এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ রাজধানী হিসেবে কুয়ালালামপুর ইতিমধ্যেই বিশ্ববাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকেই এখানে বসছে বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া উৎসব। কেবল ক্রীড়া উৎসবই নয়,ভ্রমণকারীদের জন্য মালেশিয়াকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সমুদ্রপাড়ের এই দ্বীপ দেশটিতে দর্শনার্থীগণ অন্যরকম আনন্দ খুঁজে পাবেন।
দেখার স্থানের মধ্যে রাজধানী কুয়ালালামপুরে রয়েছে-চেন সি সো ইয়েন হাউস,মেনারা অলিম্পিয়া,ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি,পুত্রজায়া ব্রীজ,রয়্যাল প্যালেস,এগ্রিকালচারাল পার্ক,ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন,অর্কিড পার্ক,বার্ড পার্ক প্রভৃতি। তবে সিটি ট্যুরের বাইরে আপনার যদি অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছে জাগে সেখান থেকে যেতে পারেন কুচিং শহরের বোর্নিও দ্বীপে। এখানে দেখবেন বোনিংও জঙ্গলের লং হাউস। গভীর জঙ্গলের মধ্যিখানে অবকা করা একটা গ্রাম সাজিয়ে বসে রয়েছে এর অধিবাসীরা। কুচিং শহরটাও দেখার মত। শহরে রয়েছে মিউজিয়াম,প্যালেস,ফোর্ট প্রভৃতি দর্শনাীয় স্থান। নদীতে নৌকোবিহারও করতে পারেন। জঙ্গলে যাবার পূর্বে অবশ্যই আপনার এজেন্টকে জানিয়ে রাখতে হবে যে জঙ্গলে যেতে চাচ্ছেন। তাছাড়া পোশাক, টর্চ, ওষুধপত্র, পোকামাকড় বিতাড়ক মলম ইত্যাদি মনে করে সঙ্গে নিন।
জঙ্গলে যাবার যাত্রাপাথে বাস যখন সারি সারি রাবার বাগানের মধ্যে থামবে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে অনায়াসেই। তারপর নদীতীর দিয়ে গিয়ে পৌঁছবেন নদীতে আপনার জন্য অপেক্ষারত সরু মোটরচালিত নৌকায়। এই নৌকাই ক্র্যাং নদীতে ভেসে ভেসে একসময় গভীর জঙ্গলে পৌঁছবে আপনাকে নিয়ে। এই জঙ্গলের মাঝে চোখে পড়বে লং হাউস,দীর্ঘ বাঁশের ঘর,বিশাল বাঁশের মাচা,কুটির ইত্যাদি। এখানে মাচার উপর বাঁশের তৈরি দীর্ঘ কুটিরকেই লং হাউস বলে। দীর্ঘ মই বেয়ে তাতে চড়া যায়। এই বনে এলে নিশ্চিত অরণ্য মানুষের এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা সঞ্চার করতে পারবেন।
কুয়ালালামপুর শহুরে দর্শনীয় স্থানের কোনো অভাব নেই। দেখতে পারেন মালেশিয় সংস্কৃতি,হস্তশিল্প,নানা নিদর্শন। এছাড়াও রয়েছে কর্মাশিয়াল সেন্টার,ইন্ডিপেণ্ডেন্ট স্কোয়ার,কিংস প্যালেস,ন্যাশনাল মিউজিয়াম,ইসলামিক আর্ট মিউজিয়াম,হাউস অব পালার্মেন্ট এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ স্থাপনা টুইন টাওয়ার।
এখান থেকে সহজেই যেতে পারেন সমুদ্র পৃৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার মিটার উচুঁ বাটু কেভ দর্শনে। এটিতে উঠতে হলে আপনাকে পাহাড়ের উপর প্রায় ২৭০ খানা সিঁড়ি ভাঙতে হবে। উপরে উঠেই দেখতে পাবেন একটি গুহার নীচে আরেকটা অবাক করা গুহা যেখানে সারি সারি চিত্রকলা সাজানো রয়েছে। এছাড়াও থিম পার্কে প্রবেশ করে বিভিন্ন রাইডে আরোহণ করেও আনন্দ নিতে পারবেন।
সিটি ট্যুর
সিটি ট্যুরে গিয়ে যেসব জিনিষ চাক্ষুস করতে পারবেন সেগুলো হলো-হাউস অব পার্লামেন্ট,ইস্তানা বুদ্ধ,ইস্তানা নেগারা,কুয়ালালামপুর টাওয়ার,মিউজিয়াম নেগারা,পুত্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার,ন্যাশনাল সায়েন্স সিটি,থিয়েন হউ টেম্পল ইত্যাদি।
কীভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে থাই এয়ারওয়েজ,এয়ার ইণ্ডিয়ার প্লেনে চড়ে সরাসরি ব্যাঙ্কক চলে যাবেন। ব্যাঙ্কক থেকে পৌঁছাতে হবে কুয়ালালামপুর। তবে দেশেই এখন বিভিন্ন বেসরকারি ট্রাভেল এজেন্সি তাদের প্যাকেজ ট্যুরের আওতায় অতি অল্প খরচে আপনাকে মালয়েশিয়া ঘুরে আসার সুযোগ দিচ্ছে।
কোথায় থাকবেন
সারা শহর জুড়ে আপনার রাত যাপনের জন্য রয়েছে ছোট বড় অসংখ্য হোটেল। বিমান বন্দর থেকেই হোটেলের নাম ঠিকানা,খরচাপাতির ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে পারবেন।