Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Technology Image

ইঁদুরের মধ্যে মানুষের ডিএনএ



ইঁদুরের ভ্রূণের মধ্যে মানুষের ডিএনএ সিকোয়েন্স ঢুকিয়ে তা নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই পরীক্ষার ফলে ইঁদুরের মস্তিষ্কের আকার আরও বড় হয়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। আলঝেইমারের মতো রোগের চিকিৎসায় এই গবেষণা কাজে লাগবে বলে তাঁরা উল্লেখ করেছেন। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানিয়েছেন, মানুষের জেনেটিক কোডের সঙ্গে মানুষের প্রজাতির সঙ্গে মিল রয়েছে এমন প্রাণীর অনেক মিল রয়েছে। এ রকম একটি প্রাণী হচ্ছে শিম্পাঞ্জি। শিম্পাঞ্জির সঙ্গে মানুষের ৯৫ শতাংশ মিল রয়েছে। শিম্পাঞ্জির সঙ্গে যে পার্থক্য রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে মস্তিষ্কের আকার। মানুষের মস্তিষ্কের আকার শিম্পাঞ্জির চেয়ে বড়। শিম্পাঞ্জির মস্তিষ্কের ওজন ৩৮৪ গ্রাম আর মানুষের প্রায় এক কেজি ৩৫২ গ্রাম।

শুধু মস্তিষ্কের ওজন নয় বুদ্ধিমত্তার দিক থেকেও শিম্পাঞ্জির চেয়ে মানুষ এগিয়ে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, শিম্পাঞ্জির মতো প্রাণীর সঙ্গে মানুষের বিবর্তনগত পার্থক্যের জন্য যে ডিএনএ সিকোয়েন্স ভূমিকা রাখে সেটা তারা বের করতে পেরেছেন।কিন্তু কীভাবে তাঁরা এটা করেছেন? গবেষকেরা বলছেন, ইঁদুরের ভ্রূণ নিয়ে গবেষণা করে এই পার্থক্য ধরতে পেরেছেন তাঁরা। এই ডিএনএ সিকোয়েন্সকে বলা হয় হেয়ার ৫ (এইচএআরই৫)। এই জিন সিকোয়েন্স যখন ইঁদুরের ভ্রূণে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়, তখন ইঁদুরের মস্তিষ্কের আকার বড় হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মস্তিষ্কের বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।


কারেন্ট বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণা-সংক্রান্ত নিবন্ধ।ডিউক ইউনিভার্সিটির মেডিকেল স্কুলের মলিকুলার জেনেটিকস অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডেবরা সিলভার এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, ‘হেয়ার ৫ ছাড়াও আমাদের খোঁজ পাওয়া আরও কয়েকটি সিয়োকেন্স মানুষের মস্তিষ্কের অনন্যতার বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে। হেয়ার ৫ মূলত ‘এনহ্যান্সার’ নামে পরিচিত, যা ‘হিউম্যান-অ্যাকসেলেরেটেড রেগুলেটরি এনহ্যান্সারস’ গ্রুপের মধ্যে পড়ে। এর মধ্যে হেয়ার ১ থেকে হেয়ার ৬ পর্যন্ত সিকোয়েন্স রয়েছে। এনহ্যান্সারস হচ্ছে ডিএনএর ছোট অংশ, যা প্রতিটি জিনোমের মধ্যে থাকে এবং জিনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।

গবেষক ডেবরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা ডিএনএর অবস্থান শনাক্ত করতে আমাদের গবেষণা দল মানুষ থেকে শুরু করে বানর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রাণীর জেনোমিক তথ্যের ডেটাবেজ বিশ্লেষণ করে। ১০৬টির মতো গ্রুপ নিয়ে গবেষণা করে শেষ পর্যন্ত হেয়ার গ্রুপটি মস্তিষ্ক বৃদ্ধির জন্য ভূমিকা রাখে সেই তথ্য জানা সম্ভব হয়। এর মধ্যে হেয়ার ৫ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

ডেবরা আরও জানান, মজার বিষয় হচ্ছে মানুষ ও শিম্পাঞ্জির হেয়ার ৫ জিনোম সিকোয়েন্সে যথেষ্ট মিল পাওয়া গেছে। কিন্তু এই জিনোম যখন ইঁদুরের ভ্রূণে ব্যবহার করা হয়েছে তখনই আসল পার্থক্য ধরা পড়েছে।গবেষকেরা মনে করছেন, তাদের এই গবেষণা নির্দিষ্ট মস্তিষ্কের অবস্থার সঠিক চিত্র বুঝতে সাহায্য করবে। অটিজম ও আলঝেইমারের মতো রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও তা কাজে লাগানো যাবে।