কেন বিখ্যাত লোক মুখে প্রচলিত কোন এক সময় হযরত আলী (রাঃ)-এর পা নাকি ঐ পাহাড় রেখেছিলো। পা রাখার কারণে ঐ পাহাড়ে এই সুড়ং-এর সৃষ্টি হয়েছিলো। সেই থেকে এই সুড়ং-এর নাম “আলীর সুড়ং” নামে পরিচিত।
জায়গাটা সম্পুর্ণ প্রাকৃতিক। যেখানে কৃত্রিমতার ছোঁয়া নেই, নেই কোন যান্ত্রিকতা। প্রকৃতির অপরূপ লীলায় মনকে অদ্ভুত এক অনুভূতির দোলা দিয়ে যায়। এখানে ঢুকতে কোন টিকিটের প্রয়োজন হয়না ,জায়গাটা পাহারা দেয়ার জন্য নেই কোন দারোয়ান বা যত্ন আত্মির জন্য নেই কোন মালি বা ঝাড়ুদার ।অথচ প্রাকৃতিক ভাবেই এটা পরিষ্কার ও সুরক্ষিত।
জায়গাটি যেভাবে ভ্রমণ করবেন
-ঢাকা-চট্টগ্রাম-বান্দরবান এই রুটে বাসে যাওয়া যাবে। এরপর বান্দরবান টু আলীকদমের বাসগুলোতে উঠতে হবে। লামা পার হয়ে আলীকদম বাসস্ট্যান্ডে পৌছানোর পর যে কোন যানবাহনে আলী সুড়ং দেখতে যাওয়া যায়। -মাতামুহুরী নদীর হাঁটু পরিমাণ পানিতে পায়ে হেঁটে নদী পার হয়ে যেতে হবে।
-নদী পার হয়েই সরু পথ দিয়ে ঢুকে ভেতরে চলে যেতে হবে। কিছুদুর গিয়েই সামনে পাওয়া যাবে একটি পাহাড় । এখানেই একটি সুড়ং পথ দিয়ে আমাদের ঢুকতে হবে। সুড়ংটা একজন মানুষ হামাগুড়ি দিয়ে চলার মতো। দাঁড়িয়ে বা বসে সামনে যাওয়ার মতো জায়গা নেই। ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার।
-১০ গজ মত সামনে এগিয়ে গিয়ে পাওয়া যাবে একটি ১০ থেকে ১২ ফুট দৈর্ঘ্য-প্রস্থের গুহা। গুহার ভেতরের প্রকৃতি নিজেকে এমন ভাবে সাজিয়ে রেখেছে যে, যেন সে জানে সুড়ং দিয়ে যারা ঢুকবে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে তাই তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হবে।
-সামনে আরো একটি সুড়ং পাওয়া যাবে। এভাবে ৩টা সুড়ং পার হয়েই দেখা মিলবে সুর্যের আলো। সামনে গেলে আরো সুড়ং। লোক মুখে শোনা যায় সুড়ং-এর শেষ প্রান্তে একটা পাথরের দরজা। এখনো পর্যন্ত কেউ দরজার ওপারে যেতে পারেনি। খুব সাহসী না হলে আর সামনে না যাওয়ায় ভালো।
-সামনে আর না এগুলে এখানেই বের হওয়ার একটা রাস্তা পাওয়া যাবে। রাস্তাটি খুব ভয়ংকর ও বিপদজনক। ৫০ ফুট মতো স্কেলের মতো সোজা পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে আছে ছোট ছোট কিছু খোপ। ঐ খোপে হাত-পা বসিয়ে আস্ত আস্তে নিচে নেমে যেতে হবে। খোপগুলোর একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ডান পায়ের যে খোপ সেখানে ভুল করে বাম পা দেয়া যাবে না বা বাম হাতের যে খোপ সেখানে ডান হাত দেয়া যাবে না। এতে বিপদ অবশ্যম্ভাবী এবং ওখান থেকে একবার পড়ে গেলে মৃত্যু অবধারিত।
সাথে যা নিয়ে যাবেন
-টর্চলাইট
-চার্জ লাইট
-আগুনের মশাল
-কোমরে সরঞ্জাম বেঁধে রাখার মত বেল্ট
-পানি
-শুকনো খাবার
এখানে ভ্রমণের সময় অবশ্যই ভারী ব্যাগ নিয়ে যাবেন না।
যেখানে থাকবেন
সরকারী রেস্টহাউজে থাকতে পারেন। এছাড়া খুব ছোট ছোট মোটেল রয়েছে।