Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Sports Image

ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়া সেই ম্যাচগুলো



ক্রিকেটের ওয়ানডে ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। ৭০-এর দশকে শুরু হওয়া ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে খেলা হয়েছে ৩০০০ হাজারেরও বেশি ম্যাচ। নানা রকম রেকর্ড, মজার ঘটনা, কিছু অতিমানবীয় কীর্তির কল্যাণে কিছু ম্যাচ ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। তবে এই ৩০০০ হাজার ম্যাচের মধ্য থেকে সেরা কিছু ম্যাচ বের করা দুঃসাধ্য। তবুও এর মধ্য থেকেই আলাদা কিছু ম্যাচ নিয়ে আমাদের এই আয়োজন-


১) দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া (২০০৬)
পাঁচ ম্যাচের সিরিজ চলছিল। ২-২ সমতায় তখন দুই দল। শেষ ম্যাচ, তাই দুইদলেরই বাঁচা মরার লড়াই। ৫০ ওভার শেষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড তখন অস্ট্রেলিয়ার নামের সামনে। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে ৪৩৪ রানের রেকর্ড! অধিনায়ক রিকি পন্টিং একাই করেছেন ১৬৩ রান। বলা হয় তার সেরা ইনিংসের মধ্যেও অন্যতম ছিল সেটি। কিন্তু ইতিহাসের যে আরো বাকী ছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস খেললেন তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ইনিংস। আর দল ছাড়িয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার ৪৩৪ রানের পাহাড়। গিবসের ১৭৫ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা গড়ে আরেক ইতিহাস। ওয়ানডে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছয় সেদিন খেলা হয়েছিল। দুই দল মিলিয়ে মোট ২৬টি ছয় হাঁকানো হয়। ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন হার্শেল গিবস এবং ম্যান অব দ্য সিরিজ হন শন পোলক।


২) দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া (১৯৯৯)
ঐতিহাসিক ম্যাচ হিসেবেই ধরা হয় এটিকে। ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমি ফাইনাল ছিল সেটি। ম্যাচটি নদীর পাড়ে হওয়ায় দর্শরা একটু যেন ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন কিন্তু তাদের ধারণা ছিলোনা তারা সামনে কি দেখতে যাচ্ছেন। প্রথম ইনিংসে শন পোলক ও অ্যালান ডোনাল্ডের ফাস্ট বোলিংয়ের সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করে অস্ট্রেলিয়া দল মাত্র ২১৩ রান করে, যা মোটেই সন্তোষজনক ছিলোনা। মাইকেল বেবানের ৬৫ আর স্টিভ ওয়াহর ৫৬ রানে ভর করে এই রান তোলে অস্ট্রেলিয়া।
কিন্তু এই রান টপকাতেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে খাবি খেতে হয়। শেন ওয়ার্নের ঘূর্ণির সামনে কোন রকমে টাল সামলান জ্যাক ক্যালিস। ৫৩ রান করে দলকে একটু সামলে নেন। কিন্তু আসল নাটকীয়তায় অংশ নেন ল্যান্স ক্লুজনার ও অ্যালান ডোনাল্ড। ক্লুজনারের ভুলে রান আউট হয়ে যান ডোনাল্ড, ম্যাট সমতা হয়ে যায়। তবে অস্ট্রেলিয়া ভালো অবস্থানে থাকায় ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার দিকে যায়।


৩) অস্ট্রেলিয়া বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯৯৬)
মাইকেল বেভানকে বলা হয় ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ফিনিশার। এই ম্যাচেও তিনি সে মান রাখলেন। বৃষ্টি বিঘ্নিত এই ম্যাচে ৪৩ ওভার করে খেলা হয়। বেঁধে দেওয়া এই ওভাবে কার্ল হুপারের অনবদ্য ৯৩ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোণভাবে ১৭২ রান করে।
মাইকেল বেভান একজন দারুণ ক্রিকেটার তাই হয়তো তার উপরে ম্যাচ জেতানোর চাপটা বেশি ছিলো কিন্তু তার থেকেও বড় চাপ ছিল শেষ বলে চার রান। বেভান তখন ৭৪ রানে উইকেটে টিকে গিয়েছিলেন বলেই হয়তো ভরসাটা বেশিই ছিল তার উপরে। বেভান পারলেন সে পরীক্ষায় উৎরে যেতে এবং দলকে এনে দিলেন দারুণ এক জয়।


৪) ভারত বনাম পাকিস্তান (১৯৮৬)
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই উত্তেজনা। আর তা যদি হয় কোন আসরের ফাইনাল তাহলে তো আর কথাই নেই। ম্যাচটি ছিল ১৯৮৬ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সারজায় সেদিন ভারত তাদের সেরাটা দিয়েছিল। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডীং তিন বিভাগেই তারা ছিল দারুণ। সুনীল গাভাস্কারের করা ৯২ রানে ভর করে ভারত মোট ২৪৫ রান সংগ্রহ করে।
কিন্তু সমস্যা ছিল, সে ম্যাচে ছিল পাকিস্তান দলের জাবেদ মিঁয়াদাদের মতো একজন ব্যাটসম্যান যিনি সেই ম্যাচের পরে জাতীয় বীরের পর্যায়ে চলে যান। পাকিস্তান সে ম্যাচ জিতেছিল, শুধু এটুকু বললেই সে ম্যাচের মর্ম বুঝানো যাবেনা। পাকিস্তান ২৪৮ রান করে জিতেছিল কিন্তু মিঁয়াদাদ একাই করেছিলেন ১১৬ রান করেন। ম্যাচের শেষ বলে দরকার ছিল ছয় রান। মিঁয়াদাদ পারলেন সেই ছয়রান করতে এবং এনে দিলেন পাকিস্তানকে জয়ের স্বাদ।


৫) ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা (২০০৯)
এই ম্যাচ ছিল রানের ম্যাচ। প্রথমে ব্যাটিং করে ভারত করে ৪১৪ রান জবাবে শ্রীলঙ্কা ৪১১ রানে অল আউট হয়ে যায়, কিন্তু রানের উৎসবের কারণেই এই ম্যাচটি সবাই মনে রাখবে। দু ইনিংসই রানের একই সমান্তরালে চলেছে। ভারতের পক্ষে বীরেন্দ্র শেবাগ ১৪৬ রান করলেও উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনির অপরাজিত ৭২ রানকেই সবাই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। দুই দলের দুই উইকেটরক্ষক সেদিন দুই দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। কুমার সাঙ্গাকারা করেছিলেন অপরাজিত ৯০রান। ৪১১ রান করে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও শ্রীলঙ্কা সেদিন পারেনি।