Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Health Image

ক্যান্সার লাইফস্টাইল কিংবা জিনগত কারণ নয়, ক্যান্সারের বড় কারণ দুর্ভাগ্য



লাইফস্টাইল কিংবা জিনগত কারণ নয়, ক্যান্সারের বড় কারণ দুর্ভাগ্য! ধূমপান, মদ্যপান, অপরিমিত খাদ্য গ্রহণ, ফাস্টফুড আর মুটিয়ে যাওয়ার মতো লাইফস্টাইল এবং জিন বা বংশগত কারণকে ক্যান্সারের বড় কারণ মনে করার একটা প্রবণতা অনেকের মধ্যে আছে। কিন্তু তা মোটেই ঠিক নয়।



সম্প্রতি বিবিসি, টেলিগ্রাফ ও জিনিউজ অনলাইনের এক খবরে এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দুই-তৃতীয়াংশ ক্যান্সারের পেছনে লাইফস্টাইল কিংবা জিনগত কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এসব ক্যান্সারের কারণ স্রেফ দুর্ভাগ্য! বাকি এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সার হয় পরিবেশ, লাগামহীন জীবনাচার বা লাইফস্টাইল এবং জিনগত কারণে। ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকতে মদ ও ধূমপান পরিহার, পরিমিত খাদ্য গ্রহণ, অতিরিক্ত মোটা না হওয়া আর পরিকল্পিত জীবন-যাপনের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মানুষকে সতর্ক করে বলে আসছিলেন, আজেবাজে খাবার থেকে সৃষ্ট টিউমার, ব্যায়াম না করা কিংবা বংশগত জিনত্রুটি ক্যান্সারের প্রধান কারণ। তবে এখন বলা হচ্ছে বদভ্যাস পরিহার করে পরিকল্পিত জীবন-যাপন করলেই ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকা যাবে তার নিশ্চয়তা নেই।

এক গবেষণায় জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে জীবন-যাপন প্রণালির কোনো সম্পর্ক নেই। সতর্ক থেকেও এসব এড়ানো সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন এবং ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষকরা যৌথভাবে ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা চালান।

গবেষক দল বলছেন, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হয় কোষের বিভাজনের ক্ষেত্রে কোনো না কোনো জটিলতার কারণে। লাগামহীন জীবনাচার কিংবা ডিএনএ'র ত্রুটির সঙ্গে যার কোনো সম্পর্কই নেই। আর এই কোষ বিভাজনটা মানুষের নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ বাইরে। এমনকি গবেষণায় জানা গেছে, সুস্থ থাকার জন্য কোষ বিভাজন যতবেশি প্রয়োজন হয়, ক্যান্সারের আশঙ্কাটাও ততই বেড়ে যায়। এই প্রথমবার বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হলেন, কেন কোনো ক্যান্সার অন্যগুলোর চেয়ে বেশি ভিন্ন। যেমন অন্ত্রের চেয়ে মলদ্বারে কেন ক্যান্সার বেশি হয়। কারণ, অন্ত্রের চেয়ে মলদ্বারের কোষ বিভাজন হয় দ্বিগুণ।


জনস হপকিনসের বিজ্ঞানীরা যে ৩১টি ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করেন তার মধ্যে ৯টি লাইফস্টাইল কিংবা জিনগত। বাকি ২২টিই ছিল দুর্ভাগ্যবশত। যেখানে ডিএনএ আর জীবনাচারের প্রভাব ছিল খুবই কম। গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, দেহে পুরনো কোষ মরে যায়। আবার স্টেম সেল বিভাজনের মাধ্যমে সে শূন্যতা পূরণ হয়। এসব পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জটিলতায় মানুষের জীবন-যাপন প্রণালির সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং এসবের জন্য 'দুর্ভাগ্যকে'ই দায়ী করা যায়। তবে এই গবেষণার ফল জেনে অসতর্ক হওয়ার কিংবা অসংলগ্ন ও লাগামহীন জীবনাচারের কোনো সুযোগ নেই। কারণ অন্য এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সারের জন্য দায়ী মানুষের লাইফস্টাইল বা জীবনাচার। গবেষক ক্রিস্টিয়ান টোমাসেটি বলেন, যেসব ক্যান্সারের ক্ষেত্রে জীবনাচারের সম্পর্ক নেই সেগুলোর মধ্যে আছে মস্তিষ্কের ক্যান্সার, ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্যান্সার, যকৃতের ক্যান্সার। অন্যদিকে ধূমপান ও মদ্যপান, ভাইরাস আর জিন বা বংশগত কারণে যেসব ক্যান্সার হয় সেগুলোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করলে ঝুঁকি কমানো সম্ভব। লাইফস্টাইল ও জিনগত কারণে হওয়া এই এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সারের মধ্যে আছে খাদ্যনালির ক্যান্সার, ব্রেস্ট ও জরায়ুর ক্যান্সার। সাধারণত এক-পঞ্চমাংশ ক্যান্সারের জন্য ধূমপানকে দায়ী করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ ফুসফুস এবং দশমিক ৬ শতাংশ মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা এমন কিছু কোষ ও কলা (বেশ কিছু কোষ মিলে গঠিত) নিয়ে গবেষণা করেন যেগুলোর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অন্যগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। গবেষকরা অবশ্য বলছেন, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা, শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখা, পরিমিত খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে মানুষ অনেক ধরনের ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকতে পারে। এর আগে ব্রিটেনে পরিচালিত গবেষণায় জানা যায়, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি ক্যান্সারের জন্য লাইফস্টাইল বা জীবনাচারই দায়ী।


চিনি ছাড়া চা কিংবা কফির কথা চিন্তাও করা যায় না অথচ এই চিনিই কিনা তামাকের মতো ক্ষতিকর! এমন অবিশ্বাস্য তথ্যই দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনির্ভাসিটি অব লিভারপুলের গবেষক সায়মন ক্যাপওয়েল।
চিনিকে নতুন তামাক হিসেবেও আখ্যা দিয়ে তিনি জানা ,বিশ্বের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এ খবর জানার পর তাদের পণ্যে চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনবে বলে আশা করছেন সায়মন। চিনির ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য একটি ক্যাম্পেইন দলের সদস্য হয়ে কাজ করছেন সায়মন।