি বলেন: “এখানকার পুলিশদের বেতন অনেক বেশি। আর সে কারণেই নিজেদের দায়িত্ব পালনে তারা সিদ্ধহস্ত।”

শুধুমাত্র আইনের সঠিক বাস্তবায়নই নয়, ভাঞ্জারের মতে এখানকার স্থানীয়রাও অনেক সৎ। তিনি বলেন: “আপনি হয়তো কোন রেস্টুরেন্টের টেবিলে আপনার ব্যাগ রেখে ক্যাশে এসে খাবার অর্ডার দিচ্ছেন। এরপর আপনি এসে দেখবেন আপনার ব্যাগ ঠিক ওখানেই আছে। কেউ তা নেয়নি। আর এখানকার বাসিন্দারা জানে ঐ ব্যাগ নিলে ধরা খাওয়া ও শাস্তি পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।”

স্টকহোম:
ইউরোপের উত্তরে অবস্থিত সুইডেনের স্টকহোমে গ্রীষ্মকালীন সময় যেন ফুরায় না। গ্রীষ্মকালীন তপ্ত আলো ও স্বল্প শীতকাল জায়গাটিকে অন্য সব থেকে নিরাপদ করেছে। ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত স্টকহোম ইংলিশ মাম্মা ব্লগের ব্লগার ক্যাট টি বলেন: “দুই সন্তানের মা হিসেবে নিরাপত্তা আমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর স্টকহোম শিশুদের উপযোগী শহর। শহরটিতে অনেক খেলার মাঠ ও সবুজে ঘেরা জায়গা আছে।”

লন্ডনের মত একটানা শব্দ নেই স্টকহোমে। আর আয়তনে ছোট হওয়ার কারণে স্টকহোমের জীবন গতিশীল ও অত্যাধুনিক।