Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Technology Image

ফেসবুক সৃষ্টি এবং জানা অজানা নানা তথ্যঃ






আমরা আজ যে ফেসবুক ব্যবহার করি তার শুরুটা হয়েছিল “ফেসম্যাস (FACEMASH)” নামক একটি সাইট দিয়ে। মার্ক জুকারবার্গ অনেকটা শখের বশেই ফেসম্যাস ডট কম নামের একটি সাইট তৈরি করেন। সময়টা ছিল ২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর। এসময় জুকারবার্গ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার তৈরি “ফেসম্যাস(FACEMASH)” নামক এই সাইটে হার্ভার্ডের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের ছবি আপলোড করতেন এবং ভোট দিতে বলতেন কোন ছবিটি হট আর কোনটি হট নয়। এসব ছবি সংগ্রহ করার জন্য জুকারবার্গ হার্ভার্ডের সংরক্ষিত তথ্য কেন্দ্র হ্যাক করেন। প্রথমদিকে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ৪৫০ ভিজিটর ২২০০০ ছবিতে অন লাইন এর মাধ্যমে ভোট দেন। কিন্তু পরবর্তীতে হার্ভার্ড এর শিক্ষার্থীদের বাঁধার মুখে সাইটটি বন্ধ করে দিতে হয়।







ফেসবুকের পরের ঘটনা বিতর্কে ভরা:



পরবর্তীতে “ফেসম্যাস (FACEMASH)” সাইটটি “দি ফেসবুক (The Facebook)” নামে রূপান্তরিত হয়। তবে বিভিন্ন সাইট থেকে জানা যায় “ফেসম্যাস (FACEMASH)” সাইট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জাকারবার্গ “দি ফেসবুক (The Facebook)” নামের সাইটটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন এবং সে মোতাবেক জুকারবার্গ কোড লেখা শুরু করেন। তবে অন্য কিছু সাইট থেকে জানা যায়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে “হাউজ সিস্টেম” নামে একটি ওয়েব সার্ভিস ছিল এবং “দি ফেসবুক (The Facebook)” সেই হাউজ সিস্টেম এরই একটি কনসেপ্ট ছিল। ২০০৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এরন গ্রীন্সপ্যান নামে এক শিক্ষার্থী হাউজ সিস্টেমে এই কনসেপ্ট আনেন।

অপরদিকে জানা যায়, “ফেসম্যাস (FACEMASH)” সাইটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জুকারবার্গ তার কিছু বন্ধুদের জন্য হার্ভার্ড কানেকশন নামে একটি সাইটে কাজ শুরু করেন। বন্ধুরা হলেন – ক্যামেরুন, টেলর ও ডিভিয়া। এই বন্ধুরাই পরবর্তীতে জুকারবার্গের বিরুদ্ধে আইডিয়া চুরির অভিযোগ আনেন। তাদের দাবি ছিলো – “দি ফেসবুক” এর কনসেপ্ট ছিলো “হার্ভার্ড কানেকশন” এর।
দি ফেসবুকের যাত্রা শুরু:
২০০৪ সালের ১১ই জানুয়ারী জুকারবার্গ “দি ফেসবুক ডট কম” নামে ডোমেইন কিনেন। “দি ফেসবুক ডট কম” তৈরিতে জুকারবার্গের সাথে কাজ করেন তার কিছু রুমমেট। তারা হলেন এডুয়ারড সারভেরিন,আন্ড্রো ম্যাক্কোলাম, ডাস্টিন মস্কভিটয।






বিতর্কের আবার শুরু:

“দি ফেসবুক” যাত্রা শুরু করে ২০০৪ সালের জানুয়ারীতে। ঠিক তার ছয়দিনের মাথায় তার সেই বন্ধুরা তার বিরুদ্ধে আইডিয়া চুরির অভিযোগ এনেছিল। সেসময় এ নিয়ে তেমন আর কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হলেও ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এসে জুকারবার্গের সেই তিন বন্ধু ক্যামেরুন, টেলর ও ডিভিয়া মামলা করে বসে দি ফেসবুকের নামে।









দি ফেসবুকের উত্তরোত্তর ইউজার বৃদ্ধি:

মার্ক জুকারবার্গ যখন “দি ফেসবুক” নামে নতুন সাইট চালু করেন তার পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ১২০০ জন শিক্ষার্থী এতে রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রথমদিকে এটি শুধুমাত্র হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও ২ মাসের মাথায় হার্ভার্ড ছড়াও আরো বেশ কিছু কলেজে দি ফেসবুক পরিচিতি পায়। জুন মাসের মধ্যে সাইটে প্রায় দেড় লাখ ( ১,৫০,০০০ ) ইউজার ফেসবুক ব্যবহার করা শুরু করে এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১ মিলিয়ন এ। তবে এ সময় শুধুমাত্র ১৩ বছরের উপরের বয়সের ছেলে ও মেয়েরা এটি ব্যবহার করতে পারতেন।

