চোখের নিচে কালো দাগ আজকাল তরুণ-তরুণী এমনকি অনেক মধ্যবয়স্ক নারী-পুরুষের মুখের সৌন্দর্যের ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে৷ পুরো মুখটি অসম্ভব সুন্দর অথচ চোখের নীচে কালোদাগ- অনেকেই এটা মানতে পারেন না৷ তখন ছুটে যান কোন ত্বক বিশেষজ্ঞ বা বিউটিশিয়ানের কাছে৷ অনেকে আবার প্রশ্ন করেন চোখের নীচের কালোদাগের আসলেই কোন চিকিত্সা আছে কিনা?
বেশিরভাগ সময়ই আমরা আমাদের চোখের নিচের কালি ঢাকার জন্য কনসিলার, ফাউণ্ডেশন কিনে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করি, কিন্তু কখনো কি আমরা আমাদের চোখের নিচে কেন কালি জমে তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি? আমাদের চোখের নিচের ত্বক অনেক বেশি স্পর্শকাতর এবং এর নিচে অনেক ছোট ছোট রক্তনালী বয়ে গেছে যারা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে এবং চোখের নিচের ত্বক কালো হতে থাকে। চোখের নিচের অংশে ফ্লুইড জমা হতে থাকার কারণে চোখের নিচটা ফুলে যেতে থাকে এবং চোখের নিচে কালি পড়ে। এর পিছনে অনেকগুলো কারণ আছে।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে কেবল ঘুম না হওয়া, কম্পিউটারের মনিটরের সামনে বসে থাকাই চোখের নিচে কালি পড়া কিংবা চোখ ফুলে যাওয়ার প্রাথমিক কারণ নয়। বরং নাসারন্ধ্রিতে সমস্যা, বংশগত সমস্যা, এলার্জি, মূত্রগ্রন্থিতে সমস্যা কিংবা রক্ত চলাচলে সমস্যা থাকার কারণেও চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে। মূলত চোখের নিচের কালি হওয়ার পিছনে তিনটি কারণ থাকে।
মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা
চোখের নিচে কালি পড়ার খুব প্রচলিত একটি কারণ হলো কোন কারণে খুব বেশি চাপে থাকা বা কোন ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা।
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
কেউ যদি দিনে কমপক্ষে আট ঘণ্টা না ঘুমায়, তাহলে তার চোখের নিচে কালি পড়ার সম্ভাবনা থাকে।আট ঘন্টা সম্ভব না হলে অন্ত ছয় ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
পানিশূন্যতা
শরীর থেকে অনেক বেশি মাত্রায় পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক শুষ্ক এবং শরীর দূর্বল হয়ে যায়। এর ফলে চোখের নিচে কালি পড়ে। এখন গরম পরে গেছে, শরীর থেকে তাই ঘামও বের হয় প্রচুর। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেয়ে এর মাত্রাটা ব্যালেন্স করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চললেই আপনার চোখের নিচে কালি পরবে না-
-সকালে ঘুম থেকে উঠেই চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিলে অনেক উপকার পাওয়া যায় এবং এটি চোখের নিচের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
-চোখের নীচে কালোদাগ দুর করতে প্রচুর পরিমাণ পানি পান, সবুজ শাক-সবজি আহার এবং নিয়ম মাফিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা ও মানসিক চাপ কমাতে হবে৷
-মাল্টিভিটামিন খেলে, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম খাওয়াও চোখের নিচে কালি দূর করতে সাহায্য করে।
-বিভিন্ন ধরণের এলার্জির ওষুধ নাসারন্ধ্রির সমস্যা দূর করতে পারে।
-লবণ কম খেলে এবং ধূমপান ছেড়ে দিলে রক্ত চলাচল বাড়ে।
-যদি আপনার চোখ কচলানোর অভ্যাস থাকে, তাহলে সেটি বাদ দিন। কেননা এটি আপনার ত্বকের নিচের রক্ত কণাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কিন্তু যদি আপনার চোখের নিচে কালি পরেই যায় এরমধ্যে তাই আপনি কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে চোখের নিচের কালি দূর করতে পারেন –
•কয়েক টুকরা শসা এবং আলু নিন। ঠাণ্ডা পানিতে এগুলো এমনভাবে পেস্ট করে নিন যাতে একটি তরল মিশ্রণ তৈরি হয়। কিছু তুলা এই মিশ্রণে ভিজিয়ে নিন এবং চোখের নিচে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এতে আপনার চোখের নিচের কালো দাগ কমে যাবে।
• চোখের নিচে যেখানে কালি পড়েছে, সেখানে আমলকী তেল লাগিয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন। তাহলে চোখের নিচের কালি কমে যাবে বলে আশা করা যায়।