Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

একাত্তরের স্মৃতি বিজড়িত মিঠাপুর শিকদার বাড়ি



কালের করাল গ্রাসে বিলুপ্তি হয়ে গেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার মিঠপুরের ঐতিহ্যবাহী শিকদার বাড়ি। এক সময় রাজবাড়ির সদৃশ্য থাকলেও আজ তা বিশাল ভগ্নস্তুপ আর জরাজীর্ন ভবনের আংশ মাত্র। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকবাহিনী গুড়িয়ে দিয়েছে শিকদার বাড়ি,যা একটি অনাবিস্কৃত বদ্ধভূমি মুক্তিযুদ্ধের সময় বিজয় যখন দারপ্রান্তে তখন পাক হানাদার বাহিনী ও তার দোসরদেও হাতে শহীদ হন এই অঞ্চলের শতাধিক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ । যাদের স্মৃতি আজও অনাবিস্কৃকত রয়ে গেছে। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে , প্রসাদতুল্য বড় বড় দালান,সিংহ দরজা , শান বাধানো পুকুর ঘাট, মৃতের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যে নির্মিত সমাধি মঠ আর টিলা সদৃশ্য ধ্বংস্তুপ,শ্যাওলা পড়া ভবনের আগাছাপূর্ণ দেয়ালগুলো অতীত ঐতিহ্যর কথা মনে করিয়ে দেয় । এক সময় শিকদার বাড়ির ঐতিহ্য,জাকজমকতা আর নামডাক বৃহওর ফরিদপুরসহ সারা দেশ জুড়ে ছিল । প্রায় ৩৫একর জায়গা নিয়ে শিকদার বাড়ি বর্তমানে প্রায় ভগ্ন ওঅর্ধভগ্ন ৬টি দালান রয়েছে এবং টিলার মত ভগ্ন দালানের ধ্বংসাবষেশে ৪টি স্তুপ রয়েছে গাছ-গাছালিতে ঘেরা এই শিকদার বাড়ি ।আজ ধ্বংসস্তুপের ভগ্নাবশেষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করায় বিলুপ্তির পথে । শান বাঁধানো ৫টি পুকুর চোখে পড়ে শিকদার বাড়িতে । এই পুকুরগুলোতে শান বাঁদানো এবং গোসল করতে অপেক্ষ করার জন্য বসার আলাদা জায়গা রয়েছে । বিভিন্ন মনোরম আকৃরি দরজাও ছিল এই পুকুর ঘাঠে ।ধ্বংস প্রায় সিংহ দরজাটি চোখে পড়ে আজও ।এলাকায় আজও জনশ্রুতি আছে । এই শিকদার বাড়ির সিংহ দরজা দিয়ে একবার প্রবেশ করে সম্পূর্ন বাড়ি ঘুরে আবার সিংহ দরজায় আসা কোন অপরিচিত মানুষের পক্ষে সম্ভাব হতো না। শিকদার বাড়ির অর্থ-ভৈবরের পেছনে জনশ্রুতি আছে-কোন এক কালে এদেও আবস্থা সাধারন জনগনের মতই দরিদ্র ছিল। শিকদার বংশের কোন এক মহিলা পরশ পাথর বা গুপ্তধন পেয়ে পরবর্তীতে বিশাল অর্থ ও প্রতিপওির মালিক হয়। শিকদার বাড়িতে আরো চোখে পড়ে প্যাগোডা আকৃতির ৯টি মঠ। শবদেহ পোড়ানোর পর মৃতের স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রতীক হিসাবে নির্মীত এই সমাধি মঠগুলো। তাতে মৃতের নাম,জম্ন ওমৃত তারিখ খোদাই করে লেখা আছে এই মঠগুলোর কয়েকটি চোখে পড়ে মাদারীপুর-শ্রীনদী মঠগুলোর পাশে। মঠগুলোর গায়ে বিভিন্ন চিত্র খোদাই করা আছে এবং প্রত্যেকটি মঠই বিভিন্ন আকৃতির ও ডিজাইনের তৈরি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধেও সময় রাজাকার ও পাকবাহিনী শিকদার বাড়ির উপর আক্রমন চালায় । চলে গনহত্যা,অগ্নিসংযোগ,বোমা ও গুলিবর্ষন লুন্ঠিত হয় শিকদার বাড়ির অর্থ ওস্বর্নালঙ্কার। এতে অনেক মানুষ প্রান হারায় । বর্তমানে কৃষি ব্যাংক ও কালিরবাজার শাখা নির্মানকালে অনেক মানুষের মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার করা হয়। সেই সময়ে পাকবাহিনীর হাতে গুলি খেয়ে একমাএ বেঁচে যাওয়া নিত্যগোপাল ঠাকুর (৬৮) বর্তমানে বুকে ও পিঠে গুলি ও বেয়নেটএর ক্ষত চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন। তিনি জানালেন, সেই দিন শিকদার বাড়ি ওআশ-পাশের প্রায় শতাধিক মানুষকে লাাইন দিয়ে দাড় করিয়ে গুলি করা হয় গুলি করার পর পরই তিনি পড়ে যান পরবর্তীতে পাকবাহিনী তার পিঠে বেয়নেট দিয়ে তার পিঠে খুচিয়ে খুচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে যায়। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। সেই দিন নিহত সবাইকে বর্তমানে কৃষি ব্যাংক কালিরবাজার শাখা ভবনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়। সেই ভায়র স্মৃতির কথা মনে আজও তিনি শিহরিত হয়ে ওঠে। সেই সময় তার শারীরিক ও আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল। যুদ্ধেও সময় বাড়ি-ঘর ওধন-সম্পিওি ছেড়ে পালিয়ে পালিয়ে চিকিৎসা নেয় সে। যুদ্ধেও পর থেকে আজ পর্যন্ত কায়ক্লেশে বেঁচে আছে। স্বাধীনতার সময় যারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বেশীর ভাগই তৎকালীন সময়ে ভারতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন । শিকদার বাড়ির মালিকানা বর্তমানে স্থানীয় মুসলমানদের হাতে। ধ্বংস প্রায় শিকদার বাড়িতে গড়ে উঠছে নতুন বসবাস। ধ্বংস স্তুপের ইট, পাথর , বড় বড় লোহার প্রকান্ড পাত সরিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ঘর বাড়ী। মুল বাড়ির বড় দুটি ভবন ভেংগে অতি সম্প্রতি সেখানে নতুন করে বসতি তৈরি করছে । ভগ্নপ্রায় কয়েকটি ভবনে বাস করছে কয়েক টি পরিবার । হয়ত অচিরেই সে গুলোও ভেংগে নতুন বসতি স্থাপন শুরু হবে ।
বর্তমানে কৃষি ব্যাংক কালিবাজার শাখার পাশে যে বধ্যভুমি অবস্থিত সেখানে চিহিৃত কওে একটি স্মৃতি সৌধ স্থাপন করার দাবী রয়েছে এলাকাবাসীর।