আশ্বিন মাসের কড়া রোদ চামড়া ভেদ করে শরীরে ঢুকে যাচ্ছে। খুব অস্থির লাগছে। কিন্তু এই রোদ সহ্য করে যাওয়া ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই। আমি এখন শুয়ে আছি খাটিয়ায়। গতকাল রাত আটটা তিরিশ মিনিটে আমি মারা গেলাম। এরপর থেকে আর কোন কিছুর উপরই আমার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।
আমি মারা গেলাম ঢাকার খিলগাঁওয়ে ভাড়া বাসায়, নিজের বিছানায় শুয়ে। সন্ধ্যা থেকেই হঠাৎ করে শরীর খারাপ লাগছিলো। মাথা ঘুরছিলো। বমি বমি লাগছিলো। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর এইরকম হঠাৎ অসুস্থ হওয়া আমার রুটিন হয়ে গিয়েছিল প্রায়। আমার বউ ফরিদা, আমার মাথায় কিছুক্ষণ পানি ঢাললো। তারপর কাজের মেয়ে কী করছে সেটা দেখার অজুহাত দিয়ে নিরুদ্বেগ মুখে আমার কাছে থেকে উঠে গেল। আমি মৃত্যুর সময় পাশে কোন প্রিয়জনকে পেলাম না।
মৃত্যুর সময় আমি খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। অবাক হওয়ার কারণ, সারাজীবন মৃত্যু নিয়ে মানুষের মুখে বিভিন্ন ভীতিকর কথা শুনেছি। সেসব শুনতে শুনতে মৃত্যু সম্পর্কে আমার একটা নিজস্ব ধারণা তৈরি হয়েছিল। তাই বলে আবার কেউ ভেবে বসবেন না, আমি সারাজীবন জীবন-মৃত্যু-দর্শন এসব নিয়ে ভেবেছি। আমি ছিলাম দুই পয়সার কেরানি। এইসব উচ্চতর চিন্তা-ভাবনা আমাকে মানায় না। তারপরও, মহারাজা থেকে শুরু করে ভিক্ষুক পর্যন্ত সব মানুষেরই মৃত্যু নিয়ে একটা নিজস্ব ভাবনা থাকে। আমারও ছিল। কিন্তু মরার সময় বুঝলাম, জীবনভর মৃত্যু নিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি ঠিকই; তবে আসল মৃত্যু সম্পূর্ণ আলাদা আর খুব সাধারণ। আমি গতকাল রাতেই মারা গেলাম আর এখন কেবল দুপুর। এতেই মনে হচ্ছে কতকাল চলে গেছে। মৃত্যুর পরে কি সময়ের গতি শ্লথ হয়ে যায় নাকি? এখন মৃত্যুর সময়ের ঘটনাগুলো খুব আবছাভাবে মনে পড়ছে। আমি মারা গেলাম অন্ধকারে, এক ভয়ংকর নিকষ কালো অন্ধকারের সাগরে ডুবে।
মৃত্যুর সময় আমার ঘরে এনার্জি সেভিং বাতি জ্বলছিলো। টিউবলাইটটা কয়েকদিন ধরে নষ্ট। যেদিন মারা গেলাম সেদিন সকালে ইলেকট্রিশিয়ানকে খুঁজতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে বাড়ি যাওয়ায় আর টিউবলাইটটা ঠিক করা হল না। সে যাই হোক, মারা যাওয়ার সময় প্রথমে এনার্জি সেভিং বাতির আলো নিভে গেল। আমার বাসা ব্যস্ত রাস্তার পাশে। ঘরের বাতি বন্ধ করলেও বাহিরের ল্যাম্পপোস্টের আলো অল্প হলেও ঘরে আসে। তারপর সেই আলোও আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেল। আহ, কী ভীষণ দানবীয় অন্ধকার। এক ফোঁটা আলোর জন্যে তখন আমার বুকের ভেতরটা খাঁখাঁ করতে লাগলো। কিন্তু সেই আলোর দেখা পাওয়ার সৌভাগ্য আর আমার হল না। আমি ধীরে ধীরে গভীর অন্ধকারে তলিয়ে গেলাম।
এইটুক শোনার পর অনেকে হয়তো ভাবছেন, মৃত্যু এত সহজ! আমি আপনাদের সাথে বাজি ধরতে পারি, আপনারা মৃত্যু নিয়ে যত ভয়ংকর গল্প জানেন, মৃত্যু তারচেয়েও ভয়ংকর। যখন মৃত্যুর অন্ধকার আপনাকে গ্রাস করবে, তখন আপনি শরীরের প্রতিটি কোষে কোষে ভয়ংকর ইলেকট্রিক শক অনুভব করবেন। সমস্ত শরীর জ্বলে-পুড়ে যেতে থাকবে। কী কষ্ট, কী কষ্ট!
মৃত্যুর কথা অনেক হল। মৃত্যু নিয়ে ভাবতে কারোই ভাল লাগে না। জীবিত মানুষেরও না, লাশেরও না। তারচেয়ে আমি বরং একটু জীবনের গল্প করি। আমার জীবনটা খুব সাধারণ হলেও খুব আনন্দময় ছিল। আমার ছেলেবেলা গ্রামে কেটেছে। আজকে বাদ আসর যেখানে আমার কবর হবে সেই গ্রামে। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে কবরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি। আহা, আবার কবরের গল্প শুরু করলাম। লাশের এই এক সমস্যা। ঘুরে ফিরে শুধু দাফন-কাফনের প্রসঙ্গে চলে যায়। আমি বরং আমার জীবনের খুব সুন্দর একটা গল্প আপনাদের বলি। আমার প্রথম প্রেমের গল্প।
আমি তখন স্কুলের উঁচু ক্লাসের ছাত্র। শৈশব পেরিয়ে সবে মাত্র কৈশোরে পা দিয়েছি। আমাদের বেশি না হলেও কিছু জমিজমা ছিল। তা দিয়ে মোটামুটি চলে যেত। আমাদের বাড়ির পাশে হিন্দুপাড়া। তেমন অভিজাত কোন সম্প্রদায় নয়। হরিজন সম্প্রদায়ের হিন্দু। বেশিরভাগ ঘরই কুমোরদের। সেই পাড়ার এক কুমোর ঘরের মেয়ের প্রেমে পড়ে গেলাম একদিন, সেই প্রথম কৈশোরে। মেয়েটা ছিল কৃষ্ণবর্ণ। তার ডাগর ডাগর আয়ত নয়নের দিকে তাকালে আমি দুনিয়া ভুলে যেতাম। আর মেয়েটার ছিল কাচভাঙ্গা হাসি, এখনো কানে বাজে। কী সুন্দর, কী শান্ত, কী অনিন্দ্য সেই রূপ! সেই রূপের বর্ণনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। কিন্তু তার সাথে আমার প্রেমের সুন্দর পরিণতি কোনদিনই সম্ভব ছিল না। কারণ আমি ছিলাম জন্মসূত্রে মুসলমান। যদিও কোনদিন ধর্মীয় আচরণ অনুসরণ করি নি, তবে আজীবন ধর্মীয় উৎসব আগ্রহ নিয়ে পালন করেছি। ধর্মের বৈসাদৃশ্য, সামাজিক অবস্থানের বৈসাদৃশ্য ছাড়াও সে আমার থেকে বছর দুই-তিনেকের বড়ও হত। তাই এই অবাস্তব প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে কোনদিন তার সামনে দাঁড়ানো হয় নি। শুধু চলতি পথে চোখে চোখে কথা হয়েছিল কয়েকবার। আপনারা, আধুনিক মনস্ক মানুষেরা হয়তো প্রশ্ন তুলবেন এ আবার কেমন প্রেম? হাত ধরে চলাচলি, নির্জনে গলাগলি না হলে আবার প্রেম হয় নাকি? এ তো নিছক মোহ। কিন্তু আমাদের সময় এটাই ছিল প্রেম। তারপর মেঘে মেঘে বেলা অনেক গড়ালো। শহরে এসে আরও পড়াশোনা শিখলাম। একে তাকে ধরে একদিন কেরানির চাকরিটা পেলাম। বাবা-মার পছন্দে ফরিদাকে বিয়ে করলাম। কিন্তু মনের মধ্যে সেই ডাগর চোখের কালো মেয়েটি থেকেই গেল। আমি মাঝে মাঝেই অবসর পেলে ভাবতাম, আমার মৃত্যুর সময়ও বোধহয় সেই প্রথম প্রেমিকার মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠবে। কিন্তু মৃত্যু যখন সত্যিই আসলো তখন তার কথা মনে হয় নি। এখন মরার পরে মনে হচ্ছে।
এইটুক শুনে আবার আপনারা ভাববেন না, আমি ফরিদাকে ভালোবাসি নি। আমি ফরিদাকে অসম্ভব ভালবাসতাম। সেই গল্প আপনাদের তাড়াতাড়ি শুনিয়ে ফেলতে হবে। খাটিয়ার আশে পাশে কিছু ব্যস্ত লোককে দেখতে পাচ্ছি। তাদেরকে ঠিক চিনতে পারছি না। তবে ‘লাশ, লাশ...’ বলে খুব চেঁচামেচি করছে। আসরের আর বোধহয় বেশি বাকি নেই। কিছুক্ষণের ভেতরেই এরা আমাকে কবরে নামিয়ে ফেলবে। তার আগে গল্পটা শেষ করা দরকার। তবে এদের মুখে ‘লাশ’ শব্দটা শুনে আমার খুব হাসি পাচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টাও হয়নি আমি কারও বাবা, কারও ছেলে, কারও স্বামী, কারও বন্ধু ছিলাম। আর এখন আমি কারও কেউ না। আমি লাশ! থাক এ সব কথা,এখন আর দর্শনের কথা বলে আপনাদের বিরক্ত করবো না। রোদ পড়ে গেছে, ঠাণ্ডা হাওয়া লাগছে গায়ে। এখন আরাম করে আমার বাকি জীবনের গল্প শোনাতে পারবো।
আপনারা নিশ্চয়ই আমাকে খুব গল্পবাজ ভাবছেন। আসলে আমি বেঁচে থাকতে খুব স্বল্পভাষী, লাজুক প্রকৃতির ছিলাম। মারা যাবার পর একটু বেশি বক বক করছি। সত্যিকার বকবকানি করতে পারতো ফরিদা। ফরিদার কথা শুনতে শুনতেই আমার বিয়ের পরের দিন-রাত, সপ্তাহ, মাস, বছর পেরিয়ে যেতে লাগলো। এর মধ্যে ঘর আলো করে দুটো ফুটফুটে মেয়ে সন্তান এলো। আহা, কী সুখের ছিল সেই দিনগুলো। বললে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, আমি এত লাজুক প্রকৃতির ছিলাম যে নিজের মেয়েকে কোলে নিয়ে আদর করতেও লজ্জা পেতাম। তারপর আরও বছর ঘুরতে লাগলো। মেয়েরা আস্তে আস্তে বড় হল। আমার একঘেয়ে কেরানি জীবনও চলতে লাগলো। এরপর একদিন চাকরি থেকে অবসর নিলাম। এর মাঝে মেয়ে দুটোর বিয়ে দেয়াও হয়ে গেল। জীবন তার আপন গতিতে চলতে থাকলো।
আচ্ছা, বেঁচে থাকার সময় আমার প্রিয় রঙ কী ছিল? মনে আসছে না। একটু দূরে পুকুর পাড়ে কে যেন মুখে আঁচল চাপা দিয়ে কাঁদছে। সেই কান্নার শব্দে ভালভাবে চিন্তা করতে পারছি না। ও, মেয়েটাকে চিনতে পেরেছি। আমার ছোটমেয়ে নীলুফার কাঁদছে। মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই খুব বাবা ভক্ত ছিল। যদিও মেয়েদের সাথে আমার সারাজীবনই একটা দূরত্ব ছিল। তারা খুব প্রয়োজন ছাড়া আমার সাথে কথা বলত না। কোন কিছু দরকার হলেও তারা ওদের মাকে দিয়ে আমাকে বলাতো। নীলুফারকে কাঁদতে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে। ক্ষমতা থাকলে আমি উঠে গিয়ে নীলুফারের চোখের পানি মুছে দিয়ে আসতাম। বেঁচে থাকতে কতবার নীলুফারের চোখের পানি মুছে দেয়ার সুযোগ ছিল, বুকে জড়িয়ে আদর করার সুযোগ ছিল। কিন্তু তখন আমি মেয়েদের ব্যাপারে কতই না উদাসীন ছিলাম। ঠিক উদাসীন বলা যায় না, আমি ভাবতাম এগুলো হল মেয়েদের মায়ের কাজ। তাই নিজেকে এইসব ছোট-খাট ব্যপারে জড়াতাম না। নীলুফারকে জিজ্ঞেস করলে ও ঠিক ঠিক বলে দিতে পারতো, আমার প্রিয় রঙ কী ছিল। কিন্তু লাশের কথা বলার ক্ষমতা নাই। লাশের কাজ শুধু দেখে যাওয়া।
আমার বাৎসল্যের ধারা প্রবল বেগে বহমান হল আমার বড় মেয়ের একমাত্র মেয়ে রামিসার বেলায় এসে। চার বছরের এত্তটুকুন একটা মেয়ে, অথচ কী মজবুত তার ভালোবাসার টান। আমার অবসর জীবন কাটতে লাগলো রামিসাকে ঘিরেই। বড় মেয়ে ঢাকাতে আমার ঠিক পাশের বাসাতেই থাকতো। আর আমার এই নাতনীটা আমাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারতো না। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেই ছোট্ট ছোট্ট পা ফেলে নানার কাছে চলে আসতো। তারপর বাকি দিন কাটাতো নানার কোলে, কাঁধে চড়ে। শেষ বয়সে এসে কত নতুন খেলা যে শিখলাম রামিসার কাছে থেকে। আর কোনদিন যদি রামিসার আসতে দেরি হত, আমার ভেতরে কেমন জানি অবুঝ অভিমান কাজ করতো। আমি ঘরের মধ্যে পায়চারী শুরু করতাম। কিন্তু অভিমান বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারতাম না। একটু পর আমি নিজেই গিয়ে আমার মেয়ের বাসার কড়া নাড়তাম। আর আমার দুষ্টু নাতনীটা আমাকে দেখে একটু হেসেই লাফিয়ে কোলে উঠে পড়তো।
গল্প করতে করতে অনেক বেলা হয়ে গেল। আসরের নামাজ হল, আমার জানাজা হল। এর মধ্যে আর বলার কিছু নেই। আপনার জানাজা যেভাবে হবে আমারও সেভাবেই হয়েছে। এখন আমাকে বাড়ির পাশের পারিবারিক কবরস্থানে মাটি দেয়ার জন্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চারপাশে প্রচুর লোক। বেশিরভাগই আমার পরিচিত লোক হওয়ার কথা। কিন্তু এখন কেমন জানি আর কাউকেই চিনতে পারছি না। সবাই ছাতা মাথায় নিয়ে আস্তে আস্তে এগোচ্ছে। হঠাৎ ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আশ্বিন মাস খুব রহস্যময়। এই রোদ, এই বৃষ্টি। আমার উপরে পলিথিন ধরা হয়েছে যাতে ভিজে না যাই। ভাবতে খুব হাসি পাচ্ছে, একটু পরই আমাকে ভেজা মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখা হবে আর এখন বৃষ্টি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ঐ তো, আমার কবর দেখা যাচ্ছে। আগেই খুঁড়ে রাখা হয়েছে। সবাই মিলে ধরাধরি করে আমাকে কবরে নামাচ্ছে এখন। মৃত্যুর সময় কেউ পাশে ছিল না। কবরে নামানোর সময় অনেক মানুষ আছে। এর মাঝে দুই জামাই, ছোট মেয়ে নীলুফার আর খালার হাত ধরে রামিসা দাঁড়িয়ে আছে দেখতে পাচ্ছি। ফরিদা আর বড় মেয়েকে দেখছি না। বাসায় বসে কান্নাকাটি করছে হয়তো। কবরের মাটি সদ্য বৃষ্টিভেজা হয়ে কাদায় মাখামাখি। সেই থকথকে কাদার ভেতর থেকে অসংখ্য ছোট ছোট কেঁচোর মাথা উঁকি দিচ্ছে। আমি একদৃষ্টিতে আমার নাতনী রামিসার দিকে তাকিয়ে আছি। এই ক্ষণিকের পৃথিবীতে অসংখ্য প্রিয়জনের মাঝে আমি একমাত্র এই চার বছরের ছোট্ট মেয়েটার কাছেই আমার আবেগের, ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে পেরেছিলাম। আমি শেষবারের মত রামিসাকে দেখছি। আর রামিসা খুব মনোযোগ দিয়ে কাদা ফুঁড়ে উঠে আসা কুৎসিত কেঁচোগুলোকে দেখছে।
Comments (21)
fvj jvMj| ï‡fPQv iBj|
শহীদুল ভাই,
অনেক অনেক ধন্যবাদ....
ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে,শুভ কামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ ভাই...শুভকামনা...
শিশুতোষ গল্পে রাজার চরিত্রের মধ্য দিয়ে দেশের হরতাল অবরোধের করুণ চিত্র ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস শিশুদের জন্য মনে হয় একটু বেশী কঠিনই হয়ে গেলো। তবে কিশোরসাহিত্য হলে ভালো হত। শুভ কামনা রইলো মিলন বণিক।
প্রিয় ঘাসফুল,
আপনার মন্তব্য সত্যিই ভাবিয়ে তুলেছে...বলতে পারেন গল্পটা শিশুদের মত করে ফুটিয়ে তুলতে পারিনি সেটা আমার অক্ষমতা...কিন্তু যে শিশুটিকে নিয়ে লেখা সেটা একটা বাস্তব ঘটনা...আমি চিরকুট বক্সে দিয়েছিলাম...ভিউ হচ্ছেনা...আমি গল্পের শেষে পাদটীকায় যা লিখেছিলাম “১২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখ রাত্রে সীতাকুন্ড থানার জোড় বটতল এলাকায় একদল দুবৃত্ত চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয় এই রাজাকে। তারই একটা প্রতিবেদন দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় কৃষ্ণ চন্দ্র দাস-এর ”হাসপাতাল ছেড়ে যেতে চায় না রাজা” শিরোনামে প্রকাশিত হলে ঘটনাটি মনে খুব দাগ কাটে। রাজাকে নিয়ে বাস্তবতার নিরিখে নাম ঠিকানা অপরিবর্তিত রেখে লেখকের নিজস্ব কিছুটা কল্পনার রং মিশিয়ে এই গল্প। আমাদের এই অসুস্থ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার এই ”অনাথ রাজা” ভালোবাসা দিয়ে আমার মত হাজারো বিবেকবান মানুষের মন জয় করতে পেরেছে বলে আমার বিশ্বাস।”