Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

তুহিন সরকার

১০ বছর আগে লিখেছেন

ব্রেকিং নিউজ-মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী কুখ্যাত রাজাকার বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের আমৃত্যু কারাদন্ড।

ব্রেকিং নিউজ..........................................ব্রেকিং নিউজ..................................
মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী,স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের নেতা হিসাবে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জয়পুরহাটে রাজাকার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক নিধনযজ্ঞ চালানোর দায়ে উত্তরবঙ্গের কুখ্যাত রাজাকার বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের আমৃত্য কারাদন্ড স্আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়, সুচনা বক্তব্যে,
“এটি এ ট্রাইব্যুনালের পঞ্চম রায়। প্রতিটি রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন মন্তব্য করা হয়। উভয় পক্ষই তা করে। তবে রায়ের সংক্ষিপ্তসার দেখেই তা করা হয়। এটা ঠিক না।
“পূর্ণাঙ্গ রায় না দেখে সুইপিং রিমার্ক করলে আইনের শাসনের ক্ষতি হয়।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -২ এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলার পঞ্চম রায় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর অস্টম রায়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৭টি অভিযোগের মধ্যে নয়টি ঘটনায় আলীমের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ঘটনায় আলীম যেভাবে গণহত্যা ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন ‘অত্যন্ত জঘন্য’ অপরাধ।
“কোনো মানুষ, যে ফিজিকালি ও মেন্টালি আনফিট, তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিৎ নয়।  কিন্তু আবদুল আলীমের অপরাধ এতোটাই ঘৃণ্য, তাকে মুক্ত রাখলে মানবতার অবমাননা হবে। এ কারণে তাকে কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বাকি জীবন কাটাতে হবে। তাহলে হয়তো কৃতকর্মের জন্য তার ভেতরে অনুশোচনার সৃষ্টি হবে।” এসব অপরাধ সর্বোচ্চ শাস্তির যোগ্য হলেও স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে ৮৩ বছর বয়সী এই যুদ্ধাপরাধীকে স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত কারাগারে কাটাতে হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ  শাহিনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর দেয়া বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় রায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ স্থান সংকুলান না হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১এর এজলাসে  আজ বুধবার সকাল ১০  টা ৫০  মিনিটে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় দেয়া শুরু করেন।।। এ মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ মামলার ১৯১ পৃষ্টার রায়ে ৬৮৮টি অনুচ্ছেদ আছে তার মধ্যে আজকে ১৩৭টি অনুচ্ছেদ পড়া হবে। পূর্ণাঙ্গ ১৯১ পৃষ্টার ৩৮ পৃষ্টার সার-সংক্ষেপ রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ।
দ্বিতীয় অংশ পড়েন ট্রাইব্যুনালের অপর বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া  । আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবাইদুল হাসান চুড়ান্ত রায় দেন ।
১৭ টি অভিযোগের মধ্যে ৯ টি অভিযোগ প্রমাণিত ৬ টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি এবং ২টি অভিযোগে প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। ১ নং অভিযোগে ১০ বছর সাজা, ২, ৮, ১০, ও ১৪ নং অভিযোগে আমৃত্যু কারাদন্ড। ৬, ৭, ৯, ও ১২ নং অভিযোগে ২০ বছর করে মোট ৮০ বছর সাজা। ৪ও ৫নং অভিযোগে প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারেনি।
রায়ের তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়াঃ-
সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত ছিল- এ্যার্টোনি জেনারেল।
“আলীম মুক্তিযযুদ্ধকালে যে ঘৃণ্যতম ঘটনা ঘটিয়েছে সেজন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি ছাড়া অন্য কোনো দণ্ড হতে পারে না বলে বাংলার ১৬ কোটি মানুষ বিশ্বাস করে।”- ইমরান এইচ সরকার।
 সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগে অবস্থান

গণজাগরণ মঞ্চ।
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটির নেতৃত্বে থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে জয়পুরহাটে পাঁচ শতাধিক নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে যুদ্ধাপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ দেয়া প্রথম রায়টি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী কুখ্যাত রাজাকার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীর ফাঁসি।

