Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

কবি ও দার্শনিক

১০ বছর আগে লিখেছেন

♥ ♥ ♥ রুপার বসন্ত দিনে ♥ ♥ ♥

 

         মাথার ওপর খা-খা রোঁদ । তৃষ্ণায় বুকের ছাতি ফেটে যায়-যায় অবস্থা । এ সময় কচি ডাব খেতে পারলে ভালো লাগতো । এক হাতি বাঁকা দা দিয়ে ডাবওয়ালারা বেশ সুন্দরভাবে কচাং-কচাং করে ডাব কাটে । এই কর্তন শিল্প বেশ প্রশংসনীয় । ডাবকে এক হাতের তালুতে নিয়ে ঘাড়ের দিক থেকে কাটে ।কেটে একটা শেপ দেবার পর দা’য়ের আগা দিয়ে মাঝ বরাবর ঘাই দিতে হয় । ঘাই দিলেই পুচুৎ করে ডাবের পানি ছিটকে আসে । ভেতরের সেই পানি মুখে দিলেই আহ কি শান্তি !

       রাস্তায় চলমান রিক্সার টুং-টাং শব্দ । রিক্সাওায়ালাদের বেশিরভাগেরই গায়ে স্যান্ডো গেঞ্জি । তাদের গা থেকে দর-দর করে ঘাম ঝরছে । সোনালি রোদ তাদের গায়ে লাগায় শরীরে চিকচিকে ভাবএসেছে । অনেকক্ষণ যাবৎ সেটা মুগ্ধ নয়নে দেখছি । ঘর্মস্নানের কি কি উপকারিতা আছে সেটা ভাবার চেষ্টায় আমি ব্যাস্ত । ভেবে কূল-কিনারা করতে পারলাম না । অবশ্য এই অবস্থায় কুস্তি খেললে বেশ সুবিধা পাওয়া যাবে বলেই মনেহলো । প্রতিপক্ষের হাত থেকে শরীর পিছলে যাবার কথা । পিছলা শরীর বিশেষ কিছু পেশায় খুব কাজে দেয় । চোর তার গায়ে তেল মেখে শরীর পিছলা করে নেয় । এতে নাকি চুরি করায় এক্সট্রা বেনিফিট পাওয়া যায় । এদেরকে প্রচুর পরিমাণে তেল মাখতে হয় ,যাতে ধরা পরলেও হাত পিছলে পালাতে পারে । গায়ে তৈল মর্দনের এই এক সুবিধা ! আচ্ছা , তেলমাখা চোরদেরকে কি নামে ডাকা হয় ? গ্রামগঞ্জে এরা অবশ্য সিঁধেল চোর নামেই পরিচিত । ছোটখাটো মানের চুরি যারা করে তারাই সিঁধেল চোর । শাবল দিয়ে গর্ত খুঁড়ে এরা চুরি করে । আমি তেলমাখা চোরদের সিঁধেল চোর বলার ঘোর বিরোধী । বরঞ্চ তাদেরকে ‘’স্মুথ ক্রিমিনাল’’ নামে ডাকা যেতে পারে । মাইকেল জ্যাকসন ‘’স্মুথ ক্রিমিনাল’’ শিরোনামে একটা গান বের করেছিলো । এটা অবশ্য সিঁধেল চোরদের নিয়ে গাওয়া কি’না তা জানা নেই ।

     আমার পকেটে সিগেরেটের প্যাকেট । কিন্তু খেতে ইচ্ছে করছে না । গরমের ঠ্যালায় মুখ পানসে লাগছে । যদিও এখন ফাল্গুন মাস, তারপরও চৈত্রের খাঁ-খাঁ রোঁদ শুরু হয়ে গেছে । এসময় নাক আর গলার ভেতরটা খুব শুকনো লাগে । শ্বাস নিয়ে আরাম পাওয়া যায় না । মাঝে-মাঝে হাল্কা পশ্চিমা বায়ুর বাও ওঠে । সামনের দিনে এই পশ্চিমা বায়ুর বাও আরও তিব্র হবে । সেরকম দিনে আতপ চালের ভাতের সাথে মলা মাছের ঝোল আর টমেটোর ডাল খেলে বেশ আরাম পাওয়া যায় । গ্রামের অনেক মুরুব্বী এসময় ভরপেট ভাতখেয়ে বাড়ির বাইরের বাথানে নিমগাছের ছায়ায় ঘুম দেয় । পৃথিবীর এই সুখটা তখন স্বর্গের মতো মনেহয় ।

