৯ই ডিসেম্বর-আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস
শিক্ষা, মানুষের মৌলিক অধিকার এবং মূল্যবোধ সৃষ্টির নিয়ামক ।মূল্যবোধ এমন একটি বিষয় যা কিনা শুধু বই পড়া বিদ্যার উপরই বর্তায় না ।তবুও বই পড়া দিয়েই এই মূল্যবোধের শিক্ষার শুরু ।ছোটবেলায় মা অথবা বাবার কাছে কোন সন্তান প্রথমেই শিখতে পারে- সদা সত্য কথা বলিবে, সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি...., অথবা চরিত্রই মানব জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ইত্যাদি, ইত্যাদি ।কিন্তু এই পড়াগুলোর সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার যদি মৌলিক পার্থক্য সৃষ্টি হয়ে যায় তবে যে কাজটি না হওয়ার সেটাই হবে আর তা হল শিক্ষার মাধ্যমেই কোন মানুষ তার সঠিক বৃদ্ধিতে অবরুদ্ধতার শিকার হবে ।যা প্রায় সমাগতই ধরতে গেলে ।বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে যতই Communicative আর সৃজনশীল বলা হোক না কেন তবুও এর মধ্যে অনীতিই ঢুকে গেছে অনেক ।
কাউকে যদি বলা হয় দুর্নীতিকে আপনি ঘৃনা করুন তবে প্রথম কি কথা দিয়ে শুরু করতে হবে ? হ্যা অবশ্যই বলতে হবে যে, আপনি শিক্ষিত, আপনার মুল্যবোধ আছে তাই আপনি নীতি বর্হিভুত কোন কাজ করবেন না ।কিন্তু শিক্ষাই যদি দুর্নীতি শেখায় ?
ছোট্ট বাচ্চারাই যদি শিখে যায় দুর্নীতি করে পাশ করা অথবা পাশ করার পর দুর্নীতি করে চাকুরী নিতে হবে এরকম কোন ভাবধারা তবে ?এরকমইতো হচ্ছে ।সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতিকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এমনকি আইনও করা হচ্ছে দুনীর্তিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্যই ।এভাবে দুর্নীতি বন্ধ করা কিভাবে সম্ভব ।দুর্নীতি প্রতিরোধে এবার বাংলাদেশের অবস্থান গত বারের তুলনায় দুইধাপ অগ্রগতি হলেও বাংলাদেশের দুর্নীতি কমেনি একটুও বরং বাংলাদেশের চেয়েও বেরেছে অন্য দেশগুলোতে ।সেবা পাওয়া থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতির বেড়াজালে দেশ অস্থির ।তার মধ্যে নতুন সংযোজন ছোট্ট বাচ্চাদের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাসেঁর দুর্নীতি ।একই বেঞ্চে দুজন পরীক্ষার্থী থাকলে একজন যদি প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দেয় অন্যজন এমনিতেই তার দ্বারা প্রভাবিত হবে এবং অন্য শিক্ষার্থীটিও ঐ পথ অনুসরন করার চেষ্টা করবে ।এটা কি ঐ শিক্ষার্থীর দোষ বলা যায় নাকি দুর্নীতির শিকার বলা যায় ।ছোটবেলা থেকেই এই যে দেখে দেখে পাশ করার পদ্ধতি বড় হলে তাদের মধ্যে কি মনোভাবের জন্ম দেবে বা তারা তাদের সন্তানকেই বা কি শিক্ষা দেব আর আমরাই বা কি মেধা পাবো তাদের কাছ থেকে ?
ভর্তি থেকে শুরু করে শিক্ষার সবজায়গায় দুর্নীতির চরম অরাজকতা চলছেই ।এই দুর্নীতি বন্ধ না করতে পারলে কোনভাবেই জাতীয়ভাবে দুর্নীতি বন্ধ সম্ভব নয় ।আবার আইন করা হল সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের মামলা করতে হলে সরকারের অনুমোদন লাগবে !হাস্যকর একটি ব্যপার হয়ে গেলোনা ?