পরিচিতিঃ-
আব্দুল আলীম ১৯৩০ সালের ১ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি থানার পাদুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫০-৫১ সালে তাঁর পরিবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জয়পুরহাটে এসে বসবাস শুরু করে। ১৯৫৮ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং ১৯৬২ সালে তিনি বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হন। একাত্তরে তিনি কনভেনশন মুসলিম লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। ১৯৭৫ ও ১৯৭৭ সালে জয়পুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আলীম। আব্দুল আলীম ১৯৭৯ সালে বিএনপিতে যোগ দেন ১৯৭৯, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনি বিএনপির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের প্রথমে বস্ত্রমন্ত্রী এবং পরে যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি জয়পুরহাটের বিশিষ্ট পাট ব্যবসায়ী শাওনলাল বাজলার গদিঘর দখল করে সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প, শান্তি কমিটির কার্যালয়, রাজাকারদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর আফজালের জন্য থাকার ব্যবস্থা করেন।
আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রমঃ-
২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আলীমকে ২০১১ সালের ২৭ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জয়পুরহাট শহরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ৩১ মার্চ শারীরিক অবস্থার কারণে তাঁকে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল-১। গত বছরের ২৭ মার্চ তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-১ আমলে নেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৬ এপ্রিল মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়। ২০১২ সালের ১১ জুন ৭ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ১৭টি অভিযোগে আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -২। এর মধ্যে তিনটি গণহত্যা,(এগুলো হলো জয়পুরহাটের কড়ই কাদিপুর গ্রামে ৩৭০ জন হিন্দুকে হত্যা, উত্তর হাটশহরে নয়জনকে এবং জয়পুরহাট চিনিকলে বিচার বসিয়ে ২৫ জনকে হত্যা।) একটি আটক, একটি দেশত্যাগে বাধ্য করা এবং ১২টি হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ১৫টি হত্যা ও গণহত্যার ঘটনায় মোট ৪০৬ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের। এছাড়া আরো ১২টি ঘটনায় ১৭৯ জনকে হত্যা, একটি ঘটনায় দেশান্তরে বাধ্য করা এবং একটি ঘটনায় অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে আলীমের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালরে ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষের ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় চলতি বছরের ২২ আগস্ট। আসামিপক্ষের তিন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় ২৭ আগস্ট এবং শেষ হয় ৩ সেপ্টেম্বর। রাষ্ট্রপক্ষ ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চার কার্যদিবস এবং আসামিপক্ষ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ কার্যদিবস যুক্তি দেয়। যুক্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে আবদুল আলীম ছিলেন জয়পুরহাটে অপরাধের কম্পাস। তার নির্দেশে ও পরামর্শে সেখানে বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়। তবে আসামিপক্ষ যুক্তিতে দাবি করে, আলীম ভাষাসৈনিক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি ওই সময় আত্মগোপনে ছিলেন। আসামি ও প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থপন শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গত ২২ সেপ্টেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে। ওইদিন জামিন বাতিল করে আব্দুল আলীমকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমূহঃ-
১ নং অভিযোগঃ-একাত্তরের ২০ এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে জয়পুরহাটের রাজাকার বাহিনীর একজন প্রভাবশালী নেতা এবং শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে পাকিস্তানি সেনা সদস্য এবং একদল সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার দমদমা গ্রামের মেহের উদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালান আব্দুল আলীম। এরপর বাড়ির সব মালামাল লুট করে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। ওই ঘটনার পর মেহেরউদ্দিন তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন।
(এ ঘটনায় হামলা ও লুটপাট চালিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে।)

২ নং অভিযোগঃ- ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর আফজাল ও শান্তি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জয়পুরহাট থানার অধীনে হিন্দু অধ্যুষিত কড়ই কাঁদিপুর, চকপাড়া, সোনাপাড়া, পালপাড়া, মুন্সীপাড়ায় আক্রমণ চালান আলীম। এরপর সেখানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর অনেককে আটক করে তারা। পরে কাদিপুর আখের চুল্লির কাছে ৭০ জন, কাদিপুর ডোমপুকুরে ৯০ জন, চকপাড়ার কুড়ালপুরে ২৬ জন ও চকপাড়া কুড়ালপুরের কাছে রাস্তার উত্তর পাশে ৫ জনসহ মোট ৩৭০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৯০ বছর বয়সী কাঞ্চিরা মোহনকে জবাই করে হত্যা করে রাজাকার সদস্যরা। অশ্বিনী কুমার দেবনাথকে জীবন্ত কবর দেয়া হয়।
(এসব ঘটনায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যা চালানের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামির বিরুদ্ধে।)

৩ নং অভিযোগঃ- ১৯৭১ সালের ১৮ জুন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে আলীমের দেয়া তালিকা অনুসারে এবং তার নির্দেশে শান্তি কমিটির সদস্য রিয়াজ, মৃধা ও ১১জন পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা পাঁচশ সাধারণ মানুষকে আটক করে জনৈক আফাজের বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ২৮ জনকে স্বাধীনতার পক্ষের এবং আওয়ামী লীগের পক্ষের লোক বলে চিহ্নিত করা হয়, বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়। ওই ২৮ জনকে হাত বেঁধে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়ার পর ২২ জনকে হত্যা করা হয়। বাকিরা কোনোক্রমে পালিয়ে যান।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

৪ নং অভিযোগঃ- ১৯৭১ সালের মে মাসে আলীমের নির্দেশে ও উস্কানিতে তার সহযোগী শান্তি কমিটির ও রাজাকার সদস্যরা পাকিস্তানী সেনা সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পাঁচবিবি বকুলতলা রেললাইনের কাছে যান। তারপর তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কোকতারা, ঘোড়াপা, বাগজানা ও কুটাহারা গ্রামে যায় এবং বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। সেখান থেকে ১৯ জনকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যাও করা হয়।
(এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে।)

৫ নং অভিযোগঃ- ১৯৭১ সালের মে মাসের ৬ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে আলীমের নির্দেশে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা জয়পুরহাটের দক্ষিণ পাহুনন্দ ও পাগলা দেওয়ান গ্রামে যায় এবং স্থানীয়দের দিয়ে গর্ত খুঁড়িয়ে ৬৭ জন হিন্দুকে মাটিচাপা দেয়। এদের মধ্যে সাতজনকে গ্রামবাসীর সামনেই হত্যা করা হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

৬ নং অভিযোগঃ- একাত্তরের মে মাসের প্রথম দিকে আলীমের সহযোগী শান্তি কমিটি ও রাজাকার সদস্যরা জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে আব্দুস ছালাম, আব্দুল কুদ্দুস, সমিরউদ্দিন মণ্ডল, আবুল হোসেন মাঝি, আজিম হোসেনমাঝি, আব্দুর রহমান মে¤¦ার, এবারত আলী মণ্ডল, আব্দুস ছাত্তার ও ফজলুর রহমানসহ ১০ জনকে ভারত যাওয়ার পথে আটক করে। পরে আলীম তাদের হত্যা করার নির্দেশে দিলে ওই ১০ জনকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়।  হস্তান্তর করা হয়। পরে এদের মধ্যে নয়জনকে পাঁচবিবি থানার বাগজানা পুরনো রেলওয়ে স্টেশনের কাছে কোকতারা বকুলতলার পুকুর পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে মোফাজ্জল নামে একজন প্রাণে বেঁচে যান।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

৭ নং অভিযোগঃ-১৯৭১ সালের ২৬ মে রাজাকার সদস্য ও পাকিস্তানি সেনারা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার নওদা গ্রাম আক্রমণ করে। সেখান থেকে ইলিয়াস উদ্দিন সরদার, ইউসুফ উদ্দিন সরদার, ইউনুস উদ্দিন সরদার ও আব্দুল কাদের মণ্ডল নামে চার যুবককে আটক করে বালিঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে নিয়ে যায়। আব্দুল আলীমের পরামর্শে ও প্ররোচনায় ওই দিন সন্ধ্যায় কালী সাহার পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

৮ নং অভিযোগঃ- একাত্তরের মে মাসের প্রথম দিকে পাকিস্তানি মেজর আফজালকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষেতলাল থানার ‘উত্তরহাট’ এলাকায় একটি সমাবেশে যান আলীম। সেখানে তিনি বলেন, “হিন্দুদের ক্ষমা করা যাবে না। এদের যা পাও লুট করে নাও”।  এরপর মে মাসের শেষদিকে হিন্দুপল্লী, উত্তরহাট শহর, হারুনজাহাট এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়। ওই এলাকা থেকে ১০ জন হিন্দুকে ধরে শওনলাল বাজলার গদিঘরে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আলীমের নির্দেশে তাদের খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ঘাটে নিয়ে হত্যা করা হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

৯ নং অভিযোগঃ-১৯৭১ সালের ১৪ জুন আক্কেলপুর হয়ে বগুড়া যাওয়ার সময় ১৫ জন যুবককে মুক্তিযোদ্ধা সন্দেহে আটক করে শান্তি কমিটির সদস্যরা। তাদের শওনলাল বাজলার গদিঘরে নিয়ে আটকে রাখা হয়। মেজর আফজালের সঙ্গে পরামর্শ করে ওই যুবকদের হত্যার নির্দেশ দেন আলীম। পরে পশ্চিম আমাত্রা গ্রামে নিয়ে তাদের নির্যাতন করে হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

১০ নং অভিযোগঃ- একাত্তরের জুন মাসের শেষ দিকে আব্দুল আলীম জয়পুরহাট সদর রোডের শওনলাল বাজলার গদিঘরে শান্তি কমিটির অফিসে বসে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ সন্দেহে পাহাড়পুর থেকে ধরে আনা ২৬ যুবককে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর দুটি ট্রাকে করে ওই যুবকদের জয়পুরহাট রেলস্টেশনের পশ্চিমে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দিয়ে ছবি তোলা হয়। ছবিসহ নেগেটিভগুলো আলীম নিয়ে গেলেও স্থানীয় ‘আলোখেলা’ স্টুডিওর মালিক এইচ এম মোতাছিম বিল্লাহ কয়েকটি ছবি নিজের কাছে রেখে দেন। ছবি তোলার পর ওই ২৬ যুবককে  ট্রাকে তুলে জয়পুরহাট সরকারি কলেজে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
(আলীমের বিরুদ্ধে এ ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন।)

১১ নং অভিযোগঃ- মুক্তিযুদ্ধের সময় জুন মাসের শেষের দিকে কয়েকজন গাড়োয়াল এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ মোট ২৬ জনকে আটক করা হয়। এরপর আলীমের নির্দেশে খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

১২ নং অভিযোগঃ- একাত্তরের ২৪ জুলাই আলীমের নির্দেশে রাজাকাররা জয়পুরহাট থানা দেবীপুর কাজীপাড়া এলাকা থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আবুল কাশেমকে ধরে তেঘর ব্রিজ রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে সারারাত আটকে রাখে। পরদিন তাকে শওনলাল বাজলার গদিঘরে নিয়ে আসা হয়। আলীমের নির্দেশে ২৬ জুলাই খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ব্রিজের কাছে নিয়ে হত্যা করা হয় কাশেমকে।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

১৩ নং অভিযোগঃ- ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আলীমের নির্দেশে ও পরামর্শে ১১ যুবককে আটকের পর ট্রাকে করে জয়পুরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের ভারতের চর আখ্যায়িত করে হত্যার নির্দেশ দেন আলীম। এরপর তাদের ট্রাক থেকে নামিয়ে বারঘাটি পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

১৪ নং অভিযোগঃ- ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিমসহ তিনজনকে আটক করে জয়পুরহাট সিও অফিসে নিয়ে যায় রাজাকার সদস্যরা। পরে আলীমের নির্দেশে তার উপস্থিতিতেই ওই তিনজনকে মুখে চুনকালি লাগিয়ে জয়পুরহাট শহর প্রদক্ষিণ করানো হয়। খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ঘাটে নিয়ে নির্যাতনের পর তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

১৫ নং অভিযোগঃ-একাত্তরের ২৫ আগস্ট পাঁচবিবি থানার সোলেমান আলী ফকির এবং তার দুই বন্ধু আব্দুস সামাদ মণ্ডল ও উমর আলী মণ্ডলকে পাঁচবিবি বাজারে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর আলীমের নির্দেশে তাদের ওপর নির্যাতন চলে। পাকিস্তানি সেনাদের ওই ক্যাম্পে আরও ২৫ জনকে আগে থেকেই আটকে রাখা হয়েছিল। আসামি আলীম ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল চিনি কলের ক্লাবঘরে ‘কোর্ট’ বসিয়ে তাদের ‘মৃত্যুদণ্ড’ দেয়। ওই ২৫ জনকে আট রাতে পর্যায়ক্রমে হত্যা করা হয়।
(আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এ ঘটনায়।)

১৬ নং অভিযোগঃ- মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টেবর থেকে পাঁচবিবি থানার সুলাইমান আলী ফকির, আফতাব হোসেন, আব্দুল খালেক ও আব্দুস সামাদসহ ২৫ জনকে জয়পুরহাট চিনিকলে আটকে রাখা হয়। আটকের নবম দিনে ওই চিনিকলের ক্লাবঘরে একটি ‘আদালত’ বসানো হয়, যেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল ছিলেন ‘বিচারক’। ওই কর্নেলকে আলীম বলেন, এদের ছেড়ে দিলে এরা ভারতে পালিয়ে গিয়ে ‘রিপোর্ট’ করবে। তবে কর্নেল তাদের ছেড়ে দিলে চারজন ভারতে পালিয়ে যান।

(এ ঘটনায় অপহরণ ও আটকে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে আলীমের বিরুদ্ধে।)

১৭ নং অভিযোগঃ- একাত্তরের নভেম্বরে ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টের ১৭ উইংয়ের সুবেদার মেজর জব্বল হোসেন আহত অবস্থায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার ধূরোলি গ্রামের নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ খবর পেয়ে ওই বছরের ঈদুল ফিতরের দিন আলীমের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালায় এবং জব্বল হোসেনকে আটক করে জয়পুরহাটে নিয়ে যায়। পরে জব্বল হোসেনের আত্মীয়রা জানতে পারেন, তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।

এই ১৭টি ঘটনার মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগে কোনো সাক্ষী উপস্থাপন করেনি প্রসিকিউশন।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে কোনো সাক্ষী উপস্থাপন করিনি। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণ ও যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে বাকি সবগুলো অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি বলে মনে করি। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী, আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়েছি।”
প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, আব্দুল আলীম যেহেতু একজন আইনজীবী ছিলেন এবং একজন শিক্ষিত-সচেতন নাগরিক হয়েও অপরাধ সংগঠনে সাহায্য করেছিলেন- সেহেতু ওইসব ঘটনার জন্য তাকে ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবল’ হিসাবে ধরা যায়।
আব্দুল আলীমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, “আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ ভিত্তিহীন বাগাড়ম্বর।প্রসিকিউশন গৎবাধা কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধী সাজাতে চায়।”
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষের কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণে আলীম সাহেবের একদিনের শাস্তিও গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আমরা আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ ইতিমধ্যে চারটি মামলার রায় দিয়েছেন।
* ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ।
২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দেন,

হতাশা ব্যঞ্জক রায়!
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, আপিল নিষ্পত্তি শেষে আপিল বিভাগ ১৭ সেপ্টেম্বর রায়ে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কলংক মোচনের প্রথম রায়, কসাই কাদেরের ফাঁসি-বিজয়ের পথে গণজাগরণ মঞ্চ।
* ৯ মে আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান মৃত্যুদণ্ডাদেশ।
আলবদর নেতা কুখ্যাত রাজাকার কামারুজ্জামানের ফাঁসি।
* ১৭ জুলাই সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
ব্রেকিং নিউজ- আলবদর প্রধান জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তিনটি মামলার রায় দিয়েছেন।
* ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ।
ব্রেকিং নিউজ-একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ।
২০১৩ সালের ১৫ জুলাই দলটির সাবেক আমির গোলাম আযমকে বয়স বিবেচনায় ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ
ব্রেকিং নিউজ- মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী রাজাকার শিরোমণি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের ৯০ বছরের সাজা। এবং
* ২০১৩ সালের১ অক্টোবর বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী কুখ্যাত রাজাকার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীর ফাঁসি।

তথ্য সূত্রঃ-
দৈনিক প্রথম আলো।
বিডি নিউজ২৪
(বিঃদ্রঃ-পরবর্তীতে আপডেট করা হবে।)

Likes Comments
০ Share