Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Technology Image

ল্যাপটপের চার্জ সাশ্রয়ের কিছু সহজ কৌশল



তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে বর্তমানে কম্পিউটারের জায়গা প্রায় অনেকাংশেই দখল করে নিয়েছে বহনযোগ্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপ। ওজনে হালকা এবং স্টাইলিশ এই ডিভাইসটি মানুষের ভাবনা অনেক কমিয়ে দিলেও একটি ভাবনা কিন্তু রয়েই গেছে।

আপনি হয়তো ঠিকই ধরেছেন, ভাবনার বিষয়টি হচ্ছে ল্যাপটপের চার্জ। একটি ল্যাপটপে মোটামুটি ৩-৪ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যায়। তবে অত্যাধুনিক ফিচার এবং উন্নত ব্যাটারি সমৃদ্ধ কিছু ল্যাপটপ বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় যেগুলোতে ৮ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া সম্ভব।

তবে অধিকাংশ ল্যাপটপের ক্ষেত্রেই গড়ে ৩-৪ ঘন্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যায়। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে আরও কিছুটা সময় বাড়তি ব্যাকআপ পাওয়া যেতে পারে।

১. ল্যাপটপের ব্যাটারি সেভার মোড চালু করে নিন: বর্তমানে প্রায় সব ব্র্যান্ডের ল্যাপটপেই আছে ব্যাটারি সেভিং মোড। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ফিচারটি ‘ইকো মোড’ নামেও পরিচিত। এই ফিচারটি চালু থাকলে ল্যাপটপ নিজে থেকেই বেশ কিছু উপায় অবলম্বন করে যার মাধ্যমে চার্জ খরচ যথাসম্ভব কম হয়। এক্ষেত্রে ডিসপ্লে ব্রাইটনেস কম থাকে, অপ্রয়োজনীয় কম্পোনেন্টগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং ল্যাপটপের চালু থাকা প্রায় সব কম্পোনেন্টই খুব কম পরিমাণে চার্জ খরচ করে। ফলে চার্জ সাশ্রয় হয়।

২. অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস এবং পোর্ট বন্ধ রাখুন: ল্যাপটপের সাথে যুক্ত বাড়তি প্রতিটি অনুষঙ্গই চার্জ খরচ করে। এর মধ্যে আছে এক্সটার্নাল মাউস, কীবোর্ড কিংবা পোর্টেবল হার্ডডিস্কও। এছাড়া ওয়াইফাই কিংবা ব্লুটুথ বিপুল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চার্জ শেষ করে। গ্রাফিক্স প্রসেসিংয়ের জন্যও খরচ হয় অনেক চার্জ। আর তাই প্রয়োজন না হলে এসকল ডিভাইস খুলে রাখা এবং ওয়াইফাই, ব্লুটুথ বন্ধ রাখা উচিত।

ল্যাপটপের অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কম্পোনেন্ট কিংবা ডিভাইস বন্ধ করে রাখতে কন্ট্রোল প্যানেল থেকে যেতে হবে ডিভাইস ম্যানেজার-এ। সেখানে ক্যাটাগরি অনুসারে ডিভাইসগুলো ভাগ করে দেওয়া আছে। এই তালিকা থেকে অপ্রয়োজনীয় কম্পোনেন্টটি বন্ধ করে রাখা যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন দরকারি কোন ডিভাইস কিংবা কম্পোনেন্ট যেন বন্ধ না হয়ে যায়।

৩. সেটিংস পরিবর্তন: বর্তমানে অনেক ল্যাপটপের কীবোর্ডেই ব্যাকলাইট থাকে। তবে প্রয়োজন না থাকলে এই ব্যাকলাইট বন্ধ করে রাখলে চার্জ সাশ্রয় হবে। এর পাশাপাশি ডিসপ্লে ব্রাইটনেসও কমিয়ে রাখা উচিত। সম্পূর্ণ ব্রাইটনেসে ডিসপ্লে চালু রাখলে একদিকে যেমন চোখের উপর বাড়তি চাপ পড়ে, তেমনি ব্যাটারিও দ্রুত শেষ হয়। এছাড়া ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন কমিয়ে রাখলেও ব্যাটারির চার্জ সাশ্রয় হবে। ল্যাপটপের স্পিকার প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ করে রাখুন।

৪. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করে রাখুন: ল্যাপটপে এমন অনেক কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস চলতে থাকে যেগুলোর কোন প্রয়োজন পড়ে না। বরং এর মাধ্যমে ব্যাটারির চার্জ অনেকটাই ফুরিয়ে যায়। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে সিস্টেম ট্রে থেকে দেখে নিতে পারেন কোন অ্যাপটি আপনার আপাতত প্রয়োজন নেই। বাছাই করে এমন অ্যাপগুলো বন্ধ করে দিন। এছাড়া টাস্ক ম্যানেজারে গেলেও পাওয়া যাবে এমন অনেক অ্যাপস কিংবা সফটওয়্যার যেগুলো কোন কারণ ছাড়াই চলছে। বাছাই করে এ ধরণের সফটওয়্যারগুলো বন্ধ করে দিন।

৫. একবারে একটি প্রোগ্রাম: আমরা অনেকেই ল্যাপটপে মাল্টিটাস্কিং করে থাকি। এর ফলে ল্যাপটপের প্রসেসরে বাড়তি চাপ পড়ে এবং এর জন্য অনেক চার্জ প্রয়োজন হয়। আর তাই খুব বেশি দরকার না থাকলে একবারে একটির বেশি কাজ না করাই ভাল। এছাড়া অন্য কাজ করার সময় যদি গান শুনতে হয়, সেক্ষেত্রে অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের পরিবর্তে কম্পিউটার থেকে শোনা ভাল। কারণ এক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করার প্রয়োজন না হওয়ায় চার্জ সাশ্রয় হচ্ছে।

৬. ব্যাটারির যত্নআত্তি: নিয়মিত ব্যাটারির যত্ন নেওয়া উচিত। ল্যাপটপের ব্যাটারি রিমুভেবল হলে সেগুলো কিছুদিন পরপর খুলে পরিষ্কার করতে হবে। অনেকেই বলে থাকেন ব্যাটারি ৮০ ভাগের বেশি চার্জ দেওয়া ঠিক না কিংবা সবসময় চার্জার কানেক্ট করে রাখা উচিত না। তবে এসব ধারণা পুরনো প্রযুক্তির নিকেল আয়ন ব্যাটারির জন্য প্রযোজ্য ছিল। তবে বর্তমানে ব্যবহৃত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ক্ষেত্রে এই ধারণা ভুল। তবে কিছুদিন পর পর ব্যাটারি একেবারে খালি করে তারপর আবার চার্জ দেওয়া উচিত।

এর পাশাপাশি ল্যাপটপ সবসময় ঠাণ্ডা রাখার দিকে নজর দিতে হবে। কারণ অতিরিক্ত তাপের কারণে ব্যাটারি স্থায়িত্ব কমে যায়। তাই ল্যাপটপের ভেতরের গরম বাতাস যেন ঠিকঠাক বের হয়ে যেতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে ল্যাপটপ কুলার ব্যবহার করা যেতে পারে।