Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

বুলি

১০ বছর আগে লিখেছেন

প্রিয় শৈশব

 মাছ ধরার নেশা বহুদিন থেকে। আমি আর ভাইয়া দুজন মিলেই বসে থাকি কখন দুপুর হবে, মা ঘুমুলে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কলোনির পুকুরে মাছ ধরতে যাব। মার কড়া নিষেধ এ ব্যাপারে।
 ফিশারি আঙ্কেল(  উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা) দুইজন পিয়ন রেখেছেন পুকুর পাহারা দেবার জন্য। দুপুরে তারাও থাকেনা। এটাই সুবর্ণ সুযোগ। মার যন্ত্রণায় মাছ ধরতে যেতে পারিনা। চুরি করলে ঠ্যাং ভেঙ্গে দিবে, ওয়ার্নিং আগেই দেয়া।
মাছ ধরার কি মজা মা বুজবে কি করে? প্রতিদিন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বাচ্চারা মাছ ধরে। পিয়ন এক দিকে আসলে তারা আরেক দিকে দৌড়ায়। কি উত্তেজনা, আমি আর ভাইয়া ভ্যাবলার মত সুন্দর জামা কাপর পরে পুকুর পারে দাড়িয়ে দাড়িয়ে এই দৌড় দেখি।

পিয়ন প্রতিদিন বলে... ভাইজান, এই বদ গুলার সাথে মিসবানা, বড়ই বদ পোলাপান। যাও আপুমনিরে নিয়া বাসায় খেল গা।

আমি মনে মনে বকা দিই, আহা... ওদের একটু মাছ ধরতে দিলে কি হয়?
একদিন দুপুরে, ভাইয়া ডেকে উঠাল, ঘুমাস নাকি? চল, আম্মা ঘুমায়। বাসার বাগানের দেয়াল টপকে দে দৌড়। বিকেলের মধধেই বরশি যোগাড় করে ভাই বোন মিলে তিনটা তেলাপিয়া ধরে ফেললাম। পিয়ন ও ছিল না। কেমন যেন নেশা ধরে গেল। যে কখনও মাছ ধরেনি সে বুযবেনা কি আজিব নেশা।
আবার অপেক্ষা কাল দুপুরের। ও বলে রাখা ভাল, ধরা মাছ বাসায় আনার প্রশ্নই উথেনা, ঐ মাছ বন্ধুদেরই দিয়ে এলাম, যারা প্রতিদিন পাহারা এড়িয়ে মাছ চুরি করে।

প্রায়ই যাই, মাছ ধরি। রোদে পুরে ভাই বোন এমনিতেই কালো, আরও কালো হয়ে গেলাম। মা প্রতিদিন গোসলে ডলাডলি আর গালাগালি করে... বদগুলা কাইল্লাভুত হয়া গেছে... স্নো পাউদার কোন কাজ করেনা। এই কাইল্লাগুলা কি আমার বাচ্চা!!!!।।*((()০০(@#৳৳%%ঁঁ... আরও বহু গালি।

থোরাই কেয়ার করি। ততদিনে ভাই বোন অনেক এক্সপার্ট হয়ে গেছি। সবাই বলে আমরা নাকি অনেক লাকি, আমরা এলেই মাছ ধরা পরে অনেক বেশি। এটা সত্যি মাছের ভাগ্য আমাদের আসলেই ভাল। আমরা নাকি মাছের রাশি।

মাঝে মাঝে দউরানি ই খাই। পিয়ন চেহারা চিনার আগেই দৌড়। আব্বার রেপুতেশান আমরাও বুঝি।
আব্বা তখন কৃষি ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল ম্যানেজার। অনেক বেশি সম্মানিত। ধরা পরা যাবেনা, তাই খুব জোরে দৌড়াই। ছোট ছোট পা নিয়ে, যত জোরে পারা যায় আর কি। কি উত্তেজনা। উফ,...

একদিন ভাগ্য খুব ই ভাল। ভাই বোন মিলে মাছ ধরে ঝুড়ি ভর্তি করে ফেললাম। সব মাছ ঐ বন্ধুদের দিয়ে আমরা প্রতিদিনের মত খেলতে চলে গেলাম। সন্ধায় বাসায় এসে হাত পা ধুয়ে যেই পড়তে বসেছি। বাসার দরজায় কেউ কড়া নাড়ল।
কে এল, কি কথা হল জানিনা। একটু পড়ে রুদ্র মূর্তি নিয়ে মা টেবিলের সামনে হাজির। ঘটনা কি, ফিশারি আংকেল বিচার দিল? আমাদেরত দেখেইনি... তাহলে????
মাছ...আর ধরবি? বলেই পিটা ...হায়রে মাইর...!!!!

ঘটনা হল, আমাদের ধরা এতগুলা মাছপেয়ে ঐ বন্ধুর মা , আমাদের জন্য একবাটি তরকারি দিয়ে গেলেন।

ভাবী ।।  বাচ্চাগুলা প্রতিদিন আমাদের কতগুলা করে মাছ দিয়ে আসে, তাই ওদের জন্য একটু তরকারি নিয়ে এলাম। ঝাল কমই দিয়েছি আপনারাও খেতে পারবেন...

Likes ২০ Comments
০ Share

Comments (20)

  • - মাসুম বাদল

    অনেক অনেক ভাললাগা।

    শুভেচ্ছা... 

    • - ওয়াহিদ মামুন

      আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। শ্রদ্ধা জানবেন।

    - ইকবাল মাহমুদ ইকু

    ভালো লাগলো 

    • - ওয়াহিদ মামুন

      ধন্যবাদ।

    - রুদ্র আমিন

    বরাবর আপনার লেখা যত গুলো পড়েছি চমৎকার ভাইজান।

    • - ওয়াহিদ মামুন

      আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

    Load more comments...