Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Technology Image

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে পাঁচ প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ


দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে চার দেশের পাঁচ প্রতিষ্ঠান। আরও তিনটি দেশের প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করছে বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। ইতোমধ্যে এই পাঁচ প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইটের টেন্ডারিংয়ের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশের চাহিদার ভিত্তিতে এই প্রকল্প নিয়ে টেন্ডার প্রস্তাব জমা দিবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আগামী ২ জুন দরপত্র জমা দেয়া শেষ হলেই সকল প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে বেছে নেয়া হবে সবচেয়ে যোগ্য প্রতিষ্ঠান। যাদের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ হবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে চার দেশের পাঁচ প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক এই টেন্ডারে অংশগ্রহণের জন্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে। গতকালও (সোমবার) এসব প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন করে প্রতিনিধি প্রথমে একত্রে, পরবর্তীতে পৃথক পৃথকভাবে বিটিআরসি ও প্রকল্পের সদস্যদের সাথে বৈঠক করেছে। দৈনিক ইনকিলাবের সৌজন্যে।

পত্রিকাটির তথ্যমতে, সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্পে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছাড়াও বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান, তাসমিয়া তাহমিদসহ প্রকল্পের অন্যান্য সদস্যরা। সমন্বিত এই বৈঠকের পর পৃথকভাবে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা প্রকল্পের সদস্যদের সাথে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের বিষয়ে প্রকল্পের একাধিক সদস্য জানান, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। কোম্পানিগুলো ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। তারা স্যাটেলাই প্রকল্পে তাদের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে বিনিময় করেছে। এছাড়া এই প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশা এবং প্রকল্পের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে। এর ভিত্তিতে তারা দরপত্রের প্রস্তাব জমা দিবে। আগামী ২ জুন প্রস্তাব জমা দেয়া হলে, সকল প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাই করে তাদের কাজ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে আবেদন করা চার দেশ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডা ও ফ্রান্সের পাঁচ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ব্রিটেন, রাশিয়া ও জাপানের প্রতিষ্ঠানও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সাথে যোগাযোগ করছে বলে জানানো হয়েছে। তবে টেন্ডার নীতিমালার কারণে এখন প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা।

এরআগে ‘বঙ্গবন্ধু’ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে বিটিআরসি। বাংলাদেশ ও আশপাশের অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবা দেয়ার জন্য জিয়োসিক্রোনাস স্যাটেলাইট সিসেস্ট (৪০টি ট্যান্সপন্ডার, ২৬ কেইউ-ব্যান্ড, ১৪ সি-ব্যান্ড) এর গ্রাউন্ড সিস্টেমসহ সব ধরনের যন্ত্রাংশের জন্য এই দরপত্র আহ্বান করা হয়। আগামী ২ জুন দুপুর ২টা পর্যন্ত দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। দরপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হলে ওই দিন দুপুর আড়াইটায় খোলা হবে দরপত্র বক্স। বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আছেÑ এমন সব দেশ দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে। তবে দরপত্রে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানকে স্যাটেলাইট সিস্টেম তৈরিতে ১৫ বছরের বাণিজ্যিক অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দরপত্রের আওতায় স্পেস সিগমেন্ট, লঞ্চ সার্ভিস বা উৎক্ষেপণ, গ্রাউন্ড সিগমেন্ট এবং উৎক্ষেপণের পর একবছর পর্যন্ত বীমা সুবিধার কথা বলা হয়েছে। পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার দিয়ে এ দরপত্র সংগ্রহ করতে হবে। আগামী ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর এ স্যাটেলাইট সিস্টেম উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত ১৫ জানুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু’ উৎক্ষেপণের জন্য অরবিটাল স্লট ইজারা নিতে চুক্তি করে বিটিআরসি। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ স্থাপনের লক্ষ্যে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল স্লটের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারস্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব স্পেস কমিউনিকেশনসকে দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার দেবে বিটিআরসি। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুই হাজার ৯৬৮ কোটি টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন করে, যার মধ্যে এক হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে যোগানো হবে। এছাড়া প্রকল্প সাহায্য থেকে আসবে এক হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে এই প্রকল্পের অর্থায়নের ব্যবস্থা হবে। ভূমি থেকে উপগ্রহটি নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) নিজস্ব জমিতে দুটি ‘গ্রাউন্ড স্টেশন’ নির্মাণ করা হবে।