Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Sports Image

চার গ্রেটের চোখে



সৌরভের বাজি ভারত
অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট এবং ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে খারাপ করলেও বিশ্বকাপে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত। ইতোমধ্যে দাপটের সঙ্গে খেলে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দেশটির সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী মনে করেন সামনে আরও দারুণ কিছু করবে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। ‘এবারও দলে কিছু ম্যাচ উইনার রয়েছে। এটা ইতিবাচক যে একক কারও ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না। এক ম্যাচে শিখর ধাওয়ান, আরেক দিন আবার বিরাট কোহলি ভাল করছে। ব্যাট হাতে দৃশ্যপট বদলে দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে রোহিত শর্মারও।


ওর কাছ থেকে বড় একটা ইনিংস পাওনা হয়ে গেছে। সেটা যেন হয় কোয়ার্টার ফাইনালেই!’ বোলারদেরও প্রশংসা করেন সৌরভ। তিনি বলেন, ‘গত কিছুদিন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করায় মোহাম্মদ সামি, উমেশ যাদব, মোহিত শর্মাদের ধার বেড়েছে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোতে গোটা দলের শারীরিক ভাষাও ছিল ইতিবাচক।’ এভাবে খেললে ভারত টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলতে পারে বলে মনে করেন সৌরভ। ‘আর তো মাত্র তিনটা ম্যাচ। এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে সেটা সম্ভব। পাশাপাশি শিরোপার পথে আমি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকেও এগিয়ে রাখব।’ যোগ করেন তিনি। গত কয়েক বছরে বিদেশে টেস্টে ব্যর্থ হলেও ওয়ানডেতে ধোনির নেতৃত্বাধীন দল খুবই ভারসাম্যপূর্ণ বলেও মত দেন কলকাতার দাদাবাবু।



আশা দেখেন না ওয়াসিম
প্রথমে টানা দুই ম্যাচে হেরে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তান। এরপরই টানা তিন জয়ে ঘুরে দাঁড়ায় মিসবাহ-উল হকের দল। শেষ ম্যাচে অন্যতম ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে কোয়ার্টারের রেসে উঠে আসে পাকিরা। তবু দলটি নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী নন সাবেক গ্রেট ওয়াসিম আকরাম! ‘এই ছেলেদের নিয়ে কিভাবে ভরসা করব?
টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কয়েক ওভার দেখে খেলা উচিত, এটা নতুন কথা নয়। কিন্তু প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই সেটি হচ্ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তো লজ্জাতেই পড়তে হয়! পরের তিনটি ম্যাচে জয় আসে মূলত বোলারদের জন্য। এমনটা প্রতিদিন হবে, তার নিশ্চয়তা নেই।’ বলেন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে বড় ব্যবধানে হারের দিন ১ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
সেটিকে সম্ভবত সেটি এখনও ভুলতে পারেননি ১৯৯২-এর বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সারথি। তবে ধারাবাহিকতার বিচারে একমাত্র মিসবাহ-উল হকেরই প্রশংসা করেন ওয়াসিম। তিনি বলেন, ‘কঠিন পরিস্থিতিতে মিসবাহ নিয়মিত রান করছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ও একজন মানুষ। আপনি ওর কাছ থেকে আর কত রান চাইবেন? ক্রিকেট দলীয় খেলা। অন্যদেরও তাঁকে সমর্থন দেয়ার প্রয়োজন আছে। সর্বোপরি এই দলটিকে ৯২-এর ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সেই দলটির চেয়ে পিছিয়ে রাখব আমি। এভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানো যায় না। দল নিয়ে অনেক কিছু ভাবার আছে।’



