Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

ত্রিপুরা



ত্রিপুরায় বেড়াতে গেলে খুঁজে পাবেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস। ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গাতেই গড়ে উঠেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ছিল মেলাঘরে।
তবে শুধু ইতিহাস অনুসন্ধান নয়, ত্রিপুরার সৌন্দর্যও পর্যটকদের কাছে টানে। ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা। পরিবেশ-প্রকৃতি বাংলাদেশের সমতলভূমির মতোই, তবে আরেকটু ভেতরে ঢুকলেই গহিন অরণ্য। আছে ছোট ছোট পাহাড়, বিচিত্র জীবনধারার পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। গহিন বনে তৈরি হয়েছে ইকোপার্ক। রাজধানীর কাছেই আছে লেকের মাঝখানে মহারাজাদের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ। আরেকটু দূরে গেলে দেখা যাবে পাহাড়ের গায়ে পাথর কেটে তৈরি করা দেবীমূর্তি। ‘চির বসন্তকাল’ পাওয়া যাবে আরও দূরের জাম্পুই পাহাড়ে।
ঢাকা থেকে আগরতলার দূরত্ব মাত্র ৯০ কিলোমিটার। যাতায়াতও খুব সহজ এবং সস্তা। ট্রেনে বা বাসে চেপে প্রথমে আখাউড়া যেতে হবে। আখাউড়া নেমে স্কুটার বা রিকশা নিয়ে চলে যাবেন আখাউড়া স্থলবন্দর। ইমিগ্রেশন-কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবারও রিকশা নিয়ে মাত্র ২ থেকে ৩ কিলোমিটার দূরেই আগরতলা। ঢাকা থেকে আগরতলা সরাসরি বিআরটিসির বাসও চলে, তবে তা প্রায়ই বন্ধ থাকে। সব মিলিয়ে সকাল ৭টায় রওনা দিলে সকাল ১১টার মধ্যেই আগরতলা পৌঁছে যাবেন।
হোটেলে উঠে দুপুরের খাবার আর কিছুক্ষণ দিবানিদ্রার পর বিকেলে বের হয়ে পড়ুন আগরতলা শহর দেখতে। অবশ্যই দেখতে যাবেন অতীতের মহারাজাদের উজ্জয়নী প্রাসাদ, যা এখন বিধানসভা ভবন। শহরের উত্তরে নেহরু পার্কে কাটিয়ে আসতে পারেন কিছুক্ষণ। আবার দক্ষিণে ফুল আর সবুজে ছাওয়া রবীন্দ্র কাননে গিয়ে দেখে আসতে পারেন পুতুলনাচ।
পরদিন সকালে শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে রুদ্রসাগর লেকে নীরমহল প্রাসাদ দেখার পালা। শহর থেকে বাসেই যেতে পারবেন। নৌকায় লেক পাড়ি দিয়ে মাঝখানের প্রাসাদে যেতে হবে। মুঘল আর হিন্দু স্থাপত্যকলায় নির্মিত এক অনুপম সুন্দর এই প্রাসাদ। নীরমহল প্রাসাদ দেখে চলে যাবেন সেখান থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরের মেলাঘরে।
মেলাঘর থেকে ফিরে এসে সেদিনকার বিকেলটাও আগরতলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে কাটিয়ে দিন। পরদিন সকালে চলে যাবেন ‘চির বসন্তকালের জাম্পুই পাহাড়ে। জায়গাটা আগরতলা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে, মিজোরাম সীমান্তের কাছে। মেঘের সঙ্গে কোলাকুলি করতে করতে পৌঁছে যাবেন প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচু এই পাহাড়ে। পথে চারদিকে পড়বে কমলালেবুর গাছ।
জাম্পুই পাহাড়ের বৈশিষ্ট্য এর আবহাওয়া। সারা বছরই প্রায় বসন্তকালীন তাপমাত্রা, শীত-গ্রীষ্মের পার্থক্য খুব বেশি নয়। গ্রীষ্মে শুধু বৃষ্টি আর মেঘ। এই পাহাড়ে মূলত লুসাই উপজাতির বাস। জাম্পুই পাহাড়ে রাত কাটিয়ে আসতে পারেন, সেখানে আছে সরকারি মোটেল। স্থানীয় লুসাইদের কারও বাসাতেও থাকতে পারবেন ‘পেয়িং গেস্ট’ হয়ে।
আবারও আগরতলায় ফিরে এসে পরদিন প্রায় পৌনে দুইশ কিলোমিটার দূরের ঊনকুটি দেখতে যেতে পারেন। ট্রেনে বা বাসে কাইলাশহর জেলা সদর, সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের গায়ে পাথর খোদাই করে বানানো এই মন্দির। আগরতলা থেকে বেশি দূরে যেতে না চাইলে ২৫ কিলোমিটার দূরের সিপাহিজালা বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম দেখে আসতে পারেন। আরেকটু দূরে গোমতী অভয়ারণ্য। আর তৃষ্ণা অভয়ারণ্যের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
ফেরার পথে আগরতলা থেকে সকালে রওনা দিলে দুপুরেই পৌঁছে যাবেন ঢাকা।