যা যা করতেই হবে দুনীর্তি প্রতিরোধে তা তুলে ধরার চেষ্ট করছি আশা করছি সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি নিয়ে অধিকতর ভেবে সিদ্ধান্ত নেবে ।
-সম্প্রতি যে আইনটি করা হয়েছে অর্থাৎ সরকারি চাকুরেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে সরকারের অনুমোদন লাগবে সেটি সম্পূর্নভাবে পরিবর্তন করে সরাসরি মামলা করার অনুমোদন দেওয়া ।
-শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধের জন্য নাগরিক ঐক্য কমিটি গঠন করা ।
-দুদকের জেলা, উপজেলা ভিত্তিক যে কমিটি গুলো রয়েছে সেগুলোকে আরো গতিশীল করা ।
-বিভিন্ন পরীক্ষায় যে যে প্রশ্নগুলো ফাস হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের খুজেঁ বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা ।
-শিক্ষাক্ষেত্রের জন্য আলাদা দুর্নীতি দমন ভ্রাম্যমান আদালত গঠন করা ।
আমরা চাই শিক্ষার জায়গাটা কালো তালিকার বাইরে থাক ।আমাদের সন্তানেরা যেন সঠিক একটি শিক্ষা পেয়ে দেশ গড়ার কারিগর হয় ।এই চাওয়া পূরনের জন্য অবশ্যই একটি স্বচ্ছ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন ।দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই মূল্যবোধের শিক্ষা ছোটবেলা থেকেই শিশুদের মধ্যে প্রতিস্থাপন করতে হবে ।
দুর্নীতি প্রতিরোধে স্ব, স্ব জায়গা থেকে সক্রিয় হউন ।
Comments (4)
প্রতিভা এমনই একটা বিষয় যার পৃষ্টপোষকতা দরকার,অন্যথায় সে অনুকুল স্থানই খুঁজে নেয়।
হ্যা দাদা, এটাই মূল কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ ছাত্রটি পাশ করে ওখানেই শিক্ষকতা পেশার জন্য নিযুক্ত হন। কিন্তু হিসেব করলে দেখা যায়, এই মেধাবী শিক্ষকটির যা বেতন ধরা হয় তা' একজন দিন মজুরের মজুরীর প্রায় কাছাকাছি। সেই শিক্ষক বিদেশী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নিয়ে পড়তে গেলে , আর ফিরে আসে না। কারণ দেশ তার মেধার অবমূল্যায়ন করে। জাতি হারায় একজন মেধাবী শিক্ষক।
ভাল লাগল দাদা আপনার এই লেখাটি। অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে।
ধন্যবাদ বোন কামরুন নাহার।আপনাদের প্রশংসায় আরো লেখার উৎসাহ পাই।ভাল থাকুন।
যারা প্রতিভাবানদের মুল্যায়ন করতে জানেনা। তাদের কাছে প্রতিভাবানরা থাকেনা। আমাদের দেশ তার ব্যতিক্রম নয়। এদেশের অনেক প্রতিভাবান ছেলেরা দেশে থেকে কিছ করতে না পেরে বিদেশ চলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা ঠিকই প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে।
ধন্যবাদ ভাই পাশা।
আমাদের আর একটি অদ্ভুত প্রবণতা হলো জীবিতাবস্থায় কোনো গুণীর কদর না করলেও মৃত্যুর পর তাঁর জন্য প্রশংসার ও আবেগের বন্যায় ভাসিয়ে দিই।তাঁকে তখন আমরা কত না অভিধায় বিভূষিত করি,কত মরণোত্তর পুরস্কারে অভিষিক্ত করি।কিন্তু বেঁচে থাকতে হয়তো কোনোদিন তার খোঁজ খবরই কেউ করতাম না,কিংবা সুনামের পরিবর্তে তাকে বদনামের কালিমাতে হেয় প্রতিপন্ন করতাম।এধরণের ভন্ডামিতে আমরা খুবই ওস্তাদ আর সে জন্যই প্রতিভাবানদেরকে আমরা কাছে পাই না বা ধরে রাখতে পারিনা।কেননা প্রতিভা এমনই একটা বিষয় যার পৃষ্টপোষকতা দরকার,অন্যথায় সে অনুকুল স্থানই খুঁজে নেয়।
তুমি যথার্থই বলেছ বন্ধু। দ্বিমত করার কোন অবকাশ নাই। আমাদের দেশে প্রতিভার কোন অভাব নাই কিন্তু তাদের ধরে রাখার কোন আগ্রহও কেউ দেখায় না। ফলে বিদেশে পড়াশুনা শেষে অনেকেই সেখানে থেকে যায়। আর থাকবেই না কেন, না থাকেল যে তার প্রতিভাতে একদিন ঘুণে ধরবে। প্রতিভাবান বাঙালীরা বিদেশে তাদের প্রতিবার সাক্ষর ঠিকই রেখে যাচ্ছেন। দেশে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাবে অনেক প্রতিভা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারো সেদিকে খেয়াল নেই। খুব ভালো একটা পোষ্ট দিয়েছ বন্ধু। ধন্যবাদ তোমাকে।
ধন্যবাদ বন্ধু তোমার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।আমার লেখা খারাপ হলে অবশ্যই সমালোচনা আশা করি।