Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Entertainment Image

রহস্যে ঘেরা উত্তম-সুচিত্রার প্রেম



উত্তম সুচিত্রা নেই কিন্তু তাদের প্রেম কিংবদন্তী হয়ে আছে আজো। উত্তম সুচিত্রার ভক্তদের কেউ কেউ এখনো বিশ্বাস করেন গোপনে বিয়ে করেছিলেন এই কিংবদন্তী জুটি। আসলেই কি তাই? আসলেই কি এই জুটির মধ্যে সত্যিকার প্রেমের রসায়ন ছিলো। চলুন ঘেটে দেখা যাক উত্তম সুচিত্রার খুঁটিনাটি।
১৯৫৩ সালে মুক্তি পেয়েছিলো উত্তম-সুচিত্রা জুটির প্রথম ছবি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। প্রথম ছবিতেই হিট উত্তম সুচিত্রা জুটি। তারপর আর যায় কোথায়? প্রযোজক পরিচালকরা ভিড় জমালেন উত্তম সুচিত্রার কাছেই।

একর পর এক ছবি করার সুবাদে উত্তম-সুচিত্রার সখ্যতা বাড়লো। কিন্তু তাদের এই সখ্যতা কাল হয়ে উঠলো সুচিত্রার স্বামী দিবানাথ সেনের কাছে। আর তা আঁচ করতে পেরে ১৯৫৪ সালেই দীবানাথ সুচিত্রাকে চাপ দিলেন অভিনয় ছেড়ে দিতে। কিন্তু যার রক্তে তখন অভিনয় মিশে গেছে সে কি আর অভিনয় ছাড়ে! স্বামীর বৈরি মনোভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেই উত্তমের সঙ্গে অভিনয় করে গেলেন সুচিত্রা সেন।

আর হ্যা, স্বামী দীবানাথের মতো ঐ একই বছর উত্তম সুচিত্রার ভক্তরাও ভাবতে লাগলো বাস্তবেই উত্তম সুচিত্রা প্রেমিক যুগল। কারণ ঐ একই বছর মুক্তি পায় তাদের অভিনীত ৬টি ছবি। জীবন ঘনিষ্ঠ অভিনয়ই ভক্তদের ভাবতে সহায়তা করেছিল উত্তম সুচিত্রার প্রেমের গুঞ্জনের খবর। যে মিথের জন্ম হয়েছিল আজ থেকে ৬১ বছর আগে সেই মিথের অবসান শেষ হয় নি আজো।

তবে এই মিথের আগুনটা উস্কে দেওয়ার ব্যাপারে সুচিত্রার ভূমিকাও কম ছিলো না। ওই বছরেই মুক্তি পাওয়া ‘অগ্নি পরীক্ষা’ ছবির পোস্টারে সুচিত্রার স্বাক্ষরসহ লেখা ছিলো ‘আমাদের প্রণয়ের স্বাক্ষী হলো অগ্নি পরীক্ষা’। পোস্টারের এই লেখা দেখে অজোরে কেঁদেছিলেন উত্তম কুমারের স্ত্রী গৌরী দেবী। যার প্রভাব পড়ে সুচিত্রার দাম্পত্য জীবনেও। সে প্রভাবের পরিমাণ কেমন ছিলো তা একটি গল্প বললেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

একদিন সুচিত্রা সেনের বালিগঞ্জের বাসায় এক বিশাল পার্টির আয়োজন করা হয়। পার্টিতে উত্তম কুমারের প্রিয় ব্যান্ড ব্ল্যাক ডগ’ হুইস্কিও ছিলো। উত্তমের স্ত্রী, সুচিত্রার স্বামীসহ প্রযোজকরাও ছিলেন সেই পার্টিতে।

হঠাৎ মধ্যরাতে সবার অনুরোধে নাচতে হলো উত্তম সুচিত্রাকে। উত্তম কুমার সুচিত্রার কোমরে হাত দিয়ে খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে নাচছিলেন। আর এ দৃশ্য দেখে সইতে পারেন নি সুচিত্রার স্বামী দিবানাথ। ছুরি হাতে ছুটে গেলেন উত্তম কুমারের দিকে। পার্টি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল। প্রাণ বাঁচানোর জন্য দিগ্বিদিক ছুট দিলেন উত্তম কুমার। কিন্তু রেহাই পেলেন না। ধরা পড়ে গেলেন দীবানাথের হাতে। উত্তম হাতজোড় করে প্রাণ ভিক্ষা চাইছিলেন দিবানাথের কাছে। আর দিবানাথ বলছিলো, 'উত্তম আই উইল কিল ইউ', 'আই উইল কিল ইউ'। শেষে দিবানাথকে থামান উত্তমের স্ত্রী গৌরী দেবী। ছাড়া পেয়েই উত্তম কুমার দৌড়ে পালালেন। একেবারে ২ কি.মি. দৌড়ে নিজের বাড়িতে গিয়ে সেদিন থেমেছিলেন উত্তম।

এ ঘটনার কিছুদিন পরে সুচিত্রা স্বামী, শ্বশুরের বাড়ি ছেড়ে উঠেন নিজের ভাড়া বাসায়।
আর এরপর থেকে দাম্পত্য কলহে জড়িয়ে পড়েন উত্তমও। রাত করে বাড়ি ফিরলেই স্ত্রী গৌরির জেরার মুখে পড়তে হতো উত্তমকে।
জানা যায়, সুচিত্রাকে সবাই মিসেস সেন বলে ডাকলেও উত্তম সুচিত্রাকে তার আসল নাম ‘রমা’ বলেই ডাকত। আর সুচিত্রা উত্তমকে ডাকতো ‘উতো’ বলে।
সুচিত্রা উত্তমের প্রেমের গুঞ্জনের কারণেই মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন সুচিত্রার স্বামী দিবানাথ সেন। আর প্রচুর মদ্যপানের ফলেই মৃত্যু হয়েছিলো দিবানাথের।

এতসব ঘটনার জন্ম যাদের প্রেমকে ঘিরে তাদের বিয়ে কি সত্যিই হয়েছিলো। হয় তো অনেকেই বলবেন মৃত্যুর আগে অসুস্থ সুচিত্রা উত্তমের কেবিনেই চিকিৎসা নিয়েছিলেন। সেটা তাদের প্রেমের গভীরতা প্রমাণ করলেও তাদের বিয়ে হয়েছিলো কি না তা আজো রহস্যই রয়ে গেল।