অনেক দিনের পরে আজ আবার আমার গোপন সমরাস্ত্র হাতে তুলে নিলাম। তবে, এবার পদ্যের কোমলতা ছেড়ে, গদ্যের মধ্যে দিয়েই শুরু হোক ছন্দপতন।
আজকাল, বড় বেশি মাথা চারা দিয়ে উঠেছে যে শব্দটা, তার নাম “বিশ্বায়ন”! বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিবিদ্যার কল্যাণে বিশ্ব আজ মানুষের হাতের মুঠোয়। অথচ, কি অদ্ভুতভাবে এই বিশ্বায়নের মোড়কে মুড়ে মানুষ আজ প্রতিনিয়ত আত্মকেন্দ্রে ঘুরপাক খায়! খবরে খবরে “সেলিব্রিটি”দের অন্দরের খবর পাওয়া যায়, পাশের বাড়ির মৃতপ্রায় মানুষটার খোঁজ পাই না। সোমালিয়া-ইথিওপিয়া দারিদ্রের চরম সীমায় পৌঁছায়। এক মুঠো খাদ্য যেখানে দিবাস্বপ্নের মতো, এক ফোঁটা জলের জন্য সেখানের মানুষগুলো মাসের পর মাস শুষ্ক মরুপথ পায়ে হেঁটে পাড় হয়ে যায়। পথেই জীবন,পথেই মরণ। মা তাই তার ধুকধুক করে বেঁচে থাকা সদ্য-প্রসূত সন্তানটিকে ফেলে দিয়ে যায়, পথের প্রান্তে,মৃত্যুর গ্রাসে! তবু, খাদ্য নেই, বস্ত্র নেই, বাসস্থান নেই, মুক্তি নেই, বন্ধনও নেই। আছে শুধু নিরন্তর এগিয়ে চলার মরণপণ। আছে বিশ্বায়ন।
এদের দায়িত্ব কার? ক্লাসের ভালো ছাত্র হিসেবে খ্যাত আমার এক পরিচিত আমায় উত্তর দিয়েছিল, “এইসব সেন্টিমেন্টাল ডায়লগ মিটিং-মিছিলে ভালো চলে রে, বাস্তব পরিস্থিতিতে নয়। এইসব ‘দায়’ তোর-আমার মতো সাধারণ মানুষের নয়। এসবের জন্য তো দেশের সরকার, এন.জি.ও., স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো রয়েইছে। তাই না?” আমি সেইদিন এর কোন উত্তর দিতে পারিনি। মনে মনে ভেবেছিলাম, কবে কোন এন.জি.ও. দল এই দুস্থ মানুষগুলোর প্রয়োজনের চেয়েও নগন্য কিছু খাদ্য-জল বা ওষুধ নিয়ে সেখানে পৌঁছাবে,তবে হয়তো বরাত-জোড়ে অভুক্ত কয়েকটি প্রাণের এক একদিন ক’রে আরও কিছুদিনের দিন গুজরান হবে। পথের প্রান্তে একটা মৃত মায়ের শরীর পড়ে থাকবে। আর তার পাঁজর সর্বস্ব বুকের ভেতর মুখ দিয়ে একটা ছয়-সাত মাসের জীর্ণ প্রাণ একফোঁটা দুধ পাওয়ার আশায় জীবনের শেষ শক্তিটুকুও ব্যয় করে দেবে। তারপর হয়তো, শুরু হবে শকুনের মহাভোজ। কেউ...
continue reading
Comments (28)
বুরুজ আলীর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু গল্পের ক্লাইম্যাক্স তৈরি করেছে। দুই পর্ব মিলিয়ে গল্পটি চমৎকার। আমি প্রিন্ট মিডিয়ার অনেক গল্প পড়ি। অনলাইনেও গল্প আমার প্রথম পছন্দের। তোমার এই গল্পটি সেসব গল্পের পাশে রেখে নাম্বারিং করলে চোখ বুজে ১০০তে ৮০/ ৮৫ নম্বর দেওয়া যায়।
একটা কথা। ১ম পর্বের মন্তব্যে যা বলেছিলাম, এই গল্পে উপন্যাসের বৃহত্তর ক্যানভাস সুস্পষ্ট। আরও কিছু চরিত্র ও ঘটনা তৈরি করে অনুচ্ছেদওয়ারী লিখলে এটি একটি সুলিখিত উপন্যাস হতে পারে। চমৎকার গল্পের জন্য ধন্যবাদ, প্রিয় ঘাস ফুল। লিখতে থাকো। তুমি সফল হবে, এ বিশ্বাস আমার আছে।
আপনার মতো লেখকের এমন মন্তব্য আমার কাছে হাতে আসমান পাওয়ার মতো হেনা ভাই। ইচ্ছা করলে এই গল্পটাকেই আরও বৃহৎ আকারে উপস্থাপন করা যেত কিন্তু আমি হলাম অলস ব্লগার। তাই বেশী বড় করে লেখার ইচ্ছা হয় না হেনা ভাই। আপনার এই মন্তব্য হয়তো ভবিষ্যতে আমাকে বড় কোন লেখা লেখতে সাহায্য করবে। ধন্যবাদ হেনা ভাই। শ্রদ্ধা আর সালাম নিবেন।
গল্পটা মনযোগ দিয়েই পড়লাম, প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব। কিন্তু, আলোর মা'কে দেখে কান্নার কারণটা বুঝতে পারলাম না। আবার দেখে আসি, প্রথম পর্বটা।
আপনাকে একজন মনোযোগী পাঠক হিসাবে পেয়ে নক্ষত্রব্লগ নিঃসন্দেহে উপকৃত হয়েছে। আপনার পদচারনায় নক্ষত্রব্লগ আরও আলোকিত হবে। কান্নার কারণটা ইতিমধ্যেই নিজেই আবিষ্কার করে ফেলেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনার মতো পাঠকই সবাই খুঁজে বেড়ায়। ধন্যবাদ যূথী।
এইবার বুঝেছি। ভালো করে পুনরায় পড়ে দেখলাম।
উদ্ধার করেছেন জেনে খুশি হলাম যূথী। ধন্যবাদ।