কর্মব্যস্ত সপ্তাহ শেষে ইচ্ছে করবে দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে। কিন্তু দূরে যাওয়ার মত সময় কই? তখনই খোঁজ পড়ে ঢাকার ভেতর হারিয়ে যাবার মত জায়গার। ইট কাঠের এই শহরে এক টুকরো সবুজের দেখা মেলাই যেখানে ভার, সেখানে সবুজের প্রান্তরে হারিয়ে যাওয়া অনেকটাই অসম্ভব। কিন্তু এই অসম্ভব ইচ্ছা কিছুটা হলেও পূরণ করবে ‘দিয়াবাড়ি’। হ্যাঁ, যান্ত্রিক এই জীবনে একটু সবুজের ছোঁয়া পেতে চাইলে ছুটে যেতে পারেন উত্তরার দিয়াবাড়িতে।
সবুজ প্রান্তর। লেক পাড়। হু হু করা ঠান্ডা বাতাস। চারপাশে কাশবন। বিশেষ করে শরৎকালে যখন কাশ ফুল ফোটে। চাইলেই ছোটবেলার লুকোচুরি লুকোচুরি খেলাটাও খেলতে পারবেন এখানে”। লেকের এদিক ওদিক থেকে নৌকায় করে ঘুরেও আসতে পারবেন। চারদিকে শুনশান নীরবতা। একটু পর পর সেই নীরবতা ভেঙ্গে সাঁই সাঁই করে উড়ে যায় উড়োজাহাজ! অদ্ভুত সুন্দর একটি দৃশ্য। খুব কাছ থেকে উড়োজাহাজ উড়া দেখতে চাইলে এর চেয়ে ভাল কোন জায়গা হবে না। মাথা উঁচু করে উড়ে যাওয়া উড়োজাহাজ দেখা মনে করিয়ে দিবে হারিয়ে যাওয়া ছেলেবেলাকে। সে এক অসাধারণ অনুভূতি।
আজকাল নাটকে একটি বটগাছ দেখতে পাওয়া যায়। এক বিশাল বটগাছ আর তার দুপাশে রাস্তা। এই বটগাছেরও দেখা মিলবে দিয়াবাড়িতে। এই জায়গারটার নাম এখন ‘দিয়াবাড়ি বটচত্বর’ হয়ে গেছে। প্রায় সময় সেখানে কোন না কোন নাটকের শুটিং চলে। ভাগ্য ভাল থাকলে হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে আপনার প্রিয় কোন তারকার সাথে। বেশ কিছুদূর সামনে গেলে দেখতে পাবেন একটি মরানদী। এটি তুরাগ নদীরই একটি শাখা। অনেকখানি জায়গা জুড়ে লাল মাটির চর। পরিত্যক্ত নৌকা। জাল ফেলে মাছ ধরছে জেলেরা। অদ্ভুত, অসাধারণ, রোমাঞ্চকর ও মনোরম পরিবেশে প্রিয়জনকে নিয়ে কাটিয়ে আসতে পারেন একটি রোমান্টিক বিকেল!
ঘুরাঘুরি শেষে ক্ষুধার জ্বালায় পেট যখন মোচড় দিবে তখন চলে যেতে পারেন বটতলা থেকে দুই মিনিটের হাঁটা দূরত্বে “বাতাস চাচার ধাবায়”। পেট ভরে খেয়ে নিতে পারেন যে কোন কিছু, তবে বাতাস চাচার ধাবা কাঁকরার জন্য বিখ্যাত! যার দাম পড়বে মাত্র ১০০ টাকা!
যেভাবে যাবেন:
উত্তরা রুটের যেকোন গাড়ীতে উঠে নামবেন হাউজবিল্ডিং। সেখানে নামলেই দেখতে পাবেন নর্থ টাওয়ার ও মাসকট প্লাজা নামের দুইটি বড় বড় টাওয়ার। তার একটু সামনেই দেখতে পাবেন অনেকগুলো লেগুনা। যার একটাতে উঠে পড়বেন। লেগুনায় উঠতে না চাইলে নিতে পারেন রিকসা। লেগুনা আপনাকে নাময়ে দিবে একেবারে দিয়াবাড়ী বটতলায়। ভাড়া রাখবে ২০ টাকা।