Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Sports Image

ক্রিকেটারদের আক্ষেপের কিছু গল্প



ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ার অর্জন আর শত রেকর্ডে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারাই আবার আক্ষেপে পোড়েন অল্পের জন্য একটা অনন্য অর্জন থেকে বঞ্চিত হওয়ার জন্য।

চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে যেমন সাকিব আল হাসান মাত্র ২ উইকেটের জন্য ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম অল রাউন্ডার হিসেবে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ২৫০ রান ও ২০ উইকেটর অনন্য কীর্তী থেকে বঞ্চিত হলেন। সেরকম কিছু আক্ষেপের গল্প প্রকাশ। 



স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যান:
ব্র্যাডম্যানের ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই গড় ছিল ১০০ এর উপরে। ক্যারিয়ারের শেষে গড় ১০০ এর উপরে রাখতে দরকার ছিল শুধু মাত্র ৪ রান। যে ব্যাটসম্যান ৫২ ম্যাচে ২৯ টা সেঞ্চুরী, ১২ টা ডাবল সেঞ্চুরী করেছে, সে ৪ রানও নিতে পারল না। হয়তো বিধাতা চেয়েছিল কিছুটা অপূর্ণতা থাক। কিন্তু তিনি এখনো সর্বকালের সেরা।



মাশরাফি বিণ মর্তুজা:
২০০৬ সালে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিল মাশরাফি। মাশরাফি মাত্র ২৭ ম্যাচেই ২০ গড়ে নিয়েছিল ৪৯ উইকেট। বছরের শেষ ম্যাচে ৫০ উইকেট পেতে হলে মাশরাফির দরকার ছিল মাত্র ৩ উইকেট। এমন একটা ম্যাচে ব্যাটিং-এ নেমে ব্যাট হাতে মাত্র ২৭ বলে ৫ ছক্কায় নিয়েছিলেন অপরাজিত ৫১ রান। কিন্তু তাঁর আসল কাজটা করতে হবে বোলিং-এ। বল হাতে ইনিংসের প্রথম ওভারের ৪ বলেই নিয়ে নিলেন ২ উইকেট। বাকি ৯ ওভারে আর মাত্র ১ টা উইকেট নিতে পারলেই হয়ে যেতেন ওয়ানডে ইতিহাসে ১ বছরে ৫০ উইকেট নেয়া ১৩ তম বোলার। ক্যাপ্টেন হাবিবুল বাশারও তাকে দিয়ে বল করাচ্ছিল। কিন্তু বাকি পুরো ৯ ওভার বোলিং করেও তিনি বাকি ১ উইকেট পেলেন না। হয়তো বিধাতা চেয়েছিল কিছুটা অপূর্ণতা থাক। কিন্তু তিনি এখনো বাংলাদেশের দেশসেরা পেসার।



শচিন টেন্ডূলকার:
২০১২ এশিয়া কাপে শচীন টেন্ডুলকার বাংলাদেশের বিপক্ষে করেছিলেন নিজের শততম সেঞ্চুরী। সেঞ্চুরীর সেঞ্চুরী ক্রিকেটে পরবর্তী আর কেউ করতে পারবে কিনা সন্দেহ। এমন একটা উচ্চতায় তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন যেটা শুধু মানুষ কল্পনাই করতে পারে। জীবনের এমন একটা মূহুর্তের দিন হয়তো তিনি অনেক ভালো ভাবেই উদযাপণ করতে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি ম্যাচটা বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে গিয়েছিলেন। হয়তো বিধাতা চেয়েছিল কিছুটা অপূর্ণতা থাক। কিন্তু শচীন ঠিকই সর্বকালের সেরাদের একজন।


সাকিব আল হাসান:
বর্তমান বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু ৩ মাস পরেই তিনি ফিরে এলেন। জিম্বাবুয়েকে প্রথম থেকেই ব্যাটে-বলে বিধ্বস্ত করতে লাগলেন। সিরিজের শেষ ম্যাচের ১ম দুই ইনিংস পর তাঁর রান ছিল ২৩৪ এবং উইকেট ১৮ টি। টেস্ট সিরিজে অলরাউন্ডার পারফরমেন্স হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয় ২৫০ রান এবং ২০ উইকেট। খুব কম ক্রিকেটাররাই ৫ বা ৬ ম্যাচের সিরিজে করতে পেরেছেন এই কীর্তি। সেখানে সাকিব আল হাসানের সামনে ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে মাত্র ৩ ম্যাচ সিরিজেই এই কীর্তি গড়ার হাতছানি। শেষ দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে দরকার ছিল মাত্র ১৬ রান আর বল হাতে ২ উইকেট। সবাই চিন্তায় ছিল ১৬ রান নিয়ে। কারণ সাকিব ২ উইকেট পাবে এটা অনেকেই ভেবে রেখেছিল। শেষ ইনিংসে ব্যাটিং-এ নেমে আউট হয়েছেন ১৭ রান করে, মানে টূর্ণামেন্টে তাঁর রান এখন ২৫১। সবাই খুব খুশি। এখন বল হাতে ২ উইকেট নেবার পালা। নিতে পারলেই ইতিহাস! কিন্তু না! সাকিব ১১ ওভার বল করেও কোন উইকেট নিতে পারলেন না। হয়তো বিধাতা চেয়েছিল কিছুটা অপূর্ণতা থাক। এরপরও সাকিব আল হাসান বর্তমান বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। এবং একদিন তিনি সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হবেন।

ক্রিকেট শুধু কিংবদন্তীদের সাথেই ছলনা করে। সাকিব আল হাসানও কিংবদন্তী হবার পথে। আজ একটা ইতিহাস সৃষ্টি হতে গিয়েও হয় নি। সাকিবের সামনে আরো অন্তত ১০ বছর আছে। ১০ বছরে সে আরো অনেক ইতিহাস সৃষ্টি করবে, মাঝে মাঝে ক্রিকেটও তাঁর সাথে ছলনা করবে। এটাই ক্রিকেট। জীবনের আরেক নাম।