Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

দু’শ বছরের পুরনো কাজির গলি মসজিদের স্মৃতি চিহ্ন



সংস্কারের অভাবে শেরপুর পৌরসভার কসবা এলাকার দু’শ বছরের পুরনো কাজির গলি মসজিদটির শেষ স্মৃতি চিহ্ন আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।

যদিও স্থানীয়রা মসজিদটিকে এবাদত খানা হিসেবে যুগযুগ ধরে জেনে আসছেন । মসজিদটির গাঁথুনি ও নির্মাণ কৌশল দেখে ধারনা করা হয় বৃটিশ আমলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল । তবে মসজিদটি সম্পর্কে সঠিক ধারনা কেউই দিতে পারেনি ।

মসজিদের মূল ভবনটি প্রায় ৩ শতক জমির উপর ১২ ফুট দৈর্ঘ এবং ১২ ফুট প্রস্থে নির্মিত হয়েছিল। এর দেয়ালের পুরু ২৫ ইঞ্চি। মূল ভবনের চারপাশে একটি সীমানা প্রাচীর ছিল বলে আশপাশের কিছু ধ্বংসবাশেষ দেখে এবং এলাকাবাসী সূত্রে ধারনা করা হয়। এই সীমানাসহ মসজিদটির মূল জমির পরিমান ছিল প্রায় ৫০ শতক। কালের আবর্তে ওই জমি বিভিন্নভাবে বেহাত অথবা মুল মালিক সূত্রে কিনে আশপাশের অনেকই বাড়ী-ঘর নির্মাণ করেছেন। কেবলমাত্র মসজিদের মূল ভবনের ধ্বংসাবশেষটুকু এখন শেষ চিহ্ন হিসেবে রয়েছে।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যাক্তি মোজাফর মিয়া ওরফে মোজা খলিফা (৭০) বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখছি এখানে এবাদতখানাটি এভাবেই ভংগুর অবস্থায় পড়ে থাকতে। মাঝখানে প্রায় ৪০ বছর থেকে ৫০ বছর পূর্বে এলাকাবাসী মসজিদটির সামান্য সংস্কার করে নিয়মিত নামাজ পড়তেন । আমিও পড়তাম। কিন্তু পরবর্তিতে এর ছাদ ধ্বসে পড়ার পর এখানে আর কেউই নামাজ পড়েন নি। ফলে এখানে এখন বিভিন্ন লতা-পাতা আর পরগাছায় ভরে গেছে। মসজিদটি কখন বা কে তৈরী করেছিলেন তা এলাকার কেউই বলতে পারেন না। তবে গত ২০ বছর পূর্বে মারা গেছেন জনৈক ব্যাক্তির মুখে শুনেছিলাম,বৃটিশ আমলে এক কামেল ব্যাক্তি এবাদতের জন্য এ ঘরটি তৈরী করেছিলেন। এখানে এক সঙ্গে দুই কাতারে ১০ জনের বেশী নামাজ পড়া যেতো না। এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটির দুই পাশে দুটি এবং সামনে একটি দরজা ছিল।

স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি সূত্রে জানা গেছে, কথিত আছে এ মসজিদের ধ্বংসাবশেষ থেকে যদি কোন ব্যাক্তি ইট সরানো বা মাটি খোড়ার চেষ্টা করেন তবে পরদিন তিনি স্বপ্ন দেখেন এবং তার ক্ষতি হয়। এ থেকেই ওই জমির সর্বশেষ মালিক আশপাশের জমিতে ঘর-বাড়ী এবং চাষাবাদ করলেও মসজিদের মূল ভবনটির গায়ে আর হাত দেননি। ফলে মসজিদটির গায়ে আগাছা আর পরগাছায় ঢেকে যায় ।

তবে ওই মসজিদের কয়েক শ’ গজ দুরে হযরত শাহ কামালের (রা.) মাজার থাকায় ওই মাজারে আগত বিভিন্ন পাগল ও সাধু-সন্যাসিরা মাঝেমধ্যে এখানে এসে নামাজ আদায় করেন। আবার কেউ কেউ মসজিদের ভিতর মোববাতি ও আগর বাতি জ্বালিয়ে আসেন। কেউ বা আবার মাঝে মধ্যে এখানে এসে সিন্নি করেন। স্থানীয়দের দাবী, সরকার থেকে এই মসজিদটির সংরক্ষণ করা উচিত। তা না হলে কালের সাক্ষ্য বহনকারী এই মসজিদ বা ইবাদত খানাটি হারিয়ে যাবে। সেসঙ্গে হারিয়ে যাবে পীর-ফকির, দরবেশ-আউলিয়া আর কামেল লোকদের স্মৃতি বিজরিত শেরপুরের একটি ইতিহাস।