Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

বিপুল হাজং

১০ বছর আগে লিখেছেন

হাজং রমণীদের বারোমাসী গানঃ ঐতিহ্যবাহী রসিগীত (অনুবাদ)

( বিঃদ্রঃ হাজং জাতিসত্তার সংস্কৃতি বাংলার সংস্কৃতিকে করেছে বৈচিত্র্যময় এবং সমৃদ্ধ । বাংলা ভাষী এবং বাংলা জানেন এমন অন্যদের কাছে উপস্থানের জন্য এই অনুবাদটি করেছি )

 

এই গীত হাজং রমণীদের বারোমাসী গানঃ ঐতিহ্যবাহী রসিগীত যাকে বাংলায় অনুবাদ করলেঃ-

 

০১ । অগ্রাহায়ন

 

সাধুরে,

আগুন মাসে গো সাধু ক্ষেত ভরা ধান ,

কেহ কাঁটে, কেহ মারায়, কেহ করে নবান ।

নবান করিয়া সাধুরে মহানন্দে খায় ,

সেই সময় আমার সাধু বানিজ্যেতে যায় ।

বানিজ্যেতে গিয়ে সাধু আমায় রইলে ভুলে ,

ধরেছে ডালিম ফল খেতে না দিলে ।

কাঁচা ডালিম খেলে সাধু দাঁতে লাগে কষ ,

পাঁকা ডালিম খেলে সাধু মিলে মধুর রস ।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

........................................

 

০২ । পৌষ 

 

সাধুরে,

পৌষ মাসে গো সাধু পুঁজি অধিকারী ,

পতি ভক্তি করে যারা ভাগ্যবতী নারী ।

পতি ধন, পতি মন, পতি সকল সার ,

পতি বিনে নাইরে গতি এই ভব সংসার ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

............................................

 

০৩ । মাঘ

 

সাধুরে,

মাঘ মাসেতে সাধু লাগে ভীষন জার ,

কাঁথা-বালিশ নিয়া আমি কান্দি বারে বার ।

সাধু আমার শীতের কাঁথা সাধু আমার প্রান ,

ঘরে থাকলে সাধুরে আমি জড়িয়ে শুইতাম ।

সাধু আমায় গেছে ফেলে দূর পরবাসে ,

এত বেশী শীতে আমার কেমনে প্রাণ বাঁচে ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

...............................................

 

০৪ । ফাল্গুন

 

সাধুরে,

ফাল্গুন মাসেতে সাধুরে ফাল্গুয়া খেলে রাজা ,

হাতির কপালে দেখি সিঁদুরের ফোঁটা ।

সিঁদুরের ফোঁটা আর চন্দনের ফোঁটা ,

যে নারীর পতি নাইরে মনে কত ব্যাথা ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

..................................................

 

০৫ । চৈত্র

 

সাধুরে,

চৈত্র মাসেতে সাধুরে খরায় মারে টান ,

পানির তৃষ্ণা লাগে সাধু বাঁচে না এ প্রাণ ।

রান্না করে ভাত আমি ঢেলে রাখি পাতে ,

কোথায় আছে আমার সাধু বলবো কার কাছে ।

সাধু যদি থাকতো বাড়ী খেতো গাভীর দুধ ,

রাত-দিন সাধুর সাথে করতাম কৌতুক ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

................................................

 

 

০৬ । বৈশাখ

 

সাধুরে,

বৈশাখ মাসেতে সাধুরে জন্মে পাখির ছাও ,

গাছের আগা থেকে ছাও করে কত রাও ।

পাখির মত কেঁদে ভাসাই ঘরের কোনে বসে ,

সাধু আমার রইলো ভুলে কোন যুবতী পেয়ে ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

.................................................

 

০৭ । জৈষ্ঠ্য

 

সাধুরে,

জৈষ্ঠ্য মাসেতে সাধুরে ক্ষেত-খোলায় ধান ,

ডাহুক ডাকে, কুড়া ডাকে কাঁপে আমার প্রাণ ।

ডাহুক ডাকে, কুড়া ডাকে, ডাকে কত পাখি ,

যে নারীর স্বামী নাইরে আক্ষেপে কাটে রাতি ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

...............................................

 

০৮ । আষাঢ়

 

সাধুরে,

আষাঢ় মাসেতে সাধু সবাই করে আশা ,

বনের বাবুই পাখিগুলো তারাও বাঁধে বাসা ।

জোড়া জোড়া মিলে থাকে বনের বাবুই পাখি ,

আমি শুধু অভাগিনী একা ঘরে থাকি ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

...............................................

 

০৯ । শ্রাবণ

 

সাধুরে,

শ্রাবণ মাসেতে সাধু শ্রাবণ ব্রত করে ,

দৈ-চিরা খায়রে সবাই গোষ্ঠী নিয়ে ঘরে ।

আমার সাধু নাইরে ঘরে ভেবে দিন যায় ,

দৈ-চিরা নইয়ে কাঁদি হায়রে হায়রে হায় ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

.................................................

 

১০ । ভাদ্র

 

সাধুরে,

ভাদ্র মাসেতে সাধুরে পেঁকে পড়ে তাল ,

তালপিঠা বানিয়ে আমি রাখি কতকাল ।

কেহ চায় আঁড়ে আঁড়ে, কেহ চেয়ে থাকে ,

আর কতকাল রাখি যৌবন লোকের বৈরী হয়ে ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

....................................................

 

১১ । আশ্বিন

 

সাধুরে,

আশ্বিন মাসেতে সাধুরে মন্ডপেতে গিয়ে ,

কত নারী করে পূজা গন্ধধূপ দিয়ে ।

মন্ডপেতে গিয়ে আমি চেয়ে নেবো বর ,

কোথায় আছে আমার সাধু ফিরে আসুক ঘর ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

...................................................

 

১২ । কাতিক

 

সাধুরে,

কাতিক মাসেতে দিবো বাস্তুভূমির বাঁতি ,

আমি নারী কেঁদে মরি ধরে সাধুর ছাতি ।

দিন গেলো  মাস গেলো, গেলো সারা বছর ,

কোথায় রইলো আমার সাধু আমায় কইরা পর ।।

সাধুরে, সেই মাস গেলো সাধু এই মাস গেলো,

কান্দে যুবতী কন্যা হাত দিয়ে কপালে ।।

...............................................

Likes Comments
০ Share

Comments (1)

  • - মাইদুল আলম সিদ্দিকী

    তোমারে রহিব সহসা আমার,

    তীক্ষ্ন অভয় লেখনীতে।

    অথবা তোমারে নগ্ন করিব,

    পথে-ঘাটে, সীমাহীন জনস্রোতে।

     

    অসাধারণ চরণের সমষ্টি অসাধারণই লাগলো। শুভ কামনা রইল কবি

    - মাসুম বাদল

    নির্ভীক কলম আমি, বিদ্রোহী দাবানল,

    তোমারে রহিতে মগ্ন আমি, দুর্নিবার চিরকাল।

     

     

    দারুণ...

    নক্ষত্র ব্লগ-এ কবিকে স্বাগত জানাই...

    - আদম সন্তান

    চমৎকার, শুভ হোক আপনার ব্লগিং.................

    Load more comments...