ধোনিতে মুগ্ধ চ্যাপেল
ভারতীয় দলের বিশ্বকাপ-পূর্ব ব্যর্থতার কারণে গণমাধ্যমের যে চাপ তৈরি হয়েছিল, সেটা পেছনে ফেলে এমন ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে মুগ্ধ সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল, ‘অবিশ্বাস্য! এটা ধোনি ও তার দলের জন্য একটা বড় অর্জন। যা সম্ভব হয়েছে ড্রেসিংরুমে ধোনির মতো ঠাণ্ডা মাথার লোক থাকায়। কঠিন সময়ে এই পারফরম্যান্স, সত্যিই অসাধারণ। আড়াই মাস ধরে তারা কেবলই হারছিল, কিন্তু এখন তারা টানা চার ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে।’ তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে দলনেতা হিসেবে ধোনির দুটি আকর্ষণীয় গুণ আছে। খেলোয়াড়রা তার ওপর আস্থা রাখে এবং সে শত বিপর্যয়েও শান্ত থাকে, সে অনেকবারই ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছে যে কারণে খেলোয়াড়রা বিশ্বাস করে যে সে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে।’ অবশ্য চ্যাম্পিয়ন দলে কিছু সমস্যাও দেখেন তিনি। ‘রবীন্দ্র জাদেজা বা সুরেশ রায়নার শর্ট বলে সমস্যা আছে, বোলাররাও ধারালো নয়, তার পরও তাদের সাফল্যের পেছনে আসলে এই ধোনি। দলের সবচেয়ে ভাল ব্যাপারটা হচ্ছে ধোনির সাফল্যের জন্য ক্ষুধা। এ ছাড়া ধোনি যেভাবে তার দলের সতীর্থদের স্বস্তিতে রাখে, সেটাও প্রশংসার যোগ্য। সে সবাইকে সব সময় সমর্থন দিয়ে যায় এমনভাবে যাতে যে কারও মনে হয় ভাল পারফর্ম করে ধোনির সম্মানটা যেন সে রাখতে পারে। পরে ব্যাট করে জেতায় ব্যাট হাতেও ধোনি অবিশ্বাস্য। সবসময় সে দলকে জিতিয়ে ফেরে, এটা ওর অভ্যাস।’



ফ্লেমিংয়ের সেরা নিউজিল্যান্ড
‘আমি দিব্যি দেখতে পাচ্ছি ২৯ মার্চ মেলবোর্নের ফাইনাল খেলছে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া! ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের নেতৃত্বাধীন দলটি আমাদের সময় তো বটেই, কিউই ইতিহাসেরই অন্যতমসেরা। চ্যাম্পিয়ন না হলেও দক্ষিণ আফ্রিকা কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। ডার্ক-হর্স হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম উল্লেখ করব।’ বলেন ১৯৯৪-২০০৮ পর্যন্ত ব্ল্যাক-ক্যাপস ক্রিকেটের প্রতিনিধিত্বকারী ৪১ বছর বয়সী স্টিফেন ফ্লেমিং। সাবেক তারকা আরও যোগ করেন ‘আবেগ থেকে নয়, বাস্তবতা বিচার করেই আমি কথাগুলো বলছি, ব্যাট হাতে কেন উইলিয়ামসন, রস টেইলর, ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম, বোলিংয়ে টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, অলরাউন্ড পজিশনে কোরি এ্যান্ডারসন প্রত্যেকে ম্যাচ-উইনার। নিরপেক্ষভাবে এটা মানতে হবে। প্রতিটি দলই এখন আমাদের নিয়ে আলাদা করে ভাবে। ক্রিকেটাররা মাঠের নৈপুণ্যে এই মর্যাদা আদায় করে নিয়েছে। এদের সঙ্গে আরও কয়েকজন অসাধারণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে, যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে দেশকে প্রথমবারের মতো শিরোপা উপহার দেয়ার।’ তবে ৯২-এর গ্রেট সেই দলের সঙ্গে তুলনা করে তিনি আরও বলেন, ‘শুধু দু’জনের বিকল্প খুঁজে পাই না। একজন স্যার রিচার্ড হ্যাডলি আর একজন মার্টিন ক্রো! না হলে সব ঠিক আছে। আত্মবিশ্বাসটা একদিনে তৈরি হয়নি। গত দুই মৌসুম ধরে ম্যাককুলাম-উইলিয়ামসন-সাউদিরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে। টানা পাঁচ জয়ের পর এবার কোয়ার্টার থেকে আরও খুনে নিউজিল্যান্ডকে দেখতে মুখিয়ে আমি।