• ২০০৪ সালে ফেসবুকে কোনো ছবি, ওয়াল, নিউজ ফিড, ইভেন্ট, পেজ ছিল না।


ফেসবুকের যাত্রা শুরু:

প্রথমে “ফেসম্যাস (FACEMASH)”, তারপর “দি ফেসবুক (The Facebook)” এবং অবশেষে ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে জুকারবার্গ শ্রুতিমধুর নামের কারণে “দি ফেসবুক (The Facebook)” কে সংক্ষিপ্ত করে “ফেসবুক (Facebook)” রাখেন এবং এই নামে একটি ডোমেইন কিনেন। তবে এজন্য খরচ হয়েছিল দুই লাখ মার্কিন ডলার।

• ২০০৫ সালে ফেসবুকে ছবি যোগ করার সুবিধা চালু হয়।








২০০৫ সালটি ছিল ফেসবুকের লোকসানের বছর:

২০০৪ সালের জুন মাসে পেপাল এর ফাউন্ডার ফেসবুকের ১০ দশমিক ২ পারসেন্ট এর শেয়ার কিনে নেয় পাঁচ লাখ ইউ এস ডলারে। ২০০৫ এর মে মাসে এক্সেল পারটনারস ১২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে দি ফেসবুক ডট কমে। তারপরও ২০০৬ সালের এক হিসাবে দেখা যায় ২০০৫ সালে ফেসবুক সাড়ে তিন মিলিয়ন ডলারের উপরে লস করে।

• ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে বন্ধু বানানোর পদ্ধতি চালু এবং একই বছর মোবাইল ফোন থেকে ব্যবহারের সুবিধা চালু হয়।


ফেসবুকের সাথে মাইক্রোসফটের যুক্ত হওয়া:

২০০৭ সালে মাইক্রোসফট ২৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে ফেসবুকের এক দশমিক ছয় পারসেন্ট কিনে নেয়। একই বছর হংকং এর এক লোক ষাট মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন ফেসবুকে।

• ২০০৭ সালে ভার্চুয়াল গিফট দেওয়া চালুর পাশাপাশি নেটওয়ার্ক পাতা চালু, বন্ধুদের সর্বশেষ তিনটি হালনাগাদ হোম পেজ থাকা, একই সঙ্গে সব বন্ধুর হালনাগাদ দেখার সুবিধা, বন্ধুদের হালনাগাদের আরএসএস ফিড চালু, বন্ধুদের হালনাগাদ এসএমএসে পাওয়ার সুবিধা, এসএমএস পাঠিয়ে ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেওয়ার সুবিধা চালু হয়। এছাড়া একই বছরে চালু করা হয় ফেসবুক ভিডিও, আইফোনের জন্য ফেসবুক সাইট, ব্যবসার কাজে ব্যবহারের জন্য ফেসবুক পেজ এবং সোশ্যাল অ্যাডস চালু হয়।


অবশেষে আইনী সমস্যার সমাধান:

ফেসবুকের বিরুদ্ধে আইডিয়া চুরির যে মামলাটি মার্ক জুকারবার্গের বন্ধুরা করেছিল সেই মামলার সমাধান ২০০৮ সালে সম্পন্ন হয় এবং একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি হিসেবে ফেসবুক সে সময় ৫ (পাঁচ) বিলিয়ন ডলারের কোম্পানীতে রূপান্তরিত হয়।

• ২০০৮ সালে বিভিন্ন অ্যাপস যুক্ত ও স্প্যাম প্রতিরোধের সুবিধা চালু করা হয়। একই বছরের মার্চ মাসে নতুন প্রাইভেসি বৈশিষ্ট্য চালু করা হয়। পাশাপাশি মে মাসে ফেসবুকে ব্যবহারকারীর পাতার পাশে ‘পিপল ইউ মে নো’ চালু, ইউটিউবের ভিডিও রাখার সুবিধা চালু। ৫৫টি নতুন ভাষায় ফেসবুক চালু, আইফোনের জন্য ফেসবুক অ্যাপস চালু।

