এক.
আমরা ভালো নেই। আমরা মানে যারা সাধারন মানুষ। আমরা মানে যারা এখনও দুই নেত্রীর অন্ধ মুরিদ হতে পারি নাই। আমরা মানে যারা এই দেশ ছেড়ে অন্য কোন দেশে চলে যেতে অক্ষম। আমরা মানে যারা সাধ্যের কারনে সাদা মাটা জীবন-যাপনে বাধ্য। আমরা মানে যারা সামান্য প্রাপ্তীতে সন্তুষ্ট।আমরা মানে যারা সকালে দুটা আটার রুটি,আলু ভাজি আর মাঝে মধ্যে বিলাসিতা হলে ওমলেট খেয়ে তুষ্ট। আমরা মানে যারা দুইবেলা সাদা ভাত, ডাল, পাতলা করে কাটা পাঙ্গাশ মাছের সাথে সাধারন তরকারী, বিলাসিতা হলে সপ্তাহে একদিন মাংস খেতে পেলেই তৃপ্ত। আমরা মানে যারা দুই ঈদের আগে বাড়তি খরচের চিন্তায় মশগুল হয়েও কিভাবে কিভাবে সব ম্যানেজ করে ফেলি। আমরা মানে যারা সব কিছু বিনাবাক্যে মেনে নিবার বিশাল ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছি। আমরা মানে যারা এই দেশে সংখ্যাগরিষ্ট। আমরা মানে যারা এই দেশে শূল্যহীন।সেই আমরা আজ ভালো নেই।
দুই.
বর্তমান সরকারকে আমরাই ভোট দিয়েছিলাম। আমরা সরকারের পরিবর্তন বদলে পুরো সিস্টেমের পরিবর্তন চেয়েছিলাম। এটা আমাদের অপরাধ ছিল। কারন. নব্বই-এর পরবর্তী কোন সরকারই গণতান্ত্রিক সরকার ছিলনা। প্রতিটা সরকারই ছিলো আগের সরকারের চাইতে অধিক স্বৈরাচারী। আমরা সামরিক স্বৈরাচারের পরিবর্তে পেয়েছি পারাবারিক ও দলীয় স্বৈরাচার। বর্তমান সরকার নব্বই পরবর্তী সরকারগুলোর মধ্যে সবচাইতে বেশী স্বৈরাচারী।তারা এতটাই আত্নমগ্ন যে তারা ভূলে গেছে শুধু নিজেদের নিরাপত্তা নয়, জনগনের নিরাপত্তা বিধান করাও সরকারের কাজ। অথচ বর্তমান সরকার জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বিরোধী পক্ষকে দোষারোপ করতে ব্যস্ত।অন্যদিকে বিরোধী দলও জনগনের চিন্তা বাদ দিয়ে ক্ষমতার লোভে মশগুল।
তিন.
মানুষ পুড়ছে আর সেই পোড়া নিয়ে চলছে নোংরা রাজনীতি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট করার জন্য মানুষকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও বাসে যারা আগুন দিচ্ছে তাদের প্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছেনা। আবার, একজন টকশো সুশীলের বাড়িতে ককটেল হামলাকারীদের হাতে নাতে ধরার পরেও বিশেষ সংস্থার টেলিফোনের কারনে পুলিশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। বিরোধী দলকে দায়ী করেই সরকারের দায়িত্ব শেষ। অথচ, এই সকল ব্যর্থতা সরাসরি সরকারের। অন্যদিকে বিরোধী দল জিম্মী করছে জনগনকে। কিন্তু বিগত প্রায় পাঁচ বছরে বিরোধী দলীয় নেত্রীর পুত্রের জন্য হরতাল ডাকা হলেও সাধারন জনতার কোন ইস্যুতে হরতাল ডাকা হয় নাই। বিরোধী দল সরকারের মন্ত্রীদের বাড়ি, দপ্তর, সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন অবরোধ না করে সাধারন মানুষকে অবরোধ করছে।
চার.
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার হিজাব সামলাতে ব্যস্ত আর বিরোধী দলীয় নেত্রী ব্যস্ত তার দলের কর্মীদের আন্দোলনে নামাতে। দুইজনেরই লক্ষ্য ক্ষমতা। আর গত দুই যুগে ক্ষমতার লোভে তারা রাষ্ট্রকে নিয়ে গেছে জঙ্গলের নীতিতে।
পাঁচ.
আমরা ভালো নেই।আমরা মানে যারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ। সেই আমরা সত্যি সত্যি ভালো নেই। বর্তমানে আমাদের প্রিয় রাষ্ট্র চলছে জঙ্গলের নীতিতে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে দুই নেত্রীর বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেই। সব পুড়ে ছাই হয়ে যাক। ইচ্ছা করে তাদের গৃহপালিত দল, নেতা, সুশীল আর অন্ধ মুরীদদের বাসে বসিয়ে সেই বাসে পেট্রল বোমা ছুড়ে মারি।ইচ্ছা করে তাদের পোড়া শরীর সংবিধান দিয়ে ব্যান্ডেজ করে বলি যে, মানুষের জন্য সংবিধান, সংবিধানে জন্য মানুষ নয়।আমি জানি, আমার মত সংখ্যা গরিষ্ট মানুষের ক্রোধ, বঞ্চনা আর দ্রোহের ইচ্ছাটা একই রকম।
Comments (4)
মানুষ যে প্রথম মানুষ ভালবেসেছে
মানুষ যে প্রথম মানুষকে মেরেছে
আহার আর যৌনতাই
তার মূলে রয়েছে।
একেবারে সত্যি কথা। আদমের দুই ছেলের মরণ তার প্রমান। ধন্যবাদ
সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন প্রিয় মেজদা!
এক নর আর এক নারী থেকে
আজ যে সাতশ কোটি জনগণ
যৌনতাই তার একমাত্র কারণ।
খাঁটা কথা
ধন্যবাদ!
মরুভূমিতে জলদস্যু হয় কি করে? মরুদস্যু হতে পারে।
নিরঙ্কুশ সত্য উপলব্ধি
ধন্যবাদ প্রিয় মাসুম ভাই।