 

       পকেটে অবশ্য আরও একটা জিনিস আছে । একখানা চিরকুট । চিরকুটে একটা ভবন আর তার ফ্লোর নম্বরের ঠিকানা লেখা । নামের জায়গায় লেখা ; ইমতিয়াজ কবির । ভদ্রলোককে আমি চিনি না । ওনারও তাই সঙ্গত কারণে আমাকে চেনার কথা না । কিন্তু মুশকিল হচ্ছে তিনি নাকি আমাকে চেনেন । আমার বড়খালার কাছ থেকে আমার নাম শুনে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন । রাঘব-বোয়ালরা দেখা করতে চাইলে নাকি ছুটে যেতে হয় । খালার এরকমই নির্দেশ । তাই গতকাল ফোন করে নিজেই নাম-ধাম বাতলে দিয়েছেন । বলেছেন চব্বিশ ঘণ্টার ভেতরেই দেখা করতে । আমি সেক্ষেত্রে তথাস্তু বলে খালাকে খুশি করেছি । খালা আমার সম্পর্কে ওনাকে কি বলেছেন কে জানে । আমি সেই ঠিকানা অনুযায়ী ভবনের নিচের ফুটপাথে দাড়িয়ে আছি । হিসেব করে দেখলাম এখন অফিসিয়াল মানুষের লাঞ্চটাইম । এসময় কারো কাছে উপস্থিত হওয়াটা অনুচিত বলে মনে হলো । খাদ্য গ্রহণের লোভে মানুষের মাথা এসময় ঠিকমতো কাজ করে না । মেজাজ ক্ষিপ্র থাকে । তাই এ টাইমে কারো কাছে গেলে লাঞ্ছনা পাবার সমূহ সম্ভবনা আছে । সেই বিপদ আঁচ করেই রাস্তায় আমি একটু সময় পার করে নিচ্ছি ।

 

       ইমতিয়াজ কবির সাহেবের অফিসে গেলাম । কিছু মানুষের চেহারা দেখে বয়স আঁচ করা যায় না । তিনি এই টাইপের লোক । একবার মনেহয় পঞ্চাশের ওপর বয়স হবে । আবার মনে হয় পয়ত্রিশ-চল্লিশ । ধাঁধায় ফেলে দেবার মতো । শরীরের গঠন বেশ শক্ত -সমর্থ । চোখে চশমা । চশমার ওপর দিয়েই আমার দিকে তাকাচ্ছেন । অনেক মানুষ আছে যাদের কথাবার্তা আর ভাবভঙ্গিতে বেশ কনফিডেন্সর আভাস পাওয়া যায় । তিনি এই টাইপের । এদের অবশ্য একটা বদ অভ্যাস আছে । নিজের লেভেলের চেয়ে নিচের গোত্রীয় মানুষকে এরা অনেকটা মূর্খই মনে করে । মনে মনে ভাবে , আরে এই শালা আর কি এমন জানবে ! –এই টাইপের মন-মানসিকতা । আমার বেলায় তার চিন্তার ধরণ কি সেটা এখনও বুঝে উঠতে পারছি না । তার অফিসের চেম্বারে কেবল তিনি আর আমি । চশমার ওপর দিয়ে তিনি আমার দিকে অনেকক্ষণ যাবত তাকিয়ে আছেন । এরকম দৃষ্টিতে বেশিরভাগ মানুষই বিব্রত হয় । তারা কি করবে বুঝে পায় না । নীরবে ঘামতে থাকে । অনেকের তো ঘেমে অন্তর্বাস পর্যন্ত ভিজে যায় ! আমি অবশ্য তার দৃষ্টিকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছি না । তারচেয়ে বরং দেয়ালে ঝোলানো পেইন্টিংগুলোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছি । একটা আপেলের পেইন্টিং খুব মনে ধরলো । আপেলটা অর্ধেক কেটে রাখা হয়েছে । পেটে অনেক ক্ষুধা । এরকম ক্ষুধায় আপেলের স্বাদ অমৃতের মতোই হবার কথা ।

 

       এবার ইমতিয়াজ সাহেবের মুখ থেকে প্রশ্ন বের হলো । তিনি বললেন, শুনলাম তুমি নাকি হাত দেখে মানুষের ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারো ? এই ভবিষ্যৎকে নাকি পাল্টানোর ক্ষমতাও তোমার আছে ?

 

       আমি মনে-মনে বললাম, তবেই সেরেছে ! নিজের ভবিষ্যতেরই লারে-লাপ্পা অবস্থা ,আবার অন্যের ভবিষ্যৎ ! তবে এটা বুঝতে বাকি রইলো না যে বেচারা খুব ঝামেলার মাঝে আছেন । ভালো মানের ঝামেলা ; একেবারে লাইফ তামা-তামা হয়ে যায় টাইপ । এবং সেটা পাল্টানোর সম্ভাব্য উপায় তিনি খুঁজছেন । আমি ওনাকে সান্তভাবে বললাম, পুরোটা পারি না । মাঝে-মাঝে মিলে যায় এই আর কি । তবে ভবিষ্যৎ পাল্টানোর ক্ষমতা মানুষের আওতার বাইরে । মানুষ খুবই সীমাবদ্ধ প্রানি । সবকিছু আয়ত্তে আনার ক্ষমতা তাকে দেয়া হয়নি ।

       ইমতিয়াজ সাহেবের আবারও সেই একই ধাঁচের চাহনি । তিনি আমার মোটিভ ফলো করছেন । আমাকে বুঝে ওঠার প্রয়াস বলা যেতে পারে । আমি খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি । মোটিভ বুঝে ফেললে সমস্যা । তিনি বেশ শান্তস্বরে বললেন, দেখ ছেলে । আমি তোমাকে অনেকের থেকে আলাদা ভেবেছিলাম । ভেবেছিলাম তোমার মধ্যে এক্সট্রা অর্ডিনারি কোন পাওয়ার আছে । কিন্তু তোমাকে আর দশটা নরমাল মানুষের মতোই মনেহচ্ছে । নাথিং মিস্টিরিয়াস ইন ইউ । অলৌকিক কোনকিছুতে আমার কোনদিন বিশ্বাস ছিলো না , এখনও নেই । তোমার ব্যাপারে যা শুনেছি সেটা তোমার খালার বাড়াবাড়ি মাত্র । আই এম ডিসএ্যাপোয়েন্টেড । তুমি এখন আসতে পারো ।

 

     আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম । আমি যে কোন পীর-ফকির নই এই লোকটি বোঝার জন্য বেশ গর্বিত মনেহচ্ছে । অবশেষে এমন কাউকে পাওয়া গেলো যিনি আমাকে চিনলেন । আমি ধন্য । গর্বে আমার বুকটা এক হাত উঁচু হয়ে যাচ্ছে । বললাম, স্যার দুপুরের খাবার খাননি কেন ? আমার সাথে খাওয়ার ইচ্ছা ছিলো বুঝি ? এখন হতাশ হয়ে একাই খাবার ডিসিশন নিচ্ছেন !

তিনি বললেন, সেটাই কি স্বাভাবিক নয় ? আমি ভেবেছিলাম তুমি বিশাল কেউ । তাই ভাবলাম একসাথে খেতে খেতে আলাপ করা যাবে । বাট ইউ আর নাথিং লাইক দেট ।

হতাশ হচ্ছেন কেন স্যার ? জগত বড়ই রহস্যময় । আপনি বাঁচার আশা ছেড়ে দিলে তো হবে না ! সুইসাইড করুন বা কাউকে খুন করে ফেলুন ;সমস্যার শুরু তো তখন সেখান থেকেই হবে ।

ইমতিয়াজ সাহেব এবার একটু নড়েচড়ে বসলেন । বললেন , অনেকের আশা ছেড়ে দেবার মতো যথেষ্ট কারণ থাকে । হাত-পা গুটিয়ে ফেলা ছাড়া কোন উপায় থাকে না ।

