Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

মেঘের রাজ্য চেরাপুঞ্জি



প্রাথমিক কিংবা মাধ্যমিকের ভূগোল বইয়ের একটি সাধারণ প্রশ্ন-পৃথিবীতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় কোথায়? উত্তর-ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে। এটুকু পর্যন্ত মোটামুটি সবার জানা। তবে অনেকেই জানেন না এই চেরাপুঞ্জি বাংলাদেশ থেকে কতদূর। ম্যাপ বের করে হিসাব-নিকাশ করে দেখবেন বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে চেরাপুঞ্জি সোজাসুজি কুড়ি কিলোমিটারেরও কম। বাড়ির পাশেই বিশ্বের বৃষ্টিবহুল এই এলাকা, সেখানে আষাঢ় কিংবা শ্রাবণের বৃষ্টি উপভোগ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই বৃষ্টির মৌসুমে ঘুরে আসুন চেরাপুঞ্জি। সঙ্গে রাখবেন মেঘালয়ের রাজধানী ভারতের অন্যতম পর্যটন শহর শিলং। কেউ কেউ বলেন, দার্জিলিং যদি হয় রূপের রানী তা হলে শিলং হচ্ছে রাজা।

ম্যাপ দেখে দূরত্ব কুড়ি কিলোমিটারের কম হলেও সীমান্তের যেখানে ইমিগ্রেশন অফিস আছে, সেই তামাবিল থেকে চেরাপুঞ্জি যেতে আপনাকে ঘুরতে হবে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ। আর এটুকু পথ পেরুতে সময় লাগবে অন্তত দুই ঘণ্টা। শিলংয়ের দূরত্ব এর চেয়ে সামান্য বেশি, সময়ও কিঞ্চিত্ বেশি লাগতে পারে। তবে সীমান্ত পার হয়ে যখন পাহাড়চূড়ার আঁকাবাঁকা পথে চলতে থাকবেন তখন মনে হবে এই দূরত্ব আরও বেশি হলেই বোধহয় ভালো ছিল। চলার পথে আপনাকে সঙ্গ দেবে চারপাশের অসাধারণ সুন্দর সব পাহাড়। কখনও আপনাকে চারপাশ থেকে ঢেকে দেবে মেঘ। প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে মনে হবে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়া যাযাবর। কখনওবা পাহাড়ের ঢালে সরু রাস্তার আরেক পাশেই গভীর খাদ। এ এক ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ দৃশ্য।

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সিলেট, সেখান থেকে বাসে কিংবা সিএনজি স্কুটারে তামাবিল। ভারতের পাহাড়গুলোর ঠিক পাদদেশে বাংলাদেশের এই প্রান্তে সমতলভূমিতে ইমিগ্রেশন-কাস্টম অফিস। সীমান্ত পার হলেই জায়গাটার নাম ডাউকি। ইমিগ্রেশন-কাস্টমের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ভাড়া করতে হবে ট্যাক্সি। শুরুতে শিলং যাওয়াই ভালো। শিলং শহর আর তার আশপাশের জায়গাগুলো ঘুরে বেড়িয়ে তারপর সেখান থেকেই এক দিনের জন্য চেরাপুঞ্জি ঘুরে আসা যাবে। আর যারা শুধু চেরাপুঞ্জি যেতে চান, তারা ডাউকি থেকেই ট্যাক্সি ভাড়া করবেন চেরাপুঞ্জিতে। তবে সেখানে থাকার মতো বেশি হোটেল এখনও গড়ে ওঠেনি, ফলে আগে থেকে হোটেল বুকিং না থাকলে বিপাকে পড়ে শিলং চলে যেতে হতে পারে। শিলং শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি থাকার জন্য চমত্কার একটি ব্যবস্থা আছে; নাম চেরাপুঞ্জি হলিডে রিসোর্ট। এটিও আগে থেকে বুকিং দিয়ে যেতে হবে। পাহাড়ের নির্জনে এই রিসোর্টের আশপাশেও রয়েছে ভ্রমণের অনেকগুলো জায়গা। শিলংয়ে হোটেলে বসেই আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোয় বেড়ানোর জন্য হরেকরকম প্যাকেজ পাবেন। এ ছাড়া চেরাপুঞ্জি বেড়ানোর প্যাকেজও পাবেন এখান থেকেই।

পরিবহন
ভাড়া করা ট্যাক্সিই শিলং ও চেরাপুঞ্জিতে বেড়ানোর সবচেয়ে ভালো বাহন। তবে বড় দল হলে শিলং থেকে বাস ভাড়া করেও চেরাপুঞ্জি বেড়িয়ে আসা যায়। যারা অহরহ কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য এলাকায় বেড়াতে যান তাদের জন্য বলে রাখি, শিলং বা চেরাপুঞ্জিতে থাকা, খাওয়া এবং গাড়িতে ঘুরে বেড়ানোর খরচটা পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে কিছুটা বেশি।

তামাবিল সীমান্তে ট্রাভেল ট্যাক্স দেওয়ার মতো ব্যাংক নেই, এ জন্য বেশ খানিকটা দূরে যেতে হতে পারে। তাই ঢাকা থেকেই ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করে যাওয়া ভালো। এ ছাড়া সীমান্ত পার হওয়ার পর বেনাপোল কিংবা চেংড়াবান্ধার মতো মুদ্রা বিনিময়ের সুযোগও খুব সীমিত। এমনকি শিলংয়ের মতো শহরেও ডলার ভাঙানো সহজ নয়, টাকা ভাঙানো প্রায় অসম্ভব। তাই প্রাথমিক ঘোরাফেরার জন্য যতদূর সম্ভব সীমান্ত এলাকাতেই বেশ কিছু ডলার ভাঙিয়ে নিন। এরপর শিলংয়ে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াতে ডলার ভাঙাতে হবে।