অস্কার বিজয়ী নির্মাতা ডেভিস গুগেনহেমের পরিচালনায় অবশেষে মুক্তি পেলো শান্তিতে নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানি কিশোরী মালালা ইউসুফ জায়ের উপর নির্মিত ডকু-ফিল্ম ‘হি নেমড মি মালালা’-এর ট্রেলার।
জানা গেছে, মালালার সাথে অন্তত ১৮ মাস ঘুরে ঘুরে গুগেনহেম নির্মাণ করেছেন এই ডকু-ফিল্মটি। যেখানে পাকিস্তানি এক টিন এজ মেয়ের কথা বলা হয়েছে। যার নাম মালালা ইউসুফ। মালালার পুরো জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে ‘হি নেমড মি মালালা’-নামের এই তথ্যচিত্রটিতে।
ট্রেলারটিতে মালালার সেই স্কুল, শিক্ষক-ছাত্র এবং তার বাবা, মা,ভাই-বোনদেরও দেখা যায়। আর রয়েছে মালালার বিখ্যাত উক্তি, ‘একজন শিশু, একজন শিক্ষক, একটি বই এবং কলম-ই পারে পৃথিবীটাকে পরিবর্তন করে দিতে।’
মালালার উপর তথ্যচিত্রটি আগামী ২ অক্টোবর আমেরিকায় রিলিজ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগেও বেশ ক’টি তথ্য চিত্র নির্মাণ হয়েছে পাকিস্তানি প্রভাবশালী কিশোরী মালালাকে নিয়ে। যিনি মাত্র এগারো বছর বয়স থেকে ‘বিবিসি’র জন্য লিখতেন। কথা বলতেন পাকিস্তানে নারী শিক্ষার অধিকার নিয়ে। ফলে একদিন ক্ষেপে যান প্রতিক্রিয়াশীলরা। তালেবান সন্ত্রাসীদের ভারি অস্ত্রের টার্গেট হোন মালালা। ২০১২ সালে সত্যি সত্যি স্কুলের সামনেই তালেবান সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হোন ১৪ বছর বয়সী মালালা ও তার দুই বান্ধবী। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তারা। প্রকৃতপক্ষে, মালালার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তার পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করে। এর পরেই মূলত আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পান এই তরুণী। এখন তিনি নারী অধিকার আর মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছেন।
এতো অল্প বয়সে স্বীকৃতিও কম জুটেনি তার। তার জীবনের সেরা স্বীকৃতি ‘নোবেল’সবচেয়ে কম বয়েসী হিসেবে ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন তিনি। ডয়চে ভেলে ২০১৩ সালে মালালাকে 'দ্য মোস্ট ফেমাস টিনেজার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড' নির্বাচন করেন। জাতিসংঘের গ্লোবাল শিক্ষাকার্যক্রমের দূত গর্ডন ব্রাউন আই এম মালালা নামে একটি জাতিসংঘের পিটিশন চালু করেন এবং এতে দাবি করা হয় সারাবিশ্বের সকল শিশুরা ২০১৫ সালের মধ্যে বিদ্যালয়ে যাবে। এ পিটিশন পাকিস্তানের রাইট টু এডুকেশন বিল তৈরিতে বেশ সহায়তা করে। ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল টাইম ম্যাগাজিন ১০০ সেরা ইনফ্ল্রয়েনশিয়াল পিপল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড তালিকায় মালালাকে নির্বাচিত করে। এছাড়া তিনি পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় তরুন শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৩ সালের ১২ জুলাই মালালা জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে শিক্ষা সম্প্রসারন বিষয়ে বক্তব্য দেন এবং একই বছরের সেপ্টেম্বরে অফিসিয়ালি লাইব্রেরি অব ব্রিমিংহাম চালু করেন। ২০১৩ সালে মালালা শাখারব পুরস্কার জিতেন। একই বছরের ১৬ অক্টোবর মালালাকে কানাডা সরকার কানাডার সম্মানিত নাগরিক হিসেবে মালালাকে নির্বাচন করেন এবং বিষয়টি সংসদে পাশ হয়। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সুইডেনের ওয়ার্ল্ড চিলড্রেন প্রাইজের জন্য নির্বাচিত হন। একই বছরের ১৫ মে মালালা ইউনিভার্সিটি অব কিংস কলেজ থেকে সম্মানিত ডক্টরেট ফেলোশিপ পান।