Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও



বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতেই কিছু না কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও এর ব্যতিক্রম নয়। কাজ কিংবা আত্মীয়ের বাড়ি বেড়ানো-যে কারণেই যান না কেন দেখে আসতে পারেন সেখানকার অসংখ্য রাজবাড়ি, পুরনো মসজিদ, মন্দির, দিঘি। আছে পীর, দরবেশ, আউলিয়া ও ধর্মগুরুদের স্মৃতিবিজড়িত নানা জায়গা ও স্থাপত্য...

রানীশংকৈল উপজেলার উত্তরগাঁওয়ে ঐতিহাসিক রাম রায় দিঘি এখন আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট। দিঘির চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন ফলমূল ও ঔষধি গাছের বাগান। জেলা প্রশাসন ২০০২ সালে দিঘির পাড়ে ১ হাজার ২৬০টি লিচু ও ১০ হাজার বনজ ঔষধি গাছ রোপণ করে। পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এই বাগানকে পাখ-পাখালির অভয়ারণ্য বলা চলে। দেখে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। দূর থেকে দিঘির পাড়ে গাছগুলো দেখে মনে হয় কোনো পাহাড়ের টিলা। এটি বরেন্দ্রভূমি এলাকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দিঘি, দৈর্ঘ্যে ৯০০ মিটার ও প্রস্থে ৫৫০ মিটার।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে পিকনিক স্পট কুমিল্লা হাড়ি। বর্তমানে এর নাম বলাকা উদ্যান। শাল, শিশু, মেহগনি ইত্যাদি পুরনো গাছগাছালির সমারোহ রয়েছে এখানে। বৃক্ষপ্রেমিকদের কাছে এলাকাটি বেশ আকর্ষণীয়। একটু নিরিবিলি সময় কাটাতে চাইলে এখানে চলে আসে মানুষ। এখানে সরকারি ডাকবাংলোতে থাকার ব্যবস্থা আছে।

এ ছাড়াও জেলায় দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে রানীশংকৈলের ভবানন্দপুরে নেকমরদ মসজিদ, ঠাকুরগাঁও সদরের জামালপুর গ্রামে জমিদারবাড়ি ও মসজিদ এবং ঢোলারহাট এলাকায় আরাজি দক্ষিণ বঠিনা গ্রামে গৌরলাল জমিদারবাড়ির শিবমন্দির ও দিঘি।

জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় কুলিক নদীর তীরে রাজা টঙ্কনাথের রাজবাড়ি। উপজেলা শহর থেকে ১০ টাকা রিকশা ভাড়ায় রাজবাড়ি যাওয়া যায়। ১৯১৫ সালে রাজা বুদ্ধিনাথ চৌধুরীর পুত্র টঙ্কনাথ চৌধুরী এই বাড়ি নির্মাণ করেন। নয়নাভিরাম এর কারুকাজ। রাজবাড়ির মেঝে ছিল মার্বেল পাথরের তৈরি। কালক্রমে এ রাজবাড়ি এখন ধ্বংসের পথে।

রানীশংকৈলেই আছে গোরকই গ্রামে গোরক্ষনাথ মন্দির। এর পাশেই আছে দর্শনীয় এক কূপ। হাজার নরনারীর স্নানের পরও ওই কূপের পানি এক ইঞ্চিও কমে না বলে কথিত আছে। কূপের নির্মাণ পদ্ধতিও বৈচিত্র্যময়। কূপের একবারে নিচু অংশটুকু পর্যন্ত পাথর দিয়ে বাঁধানো। গোরক্ষনাথ ছিলেন নাথপন্থীদের ধর্মীয় নেতা খীননাথের শিষ্য। তাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই মন্দির ও কূপ তৈরি করা হয়। শুধু কূপটি দেখার জন্যই প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য লোকজন এখানে আসেন।

ঠাকুরগাঁও শহরের ১৫ কিলোমিটার উত্তরে টাংগন ব্যারেজ। কৃষিজমিতে সম্পূরক সেচ দেওয়ার জন্য টাংগন নদীর ওপর ১৯৯০ সালে এই ব্যারেজ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদীর উজানে পানি আটকে রাখায় সৃষ্টি হয় নয়নাভিরাম দৃশ্য। শহরের লোকজন অবসাদ কাটাতে ছুটে যান টাংগন ব্যারেজ এলাকায়।

ঠাকুরগাঁও শহর থেকে ২০-২২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মণ্ডুমালা গ্রামে রয়েছে একটি বিশালাকৃতির আমগাছ। প্রায় ২ বিঘা জমিজুড়ে বিস্তৃত এই গাছের ডালপালা। গাছের বেড় ২০ হাত আর উচ্চতা ৫০-৬০ হাত। দূর থেকে মনে হয় কোনো পাহাড়ের চূড়া। কৃষি বিভাগের মতে, এটি লতানো আমগাছ। সূর্যপুরী জাতের এ আমগাছটির বয়স কত বা কে লাগিয়েছেন তা কেউ জানে না। তবে স্থানীয়রা দাবি করেন ২০০ বছর।

হরিপুর উপজেলা শহরের পাশেই রয়েছে একটি রাজবাড়ি। ১৮৯৩ সালে প্রতাপশালী সামন্ত প্রভু রামবেন্দ্র রায় চৌধুরী ও তার পুত্র জগেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী এ রাজবাড়ি তৈরি করেন।