• ২০০৯ সালে ফেসবুকে নতুন তেমন কোনো ফিচার সংযুক্ত হয় নি।

• ২০১০ সালে ফেসবুকে যুক্ত হয় নতুন টপ মেনু, নতুন বামের মেনু, সহজে ছবি আপলোড করার উন্নত সুবিধা। কমিউনিটি পেজ চালু, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসে স্থান ও গ্রুপ করার সুবিধা, ফেসবুকে মেসেজিংয়ের উন্নত সুবিধা। ডিসেম্বরে ফেসবুকের প্রোফাইলের নতুন চেহারা, চেহারা চিহ্নিত করার ট্যাগিং-সুবিধা চালু।

• ২০১১ সালে ফেসবুক চ্যাটের সঙ্গে ভিডিও সুবিধা চালু করা হয়। এছাড়া গেমসের উন্নতকরণ এবং ফেসবুকে সাবস্ক্রাইবার বোতাম এবং মোবাইলের জন্য টাইমলাইন চালু করা হয়।

• ২০১২ সালের জানুয়ারিতে বন্ধুদের সঙ্গে গান শোনার সুবিধা, টাইমলাইনের জন্য অ্যাপস চালু।










ফেসবুকের রং কেন নীল?
এটি একটি কমন বিষয়। কেননা ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ বর্ণান্ধত্বের সমস্যায় ভুগছেন। অর্থাৎ, রং চিনতে অসুবিধা হয় তার। সে জন্যই রঙের ক্ষেত্রে নীলকে ফেসবুকের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে।



হ্যাকিংয়ের শিকার ফেসবুক:
জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি বেশ কয়েকবার হ্যাকিং এর শিকার হয়েছে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে এই হ্যাকিং এর দুর্ঘটনাটি ঘটে। এছাড়া একবার স্বয়ং মার্ক জুকারবার্গের আইডিও হ্যাক করা হয়েছিল।

ফেসবুকের শেয়ার হোল্ডারদের তালিকা:

• মার্ক জুকারবার্গ - ২৪%
• এক্সেল পার্টনার -১০%
• ডিজিটাল স্কাই টেকনোলোজিস - ১০%
• ডাস্টিন মস্কোভিৎজ - ৬%
• এডোয়ার্ডো স্যাভেরিন - ৫%
• শণ পার্কার - ৪%
• মাইক্রোসফট - ১.৫%
• কর্মচারী, বিভিন্ন তারকা এবং বহির্ভূত মালিকানা ৩০%
• অন্যান্য - ৯.৫%





ভাষা:
সারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষীদের জন্য ফেসবুক ৭০টিরও বেশি ভাষা সাপোর্ট করে। যেমন - Catalan, Chinese (সাধারণ), Chinese (হংকং), Chinese (তাইওয়ান), Czech, Danish, Dutch, English (মার্কিন), English (ব্রিটিশ), English (Pirate), Filipino, Finnish, French, German (জার্মান), Greek, Hungarian, Indonesian, Italian, Japanese, Korean, Malay, Norwegian, Polish, Portuguese, Portuguese language (ব্রাজিলীয়), Romanian, Russian, Slovene, Spanish, Swedish, Thai, Turkish, Welsh ছাড়া আরও অনেক ভাষা রয়েছে।




ফেসবুক অফিস:
ফেসবুকের শুরুটা হয়েছিল হার্ভার্ডের এক ডরমেটরিতে। পরবর্তী সময়ে ফেসবুক যখন অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তখন ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আলটোতে ফেসবুকের অফিস স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে ফেসবুক ক্যাম্পাস স্থানান্তর করা হয়।







                                                                          ছবিটি পালো আলটোর






                                                                            ছবিটি মেনলো পার্কের




ফেসবুকের কর্মকর্তাগণ:

মুখ্য ব্যক্তি মার্ক জাকারবার্গ প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ডাস্টিন মস্কোভিতস সহ-প্রতিষ্ঠাতা, শেরিল স্যান্ডবার্গ প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা, ম্যাট কোহলার ভাইস প্রেসিডেন্ট পণ্য ব্যবস্থাপনা, ক্রিস হিউজ সহ-প্রতিষ্ঠাতা।



ফেসবুক অফিসের কিছু ছবি:











ফেসবুকের লাইক বাটন নিয়ে ঝামেলা:


ঝামেলা যেন ফেসবুককে কিছুতেই ছাড়তে চায় না। ফেসবুকে আমরা যেই লাইক বাটনটি দেখছি সেটির বিরুদ্ধেও মেধাস্বত্ব লঙ্গনের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে মৃত ডাচ প্রোগ্রামার জোজেভ এভরাডাস ভ্যান মিরের পক্ষ থেকে একটি পেটেন্ট হোল্ডিং কোম্পানি ফেসবুকের বিরুদ্ধে মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগটি আনে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টে দায়ের করা ঐ মামলায় বাদীপক্ষ রেমব্র্যান্ট সোশ্যাল মিডিয়া দাবী করেছে ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাইটে “লাইক” ফিচার ব্যবহারের জন্য এর পেটেন্ট ধারকের কোন অনুমতি নেয়নি। প্রোগ্রামার মিরের পেটেন্ট করা প্রযুক্তির মালিকানা বর্তমানে রেমব্র্যান্টের হাতে। তিনি ২০০৪ সালে তার মৃত্যুর পূর্বে এগুলো ব্যবহার করে একটি সামাজিক যোগাযোগের সাইট “সার্ফবুক” তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যার মেধাস্বত্ব নিবন্ধন হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ ফেসবুক চালু হওয়ার পাঁচ বছর পূর্বে। সার্ফবুক ছিল একটি সামাজিক ডায়েরির মত সেবা, যেটি ব্যবহার করে লোকজন পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করতে পারত। সেখানে তারা “লাইক” বাটন ক্লিক করে বিশেষ কোন কিছুকে সাধুবাদ জানাত। এই সাইটেই প্রথম 'লাইক' বাটন ব্যবহার করা হয়। ফেসবুকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় বলা হয়েছে ফেসবুক এই প্যাটেন্ট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলেও তারা 'লাইক' বাটনকে নিজেদের উদ্ভাবন হিসেবে উল্লেখ করে থাকে, যেটি সঠিক নয়।



তবে নভেম্বর ২০১৩ এ ফেসবুক ঘোষণা দেয় যে তারা তাদের লাইক বাটনের ডিজাইন পরিবর্তন করবেন। নতুনভাবে ডিজাইন করা লাইক বাটনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেসবুকের এফ লেখা নিজস্ব লোগো। এতে আগের লাইক বাটনের বৃদ্ধাঙ্গুলের ছবিটি না থাকলেও থাকছে ফেসবুকের নিজস্ব লোগোর ছবি। নীলের ওপর সাদার পরিবর্তে সাদার ওপর নীল রঙে তৈরি করা হয়েছে নতুন লাইক বাটনটি।







ফেসবুক অ্যাপস নিয়েও রয়েছে ঝামেলা:

ফেসবুকের অ্যাপস এর বিরুদ্ধে রয়েছে ফোন নাম্বার চুরির অভিযোগ। সময়টা ২০১৩ সালের জুলাই মাস। ফেসবুকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগটি করে নরটন। তাদের মতে, এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট ব্যবহারকারীর ডিভাইস থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ফোন নাম্বার চুরি করেছে ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগের এই সাইটটির অফিসিয়াল এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ফোনবুকের সকল নাম্বার তাদের সার্ভারে পাঠিয়ে দিয়েছে। এজন্য ফেসবুক এপে কোন ব্যবহারকারীর লগ-ইন প্রয়োজন হয়না, এবং এমনকি কোন অনুমতিও লাগেনা। এপটি নিজ থেকেই ফোন থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে সেগুলো সার্ভারে পাঠাতে সক্ষম!

তবে নরটনের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে মার্ক জুকারবার্গের নেতৃত্বাধীন ফেসবুক। তারা বলেছে, উল্লিখিত উপায়ে ফেসবুক সার্ভারে যেসব ফোন নাম্বার কপি করা হয়েছে সেগুলো মুছে ফেলা হচ্ছে।


টাইমলাইন নিয়েও রয়েছে ফেসবুকের ঝামেলা:

ফেসবুকে ব্যবহারকারী প্রোফাইলের বর্তমান নাম “টাইমলাইন”নিয়ে অন্য একটি কোম্পানির সাথে আইনী লড়াই চলে আসছিল। ২০১১ সালে ফেসবুক প্রথমবারের মত যখন শব্দগুচ্ছ ব্যবহার শুরু করে তখনই ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করে “টাইমলাইন ইনকর্পোরেশন”নামের ঐ প্রতিষ্ঠান। এরপর কোর্টে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং জায়ান্ট “টাইমলাইন”শব্দটির “সাধারণ”ব্যবহার নীতির বৈধতা প্রমাণে ব্যর্থ হয় এবং এটি তাদের একটি “পণ্য/ সেবা”হিসেবে গণ্য হয়। প্রাথমিকভাবে মামলাটিতে এক প্রকার হেরেই গিয়েছিল ফেসবুক। দুই কোম্পানির মধ্যে ট্র্যায়াল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে উভয় প্রতিষ্ঠান আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছে।


ফেসবুক অফিসের আরও কিছু ছবি:









স্ন্যাপচ্যাট - কে কিনতে চেয়েছিল ফেসবুক:

