Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

পদ্মা রিসোর্ট




প্রমত্তা পদ্মার তীরে পানির ওপরেই ছোট ছোট কাঠের কটেজ। নদীতীর থেকে কটেজে আসতে কাঠের করিডোর। নিচে থৈ থৈ করছে পানি, যেন ভরা বর্ষার বন্যায় উঁচু ঘরের নিচের দিকটা পানিতে তলিয়ে গেছে। কফির মগ হাতে কটেজের বারান্দায় বসে দেখা যাচ্ছে পদ্মার বুকে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। সন্ধ্যার লাল সূর্য পদ্মার পানিকেও রাঙিয়ে দিচ্ছে। এমন দৃশ্য সচরাচর আমরা শুধু কল্পনাতেই দেখি।

এই কল্পনা বাস্তবে রূপ দিয়েছে পদ্মা রিসোর্ট। মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানা কমপ্লেক্সের ঠিক উল্টো পাড়ে পদ্মা তীরে এর অবস্থান।

থানা কমপ্লেক্স ঘাট থেকে রিসোর্টের ট্রলারে করে নদী পার হয়ে পৌঁছানো যায় গন্তব্যে। কাঠের পাটাতন ফেলে নদীর ঘাট থেকে রিসোর্টের গেট পর্যন্ত অস্থায়ী পথ। সেখান থেকে কাঠের সাঁকো দিয়ে অফিস বা কেবিনগুলোতে যাওয়া যায়। সোজা গেলে অফিস কক্ষ। কেবিনটির নাম ‘বসন্ত’। এমন কেবিন আছে মোট ১৬টি। বাংলা ১২ মাস আর ষড়ঋতুর নামে কাঠের কটেজ। বৈশাখ থেকে চৈত্র পর্যন্ত ১২টি, বাকি ৪টির নাম হল গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত্ ও বসন্ত। বাকি থাকল শীত! হুম। খাবারঘরটির নাম শীত!
প্রতিটি থাকার কেবিন দুই লেভেলের বা বলা ভালো তিন লেভেলের। দক্ষিণ দিকে মুখ করা। নিচতলায় আড্ডার জায়গায় আছে কয়েকটি সোফা ও একটি খাট। দোতলার দিকে আধাআধিতে রয়েছে খোলা ডেক। এটি নদীর দিকে। মানে এই ডেকে বসে খাওয়া যায় নদীর হাওয়া। গভীর রাতে জ্যোত্স্নার আঁকিবুঁকি দেখা যায় প্রমত্তা পদ্মার পানিতে।

বাকি অর্ধেক উঠলেই দোতলা থাকার ঘর। এ ঘরে দুটি খাট। ছনের আধুনিক ছাউনি ভেদ করে বৃষ্টির পানি নিচে আসতে পারে না বটে, কিন্তু দেখার চোখ থাকলে উপভোগ করা যায় ছাদে পানির চমত্কার সব নকশা।

বর্ষায় নদীর পানি কূল ছাপিয়ে ঢুকে পড়ে রিসোর্টে। পানি ঠেকানো হয় না, ফলে সেটি অবাধে ঢুকে পড়ে। কেবিনগুলোর নিচ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। কয়েক ফুট গভীরতার পানি। ঝিরঝিরি বাতাস।

বিকেলে কিংবা সন্ধ্যার পর ট্রলারে ঘুরে আসা যায় নদীতে। ট্রলার বা নৌকা ঘণ্টা হিসাবে ভাড়া করা যায়। রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব দোতলা ট্রলার। বড় গ্রুপ হলে সেটি ভাড়া করা যায় ঘণ্টায় হাজার টাকা হিসাবে।

শীত নামের খাবারঘরে দুপুর, রাত আর সকালের খাবার। খোলা ডেকে বসেও খাওয়া সম্ভব। পদ্মার ইলিশ তো থাকবেই, সঙ্গে ভর্তা-ভাজি।






কীভাবে যাবেন : রাজধানী থেকে বুড়িগঙ্গা সেতু পার হয়ে সোজা মাওয়া চৌরাস্তার মোড়। তারপর বাঁয়ে লৌহজং। এই মোড় থেকে সাত কিলোমিটার দূরে লৌহজং থানা কমপ্লেক্স। সেখানেই নদীর ঘাট। গুলিস্তান থেকে ১০-১৫ মিনিট পরপর ছেড়ে যায় লৌহজংয়ের বাস। আবার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াতকারী যে কোনো বাসে মাওয়া গিয়ে সেখান থেকে স্কুটারে করে চলে আসতে পারবেন রিসোর্টের ঘাটে। আগে থেকে বুকিং করা থাকলে রিসোর্টের লোক নদী পাড়ি দিতে সাহায্য করবে। বুকিং ছাড়া গেলে নদী পাড়ি দিতে খরচ হবে জনপ্রতি ৫০ টাকা।
ভাড়া : শুধু সারা দিন কিংবা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার জন্য পদ্মা রিসোর্টের কটেজ ভাড়া দেওয়া হয়। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কটেজপ্রতি ভাড়া ২ হাজার টাকা। আর রাতযাপনসহ পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ হাজার টাকা। দুপুর বা রাতের খাবার ৩০০ টাকা, আর সকালের নাশতা ১০০ টাকা। যে কোনো শুক্রবার সকালে চলে গিয়ে পরদিন সকালে ফিরে আসতে পারেন। আর পূর্ণিমা হিসাব করে গেলে সেটি হবে প্রমত্তা পদ্মায় বাড়তি পাওয়া। ঢাকা থেকেই সরাসরি পদ্মা রিসোর্টের কটেজ বুকিং করা যায়। যোগাযোগ : পদ্মা রিসোর্ট লিমিটেড, ফোন : ০১৭১৩০৩৩০৪৯, ০১৭১২১৭০৩৩০। ওয়েবসাইট : www.padmaresort.net