       বুঝলাম এই লোক অনেক শক্ত যুক্তিবাদী । একে সহজে লাইনে আনার কোন সিস্টেম নেই । বললাম, স্যার বাদ দেন এসব কথা । আপনাকে একটা ছোট্ট গল্প বলি শোনেন । এক সৌখিন লোকের খুব সুখি একটা সংসার ছিলো । শিল্পকলার প্রতি তার ছিল অপরিসীম ঝোঁক । লোকটা ছবি আঁকায় ছিলো বেশ পারদর্শী । একদিন তার সখ হলো নগ্ন নারীর ছবি আঁকবে । নিজের স্ত্রীর ছবি না, অন্য নারীর ছবি । তাই সে তার বাসার কাজের যুবতী মেয়েটাকে মডেল হিসেবে বাছাই করলো । আর সেটা অনেক মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিকের বিনিময়ে । অবশ্য এতে তার স্ত্রীর আপত্তি ছিল না । কারন তিনি সেটা শিল্পী মানুষের কাজ ভেবে ছাড় দিতে পেরেছিলেন । এভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে ছবি আঁকার কাজ এগিয়ে যেতে থাকলো । একদিন তার স্ত্রী কি একটা কাজে বাইরে গিয়েছিলেন । সেদিনও যথারীতি শিল্পচর্চা চলছিলো । কিন্তু কথায় আছে না, আগুনের কাছে মোম গলে যায় । সেদিন মোম গলে গেলো । আগুন নেভার পর অবশ্য সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছিলো । কিন্তু বিপত্তি বাঁধে সেদিন,যেদিন কাজের মেয়েটা বুঝতে পারে সে গর্ভবতী । কাজের মেয়েটাও কম যায় না । তার মনে চিন্তা আসে যে, এই সন্তানের যিনি জনক সে বিশাল অর্থ-সম্পদের মালিক । সন্তানকে পেটে মেরে না ফেলে দুনিয়ায় আনলেই বরং লাভ । টাকার জন্য গায়ের কাপড় খুলতে পারছি, ন্যাংটা নাচ দেখাইতে সমস্যা তো নাই ! ইদানীং আবার নারী অধিকার আইনের রমরমা অবস্থা । কাউকে ফাঁসিয়ে দিতে পারলেই মেয়েটা অনেক টাকা পেয়ে যেতে পারে । আজীবন গরিব হয়ে থাকতে কে চায় বলেন । তবে ঐ বেচারা চাইছিলেন এরকম একটা সমস্যা লাখ খানেক টাকা দিয়ে সল্ভ করে ফেলবেন । কিন্তু কাজের মেয়েটাও ভালো সেয়ানা । তার লোভ ট্যাংরা-পুঁটির দিকে না । তাই কিছুতেই সে বাগে আসছে না । ফলে ঐ বেচারাও আছেন আছেন মহা ঝামেলায় । একবার ভাবছেন তার স্ট্যাটাসের কথা । আরেকবার ভাবছেন মেয়েটাকে খুন করে ফেলা যায় কি’না । তবে খুন করানোর সাহস ঐ বেচারার নেই । সাথে পুলিশি ঝামেলায় পরার আশঙ্কা তো আছেই । এই নিয়ে লাইফ ক্যারাব্যারা আর কি । স্যার আমার গল্প শেষ , আমি চলি ।

 

        আমি চলে যাবার জন্য উঠে দাঁড়িয়েছি । ঠিক তখনই ইমতিয়াজ সাহেব চেয়ার থেকে উঠে অনেকটা দৌড়ে এসে আমার হাত চেপে ধরলেন । বললেন , এই তুমি যেও না । প্লিজ যেও না । অনেকটা শিশুসুলভ ভাবভঙ্গি । আমার হাসি পেয়ে গেলো । অনেক কষ্টে সেটা চেপে রাখলাম । তিনি আরও হড়বড় করে বলে গেলেন, প্লিজ তুমি কিছু একটা করো । দুশ্চিন্তায় আমার ঘুম হারাম হয়ে গেছে । সারাক্ষণ ভয়ে থাকি । আমার ছোট ছেলে-মেয়ে আছে , সমাজে একটা অবস্থান আছে । এরকম একটা কেলেঙ্কারি জানাজানি হলে আমার বউ নির্ঘাত সুইসাইড করবে । সে একা করবে না , ছেলে-মেয়েদুটোকে নিয়েই করবে । সে আমাকে অনেক বিশ্বাস করতো । আমি তার বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছি । আমি এখন বুঝতে পারছি কতটা নির্লজ্জের মতো কাজ করেছি । প্লিজ আমাকে একটা সুযোগ দেবার ব্যাবস্থা করো । কথা দিচ্ছি এরপর থেকে জীবনে এমন ভুল আর দ্বিতীয়বার করবো না । প্লিজ,প্লিজ । আমাকে বাঁচাও ।।