২০১৩ সালের নভেম্বরে ইমেজ ম্যাসেজিংয়ের জনপ্রিয় সাইট স্ন্যাপচ্যাট – কে কিনতে চেয়েছিলো ফেসবুক। এজন্য ফেসবুক ৩০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব করে। কিন্তু স্ন্যাপচ্যাট এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। স্ন্যাপচ্যাট রাজি হয়ে গেলে এটিই হত ফেসবুকের সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে কেনা কোনো কোম্পানি। ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা স্ন্যাপচ্যাটের গ্রাহক বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে গত মাস ছয়েক সময়ের মধ্যে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ কোটি ইমেজ আদান-প্রদান হয়ে থাকে এই মোবাইল প্ল্যাটফর্মে। 



অন্য কোম্পানিকে কিনতে হুমকি-ধমকিও দেয় ফেসবুক:

টুইটারকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তাও একবার নয় বরং দুইবার টুইটারকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের মাধ্যমে একবার ও আরেকবার টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসিকে হুমকি দিয়ে। হুমকিগুলো ছিল এরকম - ফেসবুকের কাছে টুইটার বিক্রি না করলে টুইটারের মতোই আরেকটি সেবা নিজেরা চালু করবে ফেসবুক। কিন্তু পরবর্তীতে হুমকি ধমকিতে কোনো কাজ না হওয়ায় টুইটার কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসে ফেসবুক। সেখানে টুইটার কর্তৃপক্ষ টুইটারের তখনকার আর্থিক মূল্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার বলে দাবি করেন। এতে জাকারবার্গ রাজিও ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে টুইটারকে আর কেনা হয়নি ফেসবুকের। ২০১৩ সালে টুইটারের আইপিও বা ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং’ অনুসারে এই কোম্পানির আর্থিক মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১.৯ বিলিয়ন ডলারে।


ফেসবুক অফিসের কিছু ছবি:











ফেসবুকের জনপ্রিয়তা কমছে:

২০১৩ সালে এসে স্বয়ং ফেসবুক কর্তৃপক্ষই বলছে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা কমছে। এতে বলা হয় ৩৫ বছরের কম বয়সীরা ফেসবুক ছেড়ে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছুটছে। তারা আরও বলেন, শেয়ারবাজারে ফেসবুক এখনো সুবিধা করতে পারেনি৷ 

এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে যেসব কারণ রয়েছে সে বিষয়ে বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মতে, “ফেসবুক সেকেলে হয়ে গেছে” ইস্যু দেখিয়ে অনেকেই অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছুটছে। আবার অনেকে বলেন, তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটু ভিন্ন মানসিকতার রয়েছে। তরুণরা সবকিছু এক প্ল্যাটফর্মে করার চেয়ে কাজ ভেদে ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ তাই তারা ছবি শেয়ারের ক্ষেত্রে ইন্সটাগ্রাম এবং চ্যাটের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ বা স্ন্যাপচ্যাট বেছে নিচ্ছে৷

অনেকের মতে ফেসবুক তরুণ বান্ধব নয়। কেননা একই প্লাটফর্মে ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা, শিক্ষক সবাই। এসব কারণে তরুণদের মাঝে এই ধারণা জন্ম নিয়েছে যে, ফেসবুক অভিভাবকদের জায়গা। তবে আপাতদৃষ্টিতে এসব কারণে ফেসবুকের তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেননা যে পরিমাণ ইউজার প্রতিদিন ফেসবুক ছেড়ে যাচ্ছে, সে পরিমাণ নতুন ইউজার ফেসবুকে যোগ দিচ্ছে।



ফেসবুক অফিসের আরও কিছু ছবি:









গুগল ও ফেসবুকের মধ্যে রয়েছে ঠান্ডা লড়াই:

গুগল আর ফেসবুকের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই দীর্ঘদিনের। ইন্টারনেট দুনিয়ায় ক্লিকের যে হিসেব-নিকেশ, তাতে ফেসবুক ক্রমেই গুগলের কাছে চলে আসছে, যদিও এখনও ফেসবুকের চেয়ে গুগলের ব্যবহারকারী বেশি। কিন্তু বাণিজ্যিক দিক থেকে কিছুক্ষেত্রে গুগলকে পেছনে ফেলেছে ফেসবুক। আর এজন্যই গুগল ফেসবুককে ঠেকাতে নিয়ে আসছে নতুন নতুন অস্ত্র। যার জ্বলন্ত উদাহরণ “গুগল প্লাস”।






মার্ক জুকারবার্গের ব্যক্তিগত কিছু ছবি: