Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

বদরুল ইসলাম

১০ বছর আগে লিখেছেন

ভ্রমণ ডায়রী-১২

শিলিগুঁড়ি থেকে কলকাতা।পছন্দের বাহন ট্রেনে চেপে যাচ্ছি।কলকাতার টিকিটের যা অবস্থা!তৎকাল টিকিট কেটে সে যাত্রা রক্ষা।নিউ জলপাইগুড়ি ষ্টেশনে এক ঘন্টা লেট করার পর ট্রেনের আগমন। চারিদিকে মানুষের আনাগোনা।সবাই ব্যস্ত সিট খোঁজা নিয়ে।আমিও এগিয়ে গেলাম আমার সিটের দিকে।চল্লিশ নম্বর সিট আমার।আমার পাশে এক দাদা, অপর পাশে এক দিদি।দু'জনের মধ্য মণি হয়ে আমি বসে আছি অনেকটা নিশ্চুপ হয়েই।পাশের দাদা চা অর্ডার দিয়ে, আমার দিকে চা এগিয়ে দিলেন। ভদ্রতা বশত হাতে নিয়ে চুমুক দিলাম।দিদিকে অফার করলেন কিন্তু তিনি খেলেন না।দাদা হরি বোস। পেশায় একজন ব্যবসায়ী।বয়স চল্লিশের কোঠায়।সংসারে বিধবা দিদি আর দিদির এক মেয়ে নিয়ে হরি বোসের সংসার।বোনাই বিষাক্ত মদ খেয়ে একদিন মারা যায়। তারপর থেকে বোন তার সংসারে।হরি বোস বিয়ে করেছিলেন এক ধনীর মেয়েকে।যাতে করে আরও তাড়াতাড়ি ধনী হওয়া যায়।থাকতেন কলকাতার সল্ট লেকে্ শ্বশুড়ের বাংলোয়।হরদম যাতায়াত করতেন পার্ক ষ্টীটের নামীদামী রেস্তোরা এবং বারে। আকণ্ঠ মদ পান করে বাসায় ফিরতেন।স্ত্রীও বান্দবীদের নিয়ে ঘুড়ে বেড়াতো এখানে সেখানে। হরিবোস একদিন বুঝতে পারলেন এ জীবন কোন জীবন নয়। তাই তিনি ভালো হওয়ার সিধান্ত নিলেন। মন্দিরে গিয়ে পুরোহিতের কাছ থেকে এক তাবিজও নিলেন। তারপর বাসায় এসে স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। কিন্তু না স্ত্রী আর এলো না। তিন মাস পর জানতে পারলেন বান্দবীর স্বামীকে নিয়ে সে পালিয়েছে।সে দুঃখে তিনি আর বিয়ে করলেন না।
এরি মধ্যে খাবার পরিবেশন শুরু হলো।আমি পরে খাবো বলে রেখে দিলাম। হরি বোস খাবার খেয়ে উপরে চলে গেলেন শুতে। আমি আর দিদি বসে বসে চারপাশের দৃশ্যগুলো দেখে যাচ্ছি। কেমন যেন গোমোট অন্ধকার। ট্রেন চলছে দ্রুত গতিতে। উপর থেকে হরি বোস চেচিয়ে বলছে- খেয়ে-দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন আর বাতিটা বন্ধ করে দিন দাদা।নিচের সিটটা আমার আর মধ্যেটা দিদির্ দুই পুরুষের মাঝ খানে শোবেন তাই তিনি কিছুটা সংকোচ বোধ করছেন। তাকে অভয় দিয়ে নিচের সিটেই শুতে বললাম। তিনি অনেকটা হালকা হলেন।
দিদির নাম চামেলী রায়।পেশায় একজন নার্স।বিয়ে হয়েছে পনের বছর আগে। স্বামী ছিলেন ট্যাভ্রেল এজেন্সীর মালিক।বিয়ের তিন বছরের মাথায় অষ্ট্রেলিয়া চলে যান। তারপর আর ফেরেন নি।এক মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। মেয়ে কলকাতার এক নামী স্কুলে পড়ে। পূজোর বন্ধ তাই আনতে যাচ্ছেন।
খাওয়া-দাওয়া সেরে বাতি নিভিয়ে যে যার মতো শুতে গেলাম।সিটে গা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম চোখে এসে ধরা দিল।ঘুম থেকে উঠে দেখি সকাল হয়ে গেছে। নিচে নেমে এলাম। ব্যাগ থেকে ব্রাশ বের করে ওয়াশ রুমে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি দাদা দিদিকে খাইয়ে দিচ্ছে, দিদিও দাদাকে। মনে মনে ভাবলাম সকালে যদি এই অবস্থা হয়, রাতে কি ছিল??মনের মধ্যে বাঁকা প্রশ্ন নিয়েই কলকাতার পথে পা বাড়ালাম!!

Likes Comments
০ Share

Comments (2)

  • - জাকিয়া জেসমিন যূথী

    পাপের অনুশোচনা বোধ জাগ্রত হওয়া ভালো ব্যাপার। এতেই পাপ কেটে যায়। উপরের উনিই অনুশোচনার মাধ্যমে সেটা কাটিয়ে দেন। 

    ভালো লাগলো কবিতা। 

    - রুদ্র আমিন

    তাই যেন হয় জাকিয়া জেসমিন যূথী। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

    - মাসুম বাদল

    বেশ ভালো লাগলো ...

    Load more comments...