Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

স্মৃতি বিজরিত জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ



মিরপুরের বেনারশি পল্লী পার হয়ে ভেতরের দিকে এগুলে দেখা মিলবে জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠের (জাদুঘর)। কসাইখানা জাদুঘর নামেও এটির বেশ পরিচিতি রয়েছে। এখানে ২০ হাজারের বেশি বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি হানাহার, অবাঙালি বিহারি আর তাদের দোসররা মিলে এই হত্যাকাণ্ড করে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে এই জায়গায় হত্যা করা হতো।


দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই বধ্যভূমি অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। এরপর ১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর এই বধ্যভূমির পরিত্যক্ত পাম্পহাউসটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় খনন কাজ শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ট্রাস্ট (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর)। পরবর্তীতে শহীদদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পাকিস্তানি ও তাদের দোসরদের নারকীয়তা স্বাধীন দেশের নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ট্রাস্ট এই উদ্যোগে সেখানে গড়ে তোলা হয় জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ। বধ্যভূমি থেকে ৭০টি মাথার খুলি, ৫৩৯২টি অস্থিখণ্ডসহ শহীদদের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন উদ্ধার করা হয়।

এ স্মৃতিপীঠের আয়তন খুবই সামান্য। ছোট্ট এই জায়গায়ই মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিগুলোকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকারভাবে। ভেতরে প্রবেশ করতেই এক টুকরো সবুজ মাঠ স্বাগত জানাবে। এর চারপাশেই স্বচ্ছ কাচের বাকসোর ভেতরে মাটির সরায় সংরক্ষণ করা আছে বিভিন্ন বধ্যভূমির মাটি। একটি ছোট ঘরের ভেতরে বধ্যভূমির কূপটি স্বচ্ছ কাচে ঘেরা রয়েছে। ছোট ছোট ঘরের ভেতরে সংরক্ষিত রয়েছে শহীদদের স্মৃতি সংবলিত বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন।


বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে রয়েছে শিল্পী রফিকুন নবীর দেয়ালচিত্র। এতে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার শহীদদের কঙ্কাল-করোটি প্রতীকীভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠের পরিকল্পনায় ছিলেন স্থপতি রবিউল হুসাইন।

জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার ব্যয় সংগ্রহের জন্য ব্যতিক্রমী এক প্রয়াস দেখা গেছে। জল্লাদখানার ফটকেই রয়েছে একটি আবেদনপত্র। দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে তাতে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবং এখানেই রয়েছে একটি কাচে ঘেরা তালাবদ্ধ বাকসো। এতে যে কেউ ইচ্ছে করলে সহযোগিতা হিসেবে চাঁদা দিতে পারবেন। যা দিয়ে এ স্মৃতিপীঠের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার খরচ মেটানো হয়।

মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে পল্লবীর দিকে মিনিট দশেক হাঁটলেই বেনারশি পল্লীর দেখা মিলবে। বেনারশি পল্লীর ভেতরের রাস্তা ধরে আরও কয়েক মিনিট হাঁটলেই (বেনারশি পল্লীর শেষ মাথায়) জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠের দেখা মিলবে।