একান্ত মুহূর্তের সঙ্গী মানুষের ঘর। দিনশেষে বাসায় ফিরে সাজানো গোছানো ঘর না দেখলে মনটাই বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে তাই ঘর চাই সবসময় টিপটপ। আর ঘরটি যদি বসবাসরত ব্যক্তিটির রুচিবোধের সঙ্গে মিলিয়ে করা হয়, তবে সহজেই ঘরটি দেবে তাকে এক প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া। এই ঘর সাজানোর ব্যাপারটি যে শুধু মেয়েদের বেলায়ই প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়। সময়ের সাথে সাথে এই ব্যাপারেও যথেষ্ট পরিবর্তন এসেছে। এখন ছেলেদের নিজস্ব রুমটিতেও চাই শৈল্পিক পরিচয়। যেকোনো ছেলের ঘরের সাজ নির্ভর করে তার বয়স এবং কাজের ওপর।
ধরা যাক, সে পেইন্টিংয়ের ছাত্র, তাহলে তার ঘরের ভেতরে শিল্পকলার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র প্রাধান্য পাবে। আবার সে যদি চাকরিজীবী হয়, এ ক্ষেত্রে তার পেশা অনুযায়ী ঘরের ভেতরকার অন্দরসজ্জা করা হবে। যেহেতু বাসাবাড়িতে ছেলেদের ঘরের জন্য খুব একটা বড় জায়গা পাওয়া যায় না, সে ক্ষেত্রে আসবাবপত্রগুলো এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে সামঞ্জস্য থাকে এবং ঘরে বদ্ধ ভাবটা না থাকে। ঘরের ভেতর সিঙ্গেল খাট থাকলে তা জানালার কাছাকাছি রাখতে হবে। কারণ ছেলেরা বেশির ভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে কাটায়। যখন নিজের ঘরে এসে বিশ্রাম নেবে, তখন বাইরের বাতাস তাদের শ্রান্তি দূর করবে।
ঘরে সাইডওয়াল কেবিনেট আলমারি রাখলে, তা ওয়াল থেকে ওয়াল বা দেয়ালজোড়া হলে ভালো হয়। তা ছাড়া অনেকেই বাইরে থেকে এসে কাপড়চোপড় গুছিয়ে রাখতে চায় না। আলমারির একদিকে সহজেই ঘুরিয়ে রাখা যায় এমন হ্যাঙ্গার রাখলে সেখানে তারা খুব সহজে কাপড় গুছিয়ে রাখতে পারবে।এ ছাড়া জুতা রাখার জন্য ওয়াল ক্যাবিনেটের নিচে শু-র্যা ক রাখা যেতে পারে।
পড়ার টেবিল নিঃসন্দেহে একটি দরকারি আসবাব। টেবিল কী ধরনের ডিজাইনের হবে, তা নির্ভর করে ঘরে যে থাকবে তার কর্মক্ষেত্রের ওপর। অনেক ছেলেরই বই সংগ্রহের অভ্যাস থাকে। সে ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের টেবিলের সঙ্গে বুকশেলফ কেবিনেট রাখলে তা ঘরের জায়গায় অপচয় কমায়। দেয়ালে যেকোনো একদিকে মেঝে থেকে এক ফুট উচ্চতায় চার ফুট বাই দুই ফুট লম্বা ধরনের লুকিং গ্লাস রাখলে ঘরকে দেবে এক উজ্জ্বলতার ছোঁয়া।
যেহেতু ছেলেদের ঘর, তাই সারা দিনই থাকবে বন্ধুদের আনাগোনা। বন্ধুদের নিয়ে বসে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য ঘরের একদিকে খুব ছোট করে করা যেতে পারে নিচু বসার জায়গা। আর ঘরে যদি বড় প্রস্থের জানালা থাকে, সে ক্ষেত্রে জানালার সামনেই করতে পারেন ছোট্ট আরামদায়ক বসার জায়গা। এ ধরনের বসার জায়গা করলে তা ঘরের অন্দরসজ্জায় নতুনত্ব আনে।
গান শোনার অভ্যাস থাকলে মিউজিক সিস্টেম হয়ে ওঠে ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় যন্ত্র। অনেকের ঘুমানোর সময় গান শোনার অভ্যাস থাকে। সে ক্ষেত্রে খাটের একপাশে মিউজিক সিস্টেম রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আর বন্ধুদের সঙ্গে হইচই-রইরই করে গান শোনার জন্য ঘরের চারদিকে জায়গা করে সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের ব্যায়ামের যন্ত্র ছেলেদের ঘরে থাকতে পারে। যেমন সাইক্লিং মেশিন, ওয়েট লিফট বেঞ্চ ইত্যাদি। যেকোনো ধরনের ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি ঘরের একদিকে রাখা যেতে পারে।
আর কম্পিউটারের জন্য আলাদা টেবিল না রেখে পড়ার টেবিলকে বাড়িয়ে কম্পিউটার রাখা যেতে পারে। ছেলেদের ঘরের দেয়ালের রঙ হতে হবে উজ্জ্বল ও রংচঙে। বর্গাকৃতি ঘরের জানালা যে পাশে থাকবে, সেদিকের দেয়ালে এবং বিপরীত দেয়ালে কমলা রং এবং অপর দুই দেয়ালে ঘিয়া কালার ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঘরের দেয়ালে জ্যামিতিক আকারে ওয়ালপেইন্টিং করলে এবং জানালায় কিচু গাছ রাখলে খুব সহজেই ঘরের প্রাণ এনে দেয়।
ছেলেদের ঘরের বিছানার চাদর, পর্দা সুতি হলেই বেশি আরামদায়। বিভিন্ন ধরনের গাঢ় রঙের বড় বড় চেক কাপড়ের পর্দা এবং বেডকভার ছেলেদের ঘরে মানানসই হয়ে থাকে।
এ ছাড়া ছোটখাটো প্রয়োজনীয় জিনিস অথচ দেখতে সুন্দর এমন জিনিস যেমন ছবির ফ্রেম, ম্যাগাজিন তাক, ডেস্ক ক্যালেন্ডার, মোমের ডিজাইন করা শোপিস দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা যায় ছেলেদের ঘরটি।