Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Health Image

ইবোলা থেকে সুরক্ষার ৫ মন্ত্র



বর্তমনে বিশ্বে ইবোলা ভাইরাস অন্যতম এক আতয্কের নাম। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় দেড় হাজার মানুষ। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এতে আতঙ্কিত না হয়ে জনসাধারণকে সচেতনভাবে চলা ফেরার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।

বেসরকারি সহযোগিতা সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ড. উনিশ কৃষ্ণ সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ইবোলা প্রাণঘাতী হলেও তা বায়ুবাহিত নয়। ফলে তা ফ্লুর মতো শণাক্ত করা যায় না। তবে ইবোলা ভাইরাস এড়ানো খুবই সহজ। কমপক্ষে পাঁচটি বিষয় এড়িয়ে চললে এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

সাবান ও পানির ব্যবহার

ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধৌত করতে হবে। হাত শুকানোর জন্য পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে।

সাধারণ সাবান ব্যবহার ইবোলা ভাইরাস ধ্বংস করার কার্যকর ওষুধ।তবে, বস্তি ও গ্রাম এলাকায় পরিষ্কার পানি নিশ্চিত করা খুবই কঠিন কাজ।এছাড়া, এ ভাইরাস এড়াতে করমর্দন বন্ধ করতে হবে। কারণ, ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে অন্য ব্যক্তি খুব সহজেই সংক্রমিত হয়ে যায়।

সংস্পর্শ এড়ানো

যদি কোনো ব্যক্তি ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে সন্দেহ হয়, তবে তার সংস্পর্শ এড়াতে হবে। এমনকি খুব নিষ্ঠুর মনে হলেও খুবই আপনজনও যদি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তার সংস্পর্শ এড়িয়ে থাকতে হবে।

সকলের এটা স্মরণ রাখতে হবে, এ ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির প্রসাব, পায়খানা, বমি, রক্তক্ষরণ, নাসিক্যের তরল পদার্থ ও বীর্যের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ সমূহের মধ্যে জ্বর, মাংসপেশী ও হাত-পায়ের জোড়ায় ব্যথা, গলা ও মাথা ব্যথা, বিষণ্নভাব, বিতৃষ্ণা, ঘন ঘন বমি এবং ডায়রিয়া উল্লেখযোগ্য।

এ লক্ষণগুলো দেখা গেলে আক্রান্তদের যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া প্রয়োজন। এমনকি আক্রান্তদের পোশাক, বিছানা চাদরও স্পর্শ করা যাবে না। সম্ভব হলে তাদের ব্যবহৃত পোশাক ও বিছানা পুড়িয়ে দিতে হবে।

মৃতদেহ থেকে দূরে থাকতে হবে

যদি কোনো ব্যক্তি ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, তবে তার মৃতদেহ থেকে দূরে থাকতে হবে। এমনকি তাকে সমাহিত করার প্রক্রিয়ায়ও অংশ নেওয়া যাবে না। যখনই কোনো ব্যক্তি মারা যায় তখন ভাইরাসটি অন্য শরীরে ছড়িয়ে পড়তে চাই। আক্রান্ত ব্যক্তির চেয়ে মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে এ ভাইরাস দ্রুত অন্য শরীরে প্রবেশ করে।

বন্য পশুর মাংস পরিহার

বন্য প্রাণী শিকার, স্পর্শ এবং তাদের মাংস খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে বাদুর, বানর এবং শিম্পাঞ্জি। চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন, এসব বন্য প্রাণীর মাধ্যমে ইবোলা ভাইরাস দ্রুত মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

কারও এলাকায় যদি কোনো প্রাণী খুবই সুস্বাদু হিসেবে পরিচিতি থাকে, তবে সেটাও এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ তার মাংস এবং রক্ত হয়তো এ ভাইরাসে সংক্রমিত। তাছাড়া, সকল খাবার সঠিকভাবে রান্না করা হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত হতে হবে।

আতঙ্কিত না হওয়া

গুজব মানুষের মাঝে ভয় বাড়িয়ে দেয়। স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তারা কোনো এলাকায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করতে যায়। ক্লিনিক হলো আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত স্থান।

এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি মানুষ মারা গেছে। এমনকি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন চিকিৎসকও মারা গেছেন।

এমন ঘটনাও ঘটেছে, কারও শরীরে ইবোলা ভাইরাস শনাক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ফেলে আত্মীয় স্বজনরা অন্যত্র চলে গেছে, এমনকি কেউ অন্য কোনো আলাদা রোগে আক্রান্ত হলেও।সুতরাং, প্রতিরোধই ইবোলা থেকে বাঁচার সবচেয়ে বড় উপায়।

তাই গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে হবে, আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। এতে আক্রান্ত হওয়ার হার কমানো এবং অনেক জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে।