সংস্কৃত ‘দ্বীপমালা’ শব্দ থেকেই মালদ্বীপের উৎপত্তি। আবার অনেকে মনে করেন- ‘মালে দিভেই রাজে’-এই কথা থেকে মালদ্বীপ শব্দটির উদ্ভব। ‘মালে দিভেই রাজে’-এই কথার অর্থ, ‘দ্বীপরাজ্য’। ‘মহলদ্বীপ’ থেকেও মালদ্বীপের উৎপত্তি অনেকে মনে করেন। মহল মানে প্রাসাদ। ২৬ টি অ্যাটোল নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ। অ্যাটোল মানে লেগুন ঘেরা প্রবালদ্বীপ। ২৬ টি অ্যাটোল আর ১১৯২ টি ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ দেশ। এর মধ্যে মাত্র ২০০টি বাসযোগ্য।
ইতিহাস থাক। মালদ্বীপ হচ্ছে স্বর্গরাজ্য। প্রকৃতি তার অপরূপ রূপ যেন ঢেলে দিয়েছে সেখানে। বিশাল সমুদ্র, নীল আকাশ আর প্রবাল দ্বীপ। দ্বীপে দ্বীপে অসাধারণ সব সমুদ্র সৈকত। মধুচন্দ্রিমার জন্য পারফেক্ট চয়েস নাকি মালদ্বীপ। ঈদ-পূজোর ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন মালদ্বীপ থেকে। দেখে আসতে পারেন মালদ্বীপের বিস্ময়কর এক সমুদ্র সৈকত। সেই সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ঢেউয়ের সাথে ভেসে আসে লক্ষ লক্ষ তারা। মিথ্যে বলছি না একদম! দেখুন ছবিতেই কেমন লাখে লাখে তারা সৈকতে নেমে এসেছে। বিস্ময়কর না?
সৈকতে যেন তারাবাতি জ্বালিয়ে দিয়েছে কেউ। এই তারাবাতির রহস্য প্রকৃতির আরেক রহস্য। মনে হয় প্রকৃতি সৈকতকে সাজিয়ে দিয়েছে ফ্লুরোসেন্ট লাইটে। মিটিমিট নীল আলোয় তাক লাগানো এক বিস্ময়কর সুন্দর। এই উজ্জ্বল নীল আলো আর কিছুর নয়, এক ধরণের সামুদ্রিক ফাইটোপ্লাঙ্কটনের। ফাইটোপ্লাঙ্কটনের নাম ডিনোফ্লাজেলাটিস। এইসব ফাইটোপ্লাঙ্কটনে রয়েছে লুসিফেরাস নামক রাসায়নিক উপাদান যা আলো সৃষ্টি করতে পারে।
জোনাকি, জেলিফিসের মতো অনেক জীবেরই আছে আলো তৈরির করার ক্ষমতা। জীবের আলো তৈরি করার এই ক্ষমতাকে বলে Bioluminescence। এটা অবশ্যই প্রকৃতির এক আশ্চর্য ঘটনা। সাধারণত নিজেদের আত্মরক্ষা, শিকার ধরা, আক্রমনকারী প্রাণীকে বিভ্রান্ত করা জন্য এইসব ফাইটো প্লাঙ্কটন আলো বিচ্ছুরণ করে।
যাইহোক, বলাই তো হয়নি কোন সৈকতে এইরকম নীল আলোর দেখা মিলে। মালদ্বীপের ভাধু দ্বীপের সৈকতে এই দৃশ্য দেখতে পারবেন। মালে থেকে ১৯৪ কিলোমিটার দূরে রা অ্যাটোলে এই সৈকত রয়েছে। ১.৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে আর প্রস্থে ০.৪ কিলোমিটার এই দ্বীপে লোকসংখ্যা ৫৫০ জন।