Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Sports Image

২০১৫ সালের পাঁচ ব্যর্থ ক্রিকেটার



আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে ২০১৫ সালটি ছিল ঘটনাবহুল একটি বছর। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অনেক বড় বড় ক্রিকেটার অবসরের খাতায় তাদের নাম লিখিয়েছে।। এদের মধ্যে কেউ কেউ সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিদায় জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে আবার কেউ হয়তো ব্যর্থতার ভার নিয়ে ছেড়েছেন প্রিয় ক্রিকেট মাঠ।

বর্তমান ক্রিকেটে ব্যাস্ত শিডিউল ও দ্রুততার সাথে তাল মিলিয়ে মাঠে ভাল পারফর্মেন্স করতে হলে প্রতিভার সাথে সাথে দরকার সঠিক ফিটনেস ও ফর্ম। কিন্তু কয়েক গত বছর অনেক ক্রিকেটারকেই দেখা গেছে এই চাপ বইতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। আমাদের আজকের এই আয়োজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের এমনই পাঁচ ক্রিকেটারকে নিয়ে সাজানো হয়েছে।

৫. মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া)

সময়ই হয়তোবা পৃথিবীর একমাত্র জিনিস যা ধ্রুব। আপনি যাই করেন না কেন সময় তার নিজের গতিতেই এগিয়ে যাবে আর ভেবে অবাক হতে হয় যে কি করে সময়ের সাথে সাথে একসময়ের লিজেন্ডদেরও হয়ে যেতে হয় ধারহীন বার্ধক্যে জর্জরিত । অস্ট্রেলিয়া দলের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক এর একটি জ্বলন্ত উদাহরণ বলা চলে। অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও প্রবল মনবলের জন্য ক্রিকেট বিশ্বে বেশ খ্যাতি ছিল তার। অনেকেই বলে থাকেন ক্রিকেট থেকে তার অবসরটা একটু আগেই হয়ে গেছে। কিন্তু তার ধুকতে থাকা ফিটনেসের কারণে তিনি বহুদিন ধরেই খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এক প্রকার নিজের সাথে যুদ্ধই করেছেন বলা চলে।

লম্বা ইনজুরি এবং ফর্ম ক্ষরা এবছরের শুরু থেকেই বেশ আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরেছিল ক্লার্ককে। ফল স্বরুপ এবছর তার ব্যাটিং গড় এক লাফে নেমে গিয়েছিলো একেবারে তলানীতে। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০১৫ সালে মাত্র ২১৯ রান করতে পেরেছিলেন তিনি। আর এবছর তার ওডিআই গড় ছিল মাত্র ৩৬.৫০। বিশ্বকাপের আসরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা ৭৪ রানের ইনিংসটি ছিল তার এবছরের একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ইনিংস।

সকলেই ভেবেছিল অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপের শিরোপা জেতানোর পর হয়তো ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন ক্লার্ক। কিন্তু ইনজুরির বাঁধা থাকা স্বত্বেও টেস্ট ক্রিকেট খেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ক্লার্ক। কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে এ্যাশেজ সিরিজে তিনি এবং তার নেতৃত্বে অসি দল ইংলিশ বোলারদের সামনে একেবারেই দাড়াতে পারেনি। ফলে বাঁজে ভাবে ইংলিশদের কাছে হারতে হয় অসিদের। আর এরই সাথেই ক্লার্কও নিজের ক্রিকেট জীবনের ইতি টানেন। ২০১৫ সালে টেস্ট ক্রিকেটে ক্লার্কের ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ২১.১০।

৪. শেন ওয়াটসন (অস্ট্রেলিয়া)

এবছরের ব্যর্থ ক্রিকেটারদের তালিকার চতুর্থ অবস্থানে আছেন আরেক অসি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। ব্যাট এবং বল হাতে অস্ট্রেলিয়া দলের দীর্ঘদিনের এই নির্ভরশীল ক্রিকেটারের ফর্মে এবছরের শুরু থেকেই দেখা গেছে নিম্নগামী প্রবণতা।

এবছর একদিনের ক্রিকেটে ৩৭.৩৩ গড়ে মাত্র ৩৩৬ রান করতে পেরেছেন ওয়াটসন। আর বল হাতে তিনি নিয়েছেন মাত্র ৪টি উইকেট । অন্যদিকে এবছরের টেস্ট ক্রিকেটে তার ফর্ম ছিল আরো বাঁজে। ৩০.৩৩ গড়ে এবছর টেস্টে তিনি রান পেয়েছেন মাত্র ১৮২ আর উইকেট পেয়েছেন মাত্র ৪টি।

এ্যাশেজের ব্যর্থতার পরই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ওয়াটসন। যদিও তিনি একদিনের ক্রিকেটে অসিদের ইউটিলিটি প্লেয়ার হিসেবে আছেন তবে ওয়াটসনের জন্য যে সময় বেশ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে তা হয়তো তিনি নিজেও বুঝতে পেরেছেন এতদিনে। অসি দলে আবার নিয়মিত সুযোগ পেতে হলে বড় রান করা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই।

নিয়মিত ইনজুরি এবং বলের গতির দ্রুত হ্রাস একজন বোলার হিসেবে দলে ওয়াটসনের জায়গা করে নেয়াটা অনেক আগেই অসম্ভব করে দিয়েছে। এখন একজন পিওর ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে খেলাটা তার বাঁজে ফর্মের কারনে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নানা মহলে।

৩. হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ব্যর্থ ক্রিকেটারদের এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার হাশিম আমলা। হাশিম আমলার ভাল দিনগুলোতে তার ব্যাটং দেখা ছিল বেশ তৃপ্তিদায়ক। তার একের পর এক ক্লাসিক্যাল শটের মাধ্যমে খেলা ইনিংসগুলো দেখে তখন মনে হত যেন পৃথিবীর কোন বোলারের পক্ষে আমলাকে পরাস্থ করার মত বল করা সম্ভব নয়।

একদিনের ক্রিকেটে ৫০.৫৭ গড়ে ১০৬২ রান নিয়ে বছরটা মোটামুটি ভালোই ছিল আমলার। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে একেবারেই চেনার উপায় নেই তাকে। রান ক্ষরায় ভুগছেন তিনি অনেকদিন ধরেই। টেস্ট ম্যাচে এবছর মাত্র ২৭.৭৭ গড়ে সর্বসাকুল্যে মাত্র ২৩২ রান করেছেন আমলা।

সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে এবং তার আগে বাংলাদেশ সফরে স্পিন বল খেলতে তার অপারগতাটা বেশ ভালোভাবেই চোখে পড়েছে। ফলে এই দুই সিরিজে রান পেতে পুরোপুরি ব্যার্থ হয়েছেন আমলা। আর আমলার এই বাঁজে ফর্মের প্রভাব পড়েছে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা দলেই।

২. মিচেল জনসন (অস্ট্রেলিয়া)

তৃতীয় অসি ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের এই ব্যর্থ খেলোয়াড়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন সদ্য অবসরে যাওয়া অসি ফাস্ট বোলার মিচেল জনসন। এবছরের এ্যাশেজ সিরিজের আগে অনেকেই বলেছিল জনসনের নেতৃত্বে অসি ফাস্ট বোলিং সামাল দিতে ইংলিশদের বেশ বেগ পেতে হতে পারে। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে ঠিক তার উল্টো। অসিদের ধারহীন বোলিং অবলীলায় খেলেছে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ফলাফল, বাঁজেভাবে এ্যাশেজ হার এবং মিচেল জনসনের খেলা থেকে অবসর ঘোষণা।

এবছরের পুরোটা জুড়েই উইকেট শিকারে ব্যর্থ ছিলেন জনসন। এবছর টেস্টে মাত্র ৩০টি এবং একদিনের ক্রিকেটে মাত্র ১৮টি উইকেট শিকার করতে সক্ষম হয়েছেন জনসন।

১. বিরাট কোহলি (ভারত)

তালিকায় প্রথমে রয়েছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি।একটা সময় ছিল যখন বিরাট কোহলির মাঠে নামা মানেই একটি সেঞ্চুরি । তখন দেখে মনে হতো একটা সেঞ্চুরি করা হয়তো তার জন্য বাঁ হাতের ব্যপার। তার এই ছোট্ট ক্যারিয়ারে ইতোমধ্যেই তিনি ২৩ সেঞ্চুরি এবং ৬০০০ রান সংগ্রহ করে ফেলেছেন যা ঈঙ্গিত করে যে সামনের বছরগুলোতে তিনি ক্রিকেটের গ্রেট ব্যাটসম্যানদের একজন হতে যাচ্ছেন নি:সন্দেহে।

তবে, তার এবছরের পারফর্মেন্সের দিকে তাকালে মনে হবে যেন এ যেন কোহলি নয় কোহলির ছায়ায় অন্য কেউ খেলছেন। এবছরের গ্রীষ্মে ইংল্যান্ড সফরের পর থেকেই কোহলির বাঁজে ফর্মের শুরু হয়েছে এবং এখনো তিনি তার আগে ফর্ম ফিরে পাননি।

একদিনের ক্রিকেটে ৩৬.৬৪ গড়ে এবছর কোহলি সংগ্রহ করেছেন মাত্র ৬২৩ রান। অন্যদিকে, টেস্টে ৪২.৬৬ গড়ে এবছর তিনি করেছেন মাত্র ৬৪০ রান।