Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Health Image

কিডনি নিয়ে কিছু কথা ও কিডনির যত্ন











মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের রেচন পদার্থ নিষকাশনের জন্য বিভিন্ন ধরনের রেচন অঙ্গ রয়েছে। এর মধ্যে ফুসফুসের সাহায্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড, ত্বকের সাহায্যে ঘর্ম জাতীয় পদার্থ এবং কিডনির সাহায্যে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ বা মূত্র নিষকাশিত হয়। মূত্র মানবদেহের একটা প্রধান রেচন দ্রব্য এবং কিডনই মূত্র নিষকাশনের প্রধান অঙ্গ...


কাজেই মানুষের প্রধান রেচন অঙ্গ হলো কিডনি। মানুষের উদর গহ্বরের পেছনের দিকে মেরুদন্ডের দুই পাশে একটা করে মোট দুটো কিডনি অবস্থিত। প্রতিটি কিডনি শিমের বিচির মতো আকৃতি বিশিষ্ট। এদের রং খয়েরি লাল। পূর্ণাঙ্গ মানুষের প্রতিটি কিডনি লম্বায় প্রায় ১১-১২ সেন্টিমিটার, প্রস্থে ৫-৬ সেন্টিমিটার এবং ৩ সেন্টিমিটার পুরু। বৃক্কের বাইরের দিক উত্তল এবং ভেতরের দিক অবতল। বাম দিকের কিডনিটা ডান কিডনি অপেক্ষা কিছুটা ওপরে অবস্থান করে। দুই পার্শ্বের কিডনির অগ্রপান্তে অ্যাডরিনাল গ্রন্থ্থি টুপির মতো আচ্ছাদন করে অবস্থান করে। কিডনির পেলভিস অংশের মধ্যে দিয়ে ইউরেটার, স্নায়ু, বৃক্কীয় শিরা ইত্যাদি বের হয়ে আসে। আবার পেলভিসের মধ্যে দিয়েই কিডনি ধমনী, স্নায়ু ইত্যাদি কিডনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। লম্বচ্ছেদ করলে কিডনিকে দুটো অংশে বিভক্ত করা যায়-

১. বাইরের দিকে কর্টেক্সঃ কর্টেক্স ইউরিনিফেরাস নালীকার বাউম্যানস আবরক অংশ এবং গেস্নামেরুলাস অবস্থান করে।

২. ভেতরের দিকে মেডুলাঃ মেডুলাতে নেফরনের অ্যাসেনডিং নালী, ডিসেনডিং নালী, হেনলিরলুপ এবং সংগ্রাহক নালী অবস্থান করে।


কর্টেক্সের বাইরের দিকে তন্তু্তুময় আবরণকে ক্যাপস্যুল বলে। কর্টেক্স হাল্কা রঙের এবং মেডুলা গাঢ় ও কিছুটা কালচে রঙের হয়। মেডুলাতে কয়েকটা মোচাকৃতির খন্ডাংশ থাকে। এদেরকে পিরামিড বলে। পিরামিডগুলো ক্যালিক্স নামে কতগুলো জালিতে প্রসারিত হয়। ক্যালিক্সগুলো একটা প্রশস্ত গহ্বরে উন্মুক্ত হয়। এই গহ্বরকে রেনাল পেলভিস বা রেনাল সাইনাস বলে। পেলভিস এরপর ইউরেটারে উন্মুক্ত হয়।

নেফরন কি?

প্রতিটি কিডনির অভ্যন্তরে প্রায় ১ লাখ নেফরন থাকে। নেফরনই বৃক্কের গঠনমূলক ও কার্যকরী একক। বৃক্কের নেফরনের মধ্যে মূত্র উৎপন্ন হয়। রক্ত থেকে ছাকন পদ্ধতিতে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ নেফরনের বাউম্যানস ক্যাপস্যুলের গহ্বরের প্রবেশ করে, অর্থাৎ এখানেই রক্ত থেকে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ বা মূত্র অপসারিত হয়ে রক্তের পরিশোধন ঘটে। তবে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ কোষীয় পর্যায়ে সৃষ্টি হয়।



আপনার কিডনি কি কি কাজ করে :

১. কিডনি দেহ তথা রক্ত থেকে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ বা রেচন পদার্থ অপসারণ করে
২. রক্তে ক্ষারের সমতা রক্ষা করে
৩. দেহের রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে
৪. দেহে পানির সমতা রক্ষা করে
৫. পরোক্ষভাবে দেহের তাপমাত্রা রক্ষা করে
৬. ভিটামিন ডি তৈরিতে অংশ নেয়
৭. লোহিত কণিকা তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

লক্ষনীয় :

দুটো কিডনির একটি স্বাভাবিক এবং অপরটি সক্রিয় না থাকলেও কোনো অসুবিধা হয় না, এমনকি দুটো কিডনির অর্ধেক নষ্ট হলেও সুস্থ জীবন-যাপন সম্ভব। কিডনির অনত ৭৫ ভাগ কার্যকারিতা হারালে কিডনি বৈকল্যের লক্ষণসমূহ সপষ্টভাবে দেখা যায়। মোট কিডনির শতকরা ৯৫ ভাগ কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেলে আর জীবন বাঁচানো সম্ভব নয়, তখন কিডনি সংযোজন বা ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।

কিডনির অসুখঃ রেনাল ফেইলর

শরীরের ইউরিনারি সিস্টেম (কিডনি, ইউরেটার, মূত্রথলি ও মূত্রনালী)-এর যেসব রোগ আমাদের দেশে বেশি দেখা যায়, তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো-

• ইউটিআইস (ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) বা মূত্রনালীতে সংক্রমণ
• নেফরাইটিস
• ডায়াবেটিসজনতি নেফরোপ্যাথি

উচ্চ রক্তচাপজনিত নেফরোপ্যাথি কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা জানার জন্য বিভিন্ন ধরনের কিডনি ফাংশন টেস্ট রয়েছে। কিডনির কর্মক্ষমতার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। শরীরে ইউরিনারি সিস্টেমের রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে সাধারণত যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয়-

• রুটিন মূত্র পরীক্ষা
• ব্লাড ইউরিয়া
• সেরাম ক্রিয়েটিনিন
• সেরাম অ্যালবুমিন
• সেরাম ইলেকট্রোলাইট
• আলট্রাসনোগ্রাম
• আইভিইউএমসিইউ
• রেনোগ্রাম ইত্যাদি।