Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Beauty Image

শীতকালীন ত্বকের যত্ন



দেখতে দেখতে শীতকাল চলে এসেছে আর শীতকাল মানেই প্রকৃতির সাথে সাথে আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠার পাশাপাশি ত্বকে কালচে, মলিন হয়ে যয়। আর এই শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল চেহারার জন্য এ সময়ে দরকার বাড়তি কিছু ত্বকের যত্ন এবং সেই যত্ন অবশ্যই হতে হবে যথাযথ। একটু সচেতন হয়ে সঠিক এবং সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করলেই শীতকালের ত্বক ও চুল উজ্জ্বল আর মসৃন রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নেই শীতকালীন ত্বকের যত্ন কীভাবে নিবো-

১. মুখে ও হাতে-পায়ে ভাল মানের ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করুন। প্রতিবার হাত-মুখ ধোয়ার পর ভেজা ‍অবস্থায় ব্যবহার করুন এতে বজায় থাকবে ত্বকের আদ্রতা। আর শীতকালে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের সবচেয়ে ভালো সময় হল গোসলের পর এবং রাতে শোবার আগে। শীতকালে আমাদের ত্বক থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি শুকিয়ে যায় যার কারণে হাত-পায়ের চামড়ায় টানটান ভাব আসে আর ময়েশ্চারাইজারের কাজ হল শরীরের পানির অভাব পূরণ করে ত্বককে সজীব ও মোলায়েম করে তোলা।

২. নিয়মিত ফেস প্যাক ব্যবহার... যা অন্য সময়ের থেকে হবে একটু আলাদা-
ময়দা, পাকা কলা ও পাকা পেপে এক সঙ্গে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এই পেস্টটি ১০/১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃন।

৩. কখনোই ‍জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না। কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মধুর সাথে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট কখনোই ফেটে যাবে না। পেট্রোলিয়াম জেলিও ব্যবহার করতে পারেন।

৪. গোসলে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন আর সম্ভব হলে গোসলের সময় পানিতে কয়েক ফোঁটা বাদাম তেল দিয়ে নিলে তা ত্বককে আর্দ্র এবং মসৃণ করতে সহায়তা করে। আর শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে মাঝে মাঝেই মুখে পানির ঝাপটা দিন। এতে সহজে ত্বক শুষ্ক হবে না। কখনই খুব ঠাণ্ডা বা খুব গরম পানি ব্যবহার করবেন না। অবশ্যই শীতকালে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৫. শীতকালে রোদ ও ধুলো ময়লায় হাত ও পায়ের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু খুব সহজেই হাত ও পায়ে ফিরিয়ে আনতে পারেন হারিয়ে যাওয়া উজ্জলতা ও কোমলতা। একটি লেবু কেটে হাত ও পায়ে ঘষে নিন। এরপর কুসুম গরম পানিতে লিটারে ১ চা চামচ লবন দিয়ে পানিতে হাত ও পা ডুবিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। চাইলে পানিতে সামান্য শ্যাম্পুও দিতে পারেন। তারপর একটি মাজুনি বা পিউমিক স্টোন দিয়ে আলতো করে হাত ও পা ঘষে মরা চামড়াগুলো উঠিয়ে নিন। এরপর হালকা কুসুম গরম পানিতে হাত ও পা ভালোভাবে ধুয়ে, মুছে- অলিভ অয়েল লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে ২ দিন এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

শীতকালে পা ফাটা একটা বিরক্তিকর সমস্যা। অনেকের ক্ষেত্রে এটা গুরতর আকার ধারন করে। কিন্তু একটু সচেতনতায় পারেন পা ফাটা থেকে রেহাই পেতে।
যদি পা ফাটা একটু বেশী খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তবে প্রতিদিন ব্যাবহার করার চেষ্টা করুন এই দুটি থেকে একটি প্যাক । খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

* ১ চা চামচ পেট্রোলিয়াম জেলির সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, ১ চা চামচ মধু, ২ চা চামচ গিস্নসারিন, ১ চা চামচ মুগডাল বাটা, ২ চা চামচ গোলাপজল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে পুরো পায়ে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই প্যাক লাগালে পা ফাটা থেকে মুক্তি পাবেন।

* একটি কলা পিষে নিয়ে এতে ২/৩ চা চামচ নারকেল তেল দিয়ে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে লাগান। বিশেষ করে ফাটা স্থানে ভালো করে লাগাবেন। শুকিয়ে এলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পায়ে যেন বাতাস না লাগে এমন জুতা পড়ে বাইরে বের হোন। আর বাসায় সব সময় স্লিপার বা সুতির মোজা পরার অভ্যেস করুন এবং ভ্যাসেলিন, গ্লিসারিন ব্যবহার করুন নিয়মিত।

৬. শীতকালে মাথার ত্বকে ছোটছোট ফুসকুড়ি ওঠে ও খুশকির সমস্যা দেখা যায় আবার চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং আগা ফেটে যায়। কিছু নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যাগুলো এড়িয়ে যেতে পারবেন-

*শীতকালে কখনোই ভেজা চুলে বাইরে বের হওয়া উচিৎ নয়। এতে করে চুলের আর্দ্রতা নষ্ট হয় এবং চুল ভেঙে যায়। চুল এবং মাথার তালুর আর্দ্রতা ধরে রাখতে হ্যাট পড়ুন। তবে হ্যাটটি যাতে বেশি টাইট না হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন।

*রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে ম্যাসাজ করেন নিন। চুলের আগায় ও গোড়ায় ভালো করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যান। সারা রাত চুলে তেলের উপস্থিতিতে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।

* লেবুর রসের অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান খুশকি থেকে মাথার ত্বককে দূরে রাখে।

একটি লেবুর রস, ১/২ টেবিল চামচ নারকেল তেল, ১ টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল। সবগুলো উপাদান একসাথে মিশিয়ে নিন। এরপর মাথার ত্বকে বিশেষ করে ফুসকুড়ি ও খুশকি আক্রান্ত স্থানে ভালো করে লাগান এই মিশ্রণ। ১ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রসের সাইট্রিক অ্যাসিড মাথার ত্বকের সব সমস্যা দূর করে ও খুশকি মুক্ত করে।
শীতকালে নানা রকম যত্নে আমাদের ত্বকের বাইরের ‍অংশের আর্দ্রতা আমরা ধরে রাখতে পারি। কিন্তু আমাদের শরীরের ভেতরটা আর্দ্রতা ধরে রাখতে হলে প্রচুর পরিমান পানি পান করতে হবে। সচেতনতার সাথে সব নিয়ম মেনে সুস্থ্য থাকুন।