 

         লোকটার প্রতি কেন যেন করুণা লাগা শুরু করলো । প্রকৃতি বড়ই রহস্যময় । একটু আগেই যে লোকটি আমাকে করুণার চোখে দেখছিলো এখন আমাকেই উল্টো তাকে করুণার চোখে দেখতে হচ্ছে ! মনেহলো কেউ একজন আমাদের নিয়ে খুব প্ল্যান করে এই খেলা খেলছেন । এই লোকের সাথে কথা আর বাড়িয়ে লাভ নেই । আমাকে বিদায় নিতে হবে । সকালে রূপা বলেছিলো ঠিক বিকেল পাঁচটার মধ্যে সংসদ ভবনের সামনে আসতে । মানিক মিয়া এভিন্যুর রাস্তার কাছে আমাকে থাকতে বলেছে । জরুরি ভিত্তিতে দেখা করতে হবে এরকমই নির্দেশ । সেটা না করলে নাকি আগামি একশো বছরেও সে আমার সাথে দেখা করবে না । আমাকে যেতেই হবে । যাবার আগে ঐ কাজের মেয়ের নাম-ঠিকানা সাথে করে নিয়ে নিলাম । মাঝে-মাঝে একজনের জীবনের কারণে অনেকের জীবন দোদুল্যমান হয়ে পরে । দেখি কি করা যায় ।

       আমি মানিক মিয়া এভিন্যুর পাশে সংসদ ভবনের সামনে রূপার জন্য অপেক্ষা করছি । ইমতিয়াজ সাহেব আমাকে জোর করে দুপুরের খাবার খাইয়ে দিয়েছেন । কেউ হাত ধরে অনুরোধ করলে সেটা সহজে উপেক্ষা করা যায় না । যাবার সময় কোন ফাঁকে যে একটা খাম আমার পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছেন টেরই পাইনি ! খামে কি আছে আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম । কোন শো-কজ লেটার নয় তো ?! খামে টাকা হলে অবশ্য ভালো হয় । রূপার খুব ইচ্ছা সংসদ ভবনের সামনে যত টোকাই শ্রেণির পিচ্চি আছে তাদের একদিন ফুচকা আর চটপটি খাওয়াবে । খাওয়া শেষে আইসক্রিমের ব্যাবস্থাও থাকবে । কাজটা আজই করে ফেললে কেমন হয়!

 

       রূপার জন্য অপেক্ষা করতে-করতে খেয়াল করলাম আশেপাশের কৃষ্ণচূড়া গাছে লাল-লাল ফুল ধরেছে । সারা রাস্তার গাছগুলোতেই একই অবস্থা । কৃষ্ণচূড়ার এই মাতাল করা রূপ আমার আগে নজরে পড়লো না কেন ! আমার চোখ ধাঁধিয়ে গেলো । হঠাৎ দূরে নজর গেলো । রূপা আসছে । তার পরনে টকটকে লাল রঙের শাড়ি । আমার চোখে বিভ্রম তৈরি হওয়া শুরু হলো । মনেহচ্ছে পৃথিবীর সব কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যকে প্রতিনিধিত্ব করতেই রূপার জন্ম । প্রকৃতি এতো রূপ দিয়ে এই মেয়েকে সৃষ্টি করেছে কেন কে জানে !

 

3 February 2014

Likes Comments
০ Share

Comments (2)

  • - আলমগীর সরকার লিটন

    সেই স্বাদ সেই গন্ধ পেলাম কবিতায়

    মাতৃভাষার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা

    ভোট দানে আমন্ত্রিত

    • - Ekolobyo

      ধন্যবাদ.....

    - মোঃসরোয়ার জাহান

    ছেলেবেলায় একবার ঘুড়ি ওড়াতে চেয়েছিলাম,

    রঙ্গীন ঢাউশ ঘুড়িটার সুতো ছেড়ে দিয়ে লাটাই হাতে

    অনেক কসরত করেও ওড়াতে পারি নি।

    ................অনেক সুন্দর হয়েছে,ভালো লাগলো।

    • - Ekolobyo

      ধন্যবাদ

    - সাদাত সবুজ

    বেশ লাগলো কবিতা খানি ।সুভেচ্ছা রইলো ।

    • - Ekolobyo

      ধন্যবাদ............শুভেচ্ছা,,,,,,,