আমি তখন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র । ড্রইং ক্লাস এ আমাদের ড্রইং টিচার নার্গিস ম্যাডাম এসে বললেন ,
আজে তোমাদের ড্রইং পরীক্ষা সবাই বাংলাদেশ এর ছবি এঁকে নিয়ে এসো ।
আমি ভিশন বিপদে পড়ে গেলাম ।ফুল পাখি রেখে আপা কেন যে বাংলাদেশ এর ছবি আঁকতে বলল বুজতে পারছি না ।বাংলাদেশ এর ম্যাপ বা পতাকা আঁকতে বলেও হয়তো একেই ফেলতাম ।
আমার বন্ধুরা যে যার মত করে গ্রাম বাংলার নানান রকম ছবি এঁকে যাচ্ছে ।ছবি আঁকার সময় শেষ আমি কোন কিছু না এঁকে শুধু সাদা খাতায় নিজের নাম লিখে জমা দিলাম ।
আমার খাতা দেখে আপার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল ।বর বড় চোখ কর আমার দিকে তাকিয়ে বেঞ্চের উপর দাড়াতে বলল এর পর জিজ্ঞেস করল তুমি ছবি আকনি কেন ?
আমি একটু ভয়ে ভয়ে বললাম আমি কোনদিন বাংলাদেশ দেখিনি তাই কি ছবি আঁকবো বুজতে পারিনি ।
আপা আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে কি যেন ভাবলেন এর পর বললেন , বস
সেই পরীক্ষায় আপা আমাকে দশে দশ নাম্বার দিয়েছিলেন কিন্তু কেন তিনি আমাকে দশ নাম্বার দিয়েছিলেন সেই রহস্য আমার আজও অজানা ।আমি আজও বাংলাদেশ এর ছবি আঁকতে পারি না ।আজও আমার বাংলাদেশ দেখা হয়নি ।
কিন্তু আজ মধ্য রাতে সপ্নে দারুন একটা বাংলাদেশ এর ছবি এঁকেছিলাম ।
মুক্তি যুদ্ধ শেষ ।বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিব জাতির পিতার উপধিতে ভূষিত হয়ে চার নেতার কাছে দেশের ক্ষমতা ও দায়িত্ব দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় নিজবাড়ীতে বসে বই পড়ে অবসর জীবন যাপন করেন । মাঝে মাঝে জাতীয় কোন প্রয়োজনে ঢাকা এসে নেতা নেত্রীদের সাথে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে চলে যান । দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল উভয়ে মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের শক্তি্ । দেশ স্বাধীনের পর থেকেই রাজপথ ফাঁকা কোন মিছিল মিটিং হানা হানি জ্বালাও পড়াও হরতাল নাই । গোলাম আজম সহ সব রাজাকার আল বদর দেশ ছেড়ে এখন পাকিস্তানে ।
মেজর জিয়া জাতিসংগের বিশেষ দূত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে এখন আমেরিকায় বসবাস করেন ।খালেদা জিয়া রান্না ঘরে হরেক রকম রান্না বান্না নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন । তারেক এখন একটা পাচতারা হোটেল এর সেভ কুক ।
সুধাসদনে হাসিনা ওয়াজেদ তার নাতি পুতি নিয়ে মহা সুখে আছেন অবসর সময়ে ধানমন্ডিতে একটা বুটিক শপে বসে সময় কাটান ।জেনারেল এরশাদ অবসর নিয়ে বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশন এর উন্নয়নে কাজ করছেন । খালেদ মশারফ, কনেল তাহের মুক্তি যুদ্ধের সকল সেক্টর কমান্ডারগন এখন টেলিভিশনের টকশোতে শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান ।
অর্থনীতিতে বাংলাদেশ এখন জাপান কে ছাড়িয়ে যাবার পথে । দেশে এখন বিদেশী শ্রমিকেরা কাজ করছে ।কোথাও কোন যানজট ,লোড শেডিং ।চুরি ডাকাতি খুন ধর্ষণ এমন কি কোন দুর্নীতি ও নেই । শিল্প ও কৃষি সমৃদ্ধ প্রাকিতিক সম্পদের ভরপুর এক সোনার বাংলাদেশ ।
আমার আঁকা ছবির মতই এমন একটি বাংলাদেশ সবার কাম্য ছিল । কিন্তু কেন ? কোন ষড়যন্ত্রের জালে পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ তা আজে আমাদের ভাবতে হবে ! জানতে হবে !
খুজতে হবে সব বাধা পেরিয়ে আমাদের মুক্তির পথ তা না হলে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে একদিন আমরা হারিয়ে যাব ।
টু সঞ্চালক সাহেব,
বি;দ্র; ব্লগটি ভিশন ভাবে স্লো লগইন হতে অনেক সময় নেই ।মন্তব্য করলে ধাক্কা মাইরাও পাথাইতে পারি না ।