Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Beauty Image

গ্রীষ্মে সুস্থ চুল



চুল মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক। বলা হয়ে থাকে, চুলের মূল্য সে-ই বোঝে যার মাথায় চুল নেই। তাই চুল থাকতেই চুলের সঠিক যত্ন নেওয়া উচিত। চুল আমাদের ত্বকের অংশবিশেষ হিসেবেই রোদের তাপ, বিভিন্ন জীবাণুর আক্রমণ ও ধোঁয়া-ধুলার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মাথার ত্বককে রক্ষা করে।

গ্রীষ্মের প্রখর রোদে ত্বকের যত্নের পাশাপাশি চুলের যত্নও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। গরমের সময় ত্বকের যতটা না ক্ষতি করে চুলের ওপর এর চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। এবার জেনে নেওয়া যাক এই গ্রীষ্মে চুলের যত্নে আমরা কি কি করতে পারি-

চুলকে রোদ থেকে আড়ালে রাখা :
গ্রীষ্মে যখন ঘরের বাইরে যাবেন তখন অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন যেন সূর্যের তাপ সরাসরি আপনার চুলে না লাগে। যারা মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহার করেন তারাও ছাতা ব্যবহার করবেন।

নিয়মিত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করা :
গ্রীষ্মকালে গরম ও ঘামের কারণে চুল ও চুলের গোড়ায় অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি ময়লা জমে। তাই এ সময়ে নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করা খুব জরুরি। সাধারণত একদিন অন্তর একদিন শ্যাম্পু করা ভালো। তবে আপনার জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে কীরকম বিরতিতে আপনার শ্যাম্পু করা উচিত। শ্যাম্পু নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পুকে প্রাধান্য দেবেন। আর প্রতিবার শ্যাম্পু ব্যবহারের পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন।

ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট :
গরমে প্রখর সূর্যতাপের কারণে চুল শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যায়। তাই এই সময়ে নিয়মিত চুলের ডিপ কন্ডিশনিং করানো উচিত। এতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

তাপ প্রতিরোধক স্প্রে বা ক্রিম এড়িয়ে চলা :
হেয়ার ড্রায়ার, ফ্লাট আয়রন অথবা কারলিং আয়রন ব্যবহারের পূর্বে তাপ প্রতিরোধক স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার চুলের জন্য উপকারী। তবে গ্রীষ্মকালে এসব স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করলে তার মাঝে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ চুলের মাঝে থাকা ময়লা ও ঘামের সঙ্গে মিশে চুলের ক্ষতি করতে পারে। তাই গরমের সময় এসব ক্রিম ও স্প্রে ব্যবহার না করাই ভালো।

চুলের ড্রাই-ওয়াশ কম করা :
যারা নিয়মিত চুলের ড্রাই-ওয়াশ করেন তাদের গ্রীষ্মকালে চুলের ড্রাই-ওয়াশ কম করা উচিত। কারণ, চুলের মাঝে রয়ে যাওয়া ড্রাই-ওয়াশের রাসায়নিক উপাদানসমূহ ঘাম ও ময়লার সঙ্গে মিশে চুলের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।

কালারে বিশেষ যত্ন :
যারা চুলে রং করিয়েছেন তাদের অন্য সময়ের তুলনায় গ্রীষ্মকালে চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। কৃত্রিম রং চুলকে তাড়াতাড়ি শুষ্ক করে ফেলে। গ্রীষ্মকালে যখন তাপমাত্রা বেশি থাকে তখন তা চুলকে আরও দ্রুত শুষ্ক ও রুক্ষ করে চুলের ক্ষতি করে। তাই এই সময়ে রঙিন চুলের শুষ্কতা ও রুক্ষতা কমানোর জন্য চুলের বিশেষ পরিচর্যা যেমন নিয়মিত তেল লাগানো উচিত।

গ্রীষ্মের এই সময় চুলের কিছু সমস্যা-
গরমে চুলের ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতার সৃষ্টি হয়। এগুলো চুলকে ক্ষতিগ্রস্তই করে না এবং চুল পড়ায় অনুঘটক হিসেবেও কাজ করে। এমনি কিছু প্রতিকূলতা হলো-

গরমে চুলের গোড়ায় প্রচুর ঘাম জমে। ফলে মাথার ত্বক সর্বদাই ভেজা থাকে বলে সেখানে প্রচুর ময়লা জমে। এতে চুল পড়ে। খুশকি হয়, এমনকি ফাঙ্গাল ইনফেকশন সৃষ্টি হয়।

প্রচণ্ড ধুলা-ময়লা চুলে জটের সৃষ্টি করে। চুলে রুক্ষতা আসে, ডগা ফাটে। প্রখর সূর্যতাপ চুলকে শুষ্ক করে ফেলে। গ্রীষ্মে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে যকৃতে নানা অসুবিধা হয়। ফলে চুলের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করলে এবং চুলের যত্ন নিলে তা চুলকে ক্ষতিগ্রস্তের হাত থেকে রক্ষা করে এবং চুল ও মাথার ত্বককে সুস্থ রাখে।

চুলের পরিচর্যা
গ্রীষ্মে একদিন পরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে কন্ডিশনার লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে ভেষজ উপাদান ব্যবহার করাই উত্তম। এ ছাড়াও প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে শ্যাম্পুর সঙ্গে পানি মিশিয়ে শ্যাম্পুটিকে হালকা করে নিতে হবে।

সপ্তাহে অন্তত একদিন শ্যাম্পুর এক ঘণ্টা আগে চুলে তেল ব্যবহার করতে হবে। চুলের শুষ্কতা দূর করতে একটি পাকা কলা, টকদই ও মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এতে শুষ্ক ও রুক্ষ চুলের মসৃণতা আসে।

প্রখর রোদে চুল বেশি রুক্ষ হয়ে গেলে বেলের শাঁসাল অংশের সঙ্গে মধু ও সামান্য ডাবের পানি মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে ৪০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

রোদে ঘুরে যাদের প্রচুর কাজ করতে হয়, তাদের চুল সূর্যের অতিরিক্ত তাপে প্রাণহীন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে এক কাপ হেনা, আধাকাপ চায়ের লিকার, ২ চামচ ভিনেগার, আমলকির রস, একটা ডিম ও নারিকেলের দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন।