Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Entertainment Image

নিষিদ্ধ হিন্দি গান: আনন্দে শঙ্কায় শিল্পীরা



হিন্দি ও উপমহাদেশিয় ভাষার গান নিষিদ্ধ করেছেন উচ্চ আদালত। হিন্দি গান ও উপমহাদেশিয় ভাষার গান বাংলাদেশের মোবাইল ফোনে নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি একদিকে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য আনন্দের সংবাদ বয়ে এনেছে। অপরদিকে রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউনের রয়ালিটি নিয়েও এখনো শিল্পীদের রয়েছে শঙ্কা। কারণ তারা রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন থেকে ন্যায্য রয়ালিটি পান না। ফলে একই সঙ্গে আনন্দ ও শঙ্কাতেও ভুগছেন শিল্পীরা। তারা এমনটাই জানিয়েছেন প্রিয়.কমকে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সুদীপ্ত সাইদ খান।

৯ জুলাই উচ্চ আদালত ফোনের রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে হিন্দি, ভারতীয় বাংলা ও উপমহাদেশিয় গান নিষিদ্ধ করে একটি রুল জারি করেছেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ৯ জুলাই এ আদেশ দেন।
আমদানী নীতি ২০১২-১৫-এর ৪৯ ধারা মোতাবেক ভারতীয় ও উপমহাদেশিয় ছবি এদেশে অমদানী করা যাবে না। সে বিধি অনুযায়ীই ওয়েলকাম টিউন হিসেবে উপমহাদেশিয় গান ব্যবহার করা যাবে না। এ কারণেই মোবাইল ফোনের কনটেন্ট প্রোভাইডারদের এসব গান ব্যবহার কেন নিষিদ্ধ করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাবও চেয়েছেন আদালত।

আরও জানা যায়, এমআইবি সভাপতি আরিফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহেদ আলী পাপ্পুর করা এ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফোনে হিন্দি গান রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। বিষয়টি তথ্যসচিব, সংস্কৃতিসচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, বাণিজ্য সচিব, অর্থসচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও সব টেলি কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে কি ভাবছেন আমাদের দেশিয় সংগীতশিল্পীরা। আসুন জানা যাক সে কথা।

আইয়ুব বাচ্চু
উচ্চ আদালত আইন করে হিন্দি ও উপমহাদেশিয় গান নিষিদ্ধ করছেন এটা আনন্দের সংবাদ। আমি আশাবাদী। তারপরও একটা শঙ্কা রয়ে যাচ্ছে, রয়ালিটির ব্যাপারটা নিয়ে। যদিও এই বিষয়টা বিশেষজ্ঞরা ভাল বলতে পারবেন কপিরাইট কার হবে। শিল্পীর কতটা, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কতটা হবে। তবে সরকারের এ আইনকে স্বাগত জানাচ্ছি। যদি সঠিকভাবে রিংটোন ওয়েলকাম এর স্বচ্ছ ব্যবহার করা হয় তাহলে এই ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাবে। ওয়েলকাম রিংটোন আর অনলাইনের বাজারে গানের মার্কেটিংয়ের ফলেও আমরা লাভবান হবো। কিন্তু এ মাধ্যমেও যদি নকল আর পাইরেসি ঢুকে যায় তাহলে শিল্পীদের জীবন ধারণের জন্য অন্য পন্থা খুঁজতে হবে। এমনিতেই আগে আমার গান ফুটপাত থেকে নিয়ে কনটেন্ট প্রোভাইডার হিসেবে নিজের নামে বিক্রি করে টাকা ঘরে নিয়ে গেছে অসাধু ব্যক্তিরা। এদেরকে মার্কেট থেকে বিতাড়িত না করলে আমাদের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। তখন হয় তো সঙ্গীত শিল্পীদের জীবন ধারণের জন্য অন্য কোন পন্থা খুঁজতে হবে।

শাফিন আহমেদ
প্রথম কথা হচ্ছে হিন্দিগান ও উপমহাদেশিয় গান রিংটোন ওয়েলকাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভাল খবর। সেদিক থেকে আমি বেশ আনন্দিত। একটা বড় ধরনের আগ্রাসন বন্ধ করা হলো। তবে এটি পুরোপুরি সমাধান নয়, কারণ সঙ্গীতকে ভাষাগতভাবে ব্ন্ধ করা যাবে না। হিন্দি গান বন্ধ হলো এবার যদি ইংরেজি গানও তো চলতে পারবে। এক্ষেত্রে জরুরি বাংলা গানকে আরও ভালো করার উদ্যোগ নেওয়া। তবে হিন্দি গান বন্ধের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ যে এটা বন্ধ হচ্ছে। কারণ যারা কনটেন্ট প্রোভাইডার হিসেবে যে কোম্পানিগুলো কাজ কর তাদের মধ্যে বড় কোম্পানি দুটিই ভারতীয়। তারা হিন্দি গানকেই প্রমোট করতো। যদিও কোনো ভাষা বন্ধ করা দৃষ্টিকটু হলেও আমাদের শিল্পীরা আর্থিকভাবে লাভবান হলো। আর রিংটোন, ওয়েলকাম টিউনের রয়ালিটির ব্যাপারটা হচ্ছে কনেটেন্ট প্রোভাইডারের মাধ্যমে আসে। এক্সেত্রে অনেকগুলো ধাপে এগুতে হয়। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় আমাদের সমঝোতা করে চলতে হয়।

ফাহমিদা নবী
দেশের গান দেশের ফোনে বাজবে এটাই আমাদের কাম্য ছিলো। উচ্চ আদালতের রুলে এবার সেই কামনা সত্যি হতে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য সত্যিই আনন্দের খবর। একই সঙ্গে বলবো রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে যে আমাদের গান ব্যবহার করা হয় তার ন্যায্য রয়ালিটি কিন্তু আমরা পাই না। দু’একটি কোম্পানি স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলেও বেশিরভাগ কোম্পানিই আমাদেরকে সঠিক হিসাব দেন না। এই সিস্টেমটা বদলানো দরকার। সেই সঙ্গে যদি আগোরা, নন্দনের মতো বড় বড় সুপারশপগুলোতেও আমাদের গান বাজে সেদিকেও নজর দিতে হবে। সবমিলিয়ে বাংলা গানকে বাঁচানোর জন্যই বাংলা গানের আরো প্রচার করার উদ্যোগ নিতে হবে।

বাপ্পা মজুমদার
এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য সুসংবাদ। শুধু রিংটোনে হিন্দি বা উপমহাদেশিয় গান বন্ধ করলে হবে না সঠিকভাবে আমাদের গানগুলোর প্রচার ও মানুষের কাছেও তুলে ধরতে হবে। আর রিংটোন, ওয়েলকাম ও ডিজিটালি প্রকাশিত হওয়া গানের সঠিক রিপোর্ট আমরা পাই না। এর জন্য আমি মনে করি মনিটিরিং সেল তৈরি করা উচিত। রিংটোন, ফুল সং, সব জায়হগাতেই সঠিক মনিটিরিং করা দরকার। কোম্পানিগুলো আমাদের সঙ্গে যখন চুক্তি করে তখন বলে যে সব রিপোর্ট ঠিকটাকমতো দেখানো হবে কিন্তু আদতে ঘটে তার উল্টো। কেউই আমাদের প্রপার রিপোর্ট দেয় না।

সাইদ হাসান টিপু
হিন্দি গান ও উপমহাদেশিয় গান বাংলাদেশের মেবাইল ফোনে নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে আনন্দের খবর। কিন্তু আমরা পুরোপুরি আনন্দিত হতে পারি নাই। দুঃখের সঙ্গেই জানাতে হচ্ছে আমরা কখনোই রিংটোন ওয়েলকাম টিউন থেকে টাকা পাই নাই। আমার গান রিংটোন হিসেবে বাজবে এটা আনন্দের, কিন্তু আমার গানের আমি রয়ালিটি পাবো না এটাও দুঃখজনক। আমি মনে করি নিয়মনীতিগুলো ঠিক করে শিল্পীদের সঠিক রয়ালিটি দেওয়া উচিত।

হায়দার হোসেন
হিন্দি গান নিষিদ্ধ করার ব্যাপারটি ভাল। কিন্তু গান তো জোর জবরদস্তি করে বন্ধ করা যাবে না। কারণ হিন্দি গান বন্ধ করলে শুধু হবে না বাংলা গানের প্রচারও চালাতে হবে। আর বিজ্ঞাপনে বিদেশি নারীদের আমরা দেখতে চাই না। আমার কাছে পণ্য বিক্রি করবে সে পণ্যের বিজ্ঞাপনে কাজ করবে অন্যরা এটা কিভাবে হয়। আমারর দেশের বিজ্ঞাপনের গান, মডেল, টেকনিশিয়ান থেকে সবকিছিুই আমার দেশের হতে হবে।রিংটোনের রয়ালিটির ব্যাপারটাতেও নজর দিতে হবে সরকারকে। কারণ এখনো কোম্পানিগুলো সেভাবে দাঁড়ায় নি। তাদেরে স্বছতার অভাব রয়েছে।

তৌসিফ
হিন্দি ও উপমাহদেশিয় গান বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আমি আনন্দিত । কিন্তু দুঃখ হচ্ছে সঠিক হিসাবটা আমরা পাই না। রয়ালিটির ব্যাপারে আমি বলবো আমাদের যারা কনটেন্ট প্রোভাইডার তারা জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ না। ফলে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। যদিও গ্রামীণফোনের মতো বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এখন এগিয়ে এসেছে ফলে আমাদের লাভবান হওয়ার স্বপ্নও দেখছি।

কনা
এ খবরে আমি অবশ্যই আনন্দিত। এতে করে বাংলা গানের প্রতি মানুষের আরও বালোবাসা বাড়বে। আর শিল্পীরা যে তাদের ন্যায্য রয়ালিটি টা পাচ্ছে না এটা দুঃখজনক। আমি চাই রিংটোন ওয়েলকাম টিউনের ন্যায্য সম্মানিটা শিল্পীদের দেওয়া হোক।

কর্ণিয়া
এটা আমাদের সত্যিই সুখবর। হিন্দি গান রিংটোনে ব্যবহারের ফলে আমাদের গান তেমন মার খেয়ে যেতো। হিন্দি গান বন্ধ হোক এটা আমাদের চাওয়া ছিলো দীর্ঘদিনের। আর রয়ালিটির ব্যাপারে বলবো সবকিছু আরও স্বচ্ছ হলে আমাদেরকে আর শঙ্কায় থাকতে হবে না।